ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

দুঃখ-কষ্ট থাকুক যত...

এস আর শানু খান
🕐 ১১:২৪ পূর্বাহ্ণ, মে ১০, ২০২১

দুঃখ-কষ্ট থাকুক যত...

মুসলমানের উল্লেখযোগ্য অনুষ্ঠান বলতে বছরের দুইটা ঈদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বছর ঘুরে আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে ঈদুল ফিতর। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম ডিঙ্গিয়ে নতুন চাঁদের ঝলকানিতে ঈদ ঈদ ধ্বনিতে মুখরিত হয় আমাদের ধরণী। আনন্দের এক অদৃশ্য চাদরে নিজেদের ঢেকে নেয় সকল মুসলমান। কিন্তু গভীর দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় হল ঈদের এই আনন্দ সবার জন্য আনন্দ হয়ে আসে না। ঈদ মানের নতুন কাপড়চোপড়। নতুন জুতা-সান্ডেলসহ নতুনের রাজত্ব।

নিম্নবিত্ত আয়ের মানুষের পাশাপাশি গুটিকয়েক মধ্যবিত্ত মানুষের জন্য ঈদ আসে কষ্ট নিয়ে। ছেলে-সন্তানদের নতুন পোশাক-পরিচ্ছদ দিতে ব্যর্থ মানুষের জন্য ঈদ যে কতটা বেদনাদায়ক হতে পারে সেটা তাদের মুখের দিকে তাকালেই বোঝা যায়। আমাদের দেশের অজস্র মানুষ এখনও ফুটপাতে আর গাছের তলায় ঘুমিয়ে দিনাতিপাত করেন। কা অবশ্য দেশের উন্নত চিন্তাধারার মানুষগুলো স্বীকার করতে নারাজ! অস্বীকার করে ব্যর্থতাকে কিংবা দুর্বলতাকে চাপিয়ে রাখা যায় না। আর সেটা নিশ্চয় বড় অন্যায়। বর্তমানে আমাদের দেশের অন্যতম গণমাধ্যমখ্যাত সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকের মাধ্যমে রমজানের শুরু থেকেই দেখছি স্বেচ্ছাসেবক বড় ভাইয়েরা রাতের পর রাত সেহরির খাদ্য নিয়ে ঢাকা শহরসহ দেশের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোর ফুটপাতে কাটানো মানুষদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন।

আমরা সেহেরিতে ভালো খাবার ছাড়া কল্পনায় করতে পারি না। অথচ সেই একই আকাশের নিচে পানি খেয়ে রোজা রাখছেন কত না মানুষ। ঈদের মার্কেট উপলক্ষে আপনার বাজেট যেখানে আকাশচুম্বী সেই একই আকাশের নিচে আমার এক ভাই সন্তানদের নতুন পোশাক দিতে না পারার কষ্টে নিজের মুখখানা তাদের সামনে না নিতে পেরে বছরের একটা ঈদ কাটিয়ে দেবেন শহরের কোনো ফুটপাতে। রাজধানী ঢাকা শহরের অজস্র রিকশাচালক সন্তানের জন্য পোশাক দিতে না পারার লজ্জায় বছরের পর বছর ঈদ কাটিয়ে দেন ঢাকা শহরের রিকশা গ্যারেজে। এগুলো তো স্বাভাবিক দিনগুলোর কথা। এখন চলছে আর কঠিন যুগ। মহামারী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মরছে হাজার হাজার মানুষ। আমরা টিভিতে দেখছি, ফেসবুকে দেখছি, দেখছি ইউটিউবেও। কিন্তু লকডাউন নামক করোনায় কত যে নি¤œ পেশার মানুষের মনের মৃত্যু হচ্ছে প্রতিদিন, প্রতিটি মুহূর্তে সে হিসাব কেউ রাখি না!

আমি রাজধানীর কাঁটাবনে কিছুদিন একটা চাকরি করেছিলাম। চাকরির সময় বেশিরভাগ সময় কাটাতাম কাঁটাবনের ভ্যানচালক ভাইদের সঙ্গে। একটা গভীর সম্পর্ক হয়ে উঠেছিল তাদের সঙ্গে। ওখান থেকে চলে আসার পরও তারা প্রায়ই আমার খোঁজ নিতেন। আমিও খোঁজ নিয়ে থাকি। করোনার প্রথম ধাপের লকডাউনে ওই লোকগুলোর সঙ্গে কথা বলে নিজের কান্নাকে থামাতে পেরেছি বলে মনে পড়ে না। না খেয়ে দিন কেটেছে তাদের। এবারও দশ রোজায় তিনাদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা হলো।

এস আর শানু খান : শিক্ষার্থী, এম এম কলেজ, যশোর

 
Electronic Paper