করোনা হাসপাতাল উধাও কেন!
আনিসুর রহমান
🕐 ১২:৩৩ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৬, ২০২১
এদেশে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কিছু উধাও হওয়ার ঘটনা শোনা যায়। অফিসের মূল্যবান নথিপত্র কিংবা সরকারি টেন্ডারের মালামাল উধাও। এসব ঘটনা হরহামেশাই দেখা যায়। জেলখানা থেকে কয়েদিও উধাও হয়ে যায়। কিছুদিন আগে রিজেন্ট এবং জেকেজি হাসপাতাল থেকে করোনার পরীক্ষার জন্য সংগ্রহ করা নমুনা গায়েব করে মনগড়া রিপোর্ট দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে যা পৃথিবীব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। কিন্তু এবারের ঘটনাটি আরও কৌতূহলী।
করোনার মহামারীতে রোগীদের সেবা দেওয়ার জন্য বানানো হয়েছিল কোভিড বিশেষায়িত হাসপাতাল। প্রায় ৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর হাসপাতালটি নির্মাণ করেছিল। ২০১৩টি বেড এবং ৭১টি আইসিইউ সংবলিত হাসপাতালটি মানুষের জন্য এক আশার বাণী নিয়ে এসেছিল। বসুন্ধরা গ্রুপ নিজেদের জায়গা দিয়েছিল হাসপাতালটির জন্য। এই মানবিক আবেদনে সাড়া দেওয়া মানুষ বাহ্বা দিয়েছিল। কিন্তু বছর না ঘুরতেই হাসপাতালটি উধাও।
একটি ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিবেদন মতে হাসপাতালটি গায়েব হয়ে গেছে। এদিকে দেশে করোনার ভয়াল পরিস্থিতি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভারী হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। হাসপাতালে বেড খালি নেই। বেড তো দূরের কথা হাসপাতালের বারান্দায়ও ঠাঁই নেই। সবখানে রোগীতে পূর্ণ। রোগীর চাপে হাসপাতাল আর নতুন রোগী ভর্তি নিতে পারছে না। এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে ঘোরাঘুরি করে কোথাও জায়গা না পেয়ে অবশেষে অ্যাম্বুলেন্সেই মৃত্যু!
করোনাকালে এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে। কিন্তু এই যখন পরিস্থিতি তখন এত বড় একটি হাসপাতাল উধাও কিংবা বন্ধ হওয়া সত্যিই দুঃখজনক। মাঝে কিছুদিন করোনার প্রকোপ কম হওয়ায় রোগীর সংখ্যা কম ছিল। সে কারণেই হয়তো হাসপাতালটি বন্ধ করা হয়। কিন্তু করোনা যে শেষ হয়নি বা চলে যায়নি এ বিষয়টি কর্তৃপক্ষের ভাবা উচিত ছিল। করোনার রোগী কমে যাওয়ায় হাসপাতালটিতে নিয়োজিত স্টাফদের কিছু অংশ অন্যান্য হাসপাতালে নিয়োজিত রাখতে পারত।
হাসপাতালটি চালু রাখলে তা আজ অসুস্থ মানুষের জন্য শান্তির দূত হয়ে থাকত। হাজার হাজার করোনা রোগীর জন্য খোলা থাকত চিকিৎসার দুয়ার। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ বিপর্যস্ত করে দিয়েছে সবকিছু। ভয়াল থাবায় হু হু করে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এমতাবস্থায় এত বড় একটি কোভিড বিশেষায়িত হাসপাতাল খুবই দরকার। হাসপাতালটি বন্ধ করা কোনো ভুল সিদ্ধান্ত নাকি এখানে কোনো অনৈতিক স্বার্থ জড়িত ছিল? ঊর্ধŸতন কর্তৃপক্ষের উচিত বিষয়টি ভালোভাবে খতিয়ে দেখা।
আনিসুর রহমান
শিক্ষার্থী, খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান অনুষদ, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়