ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

নারীর জন্য নিরাপদ হোক দেশ

নাইমা সুলতানা
🕐 ১১:৩০ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ১৩, ২০২১

নারীর জন্য নিরাপদ হোক দেশ

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এসেও নারী-পুরুষের সমতা, স্বাধীনতা, অধিকার এবং ক্ষমতায়ন নিয়ে সর্বত্র ভুলে ভরা এক ধারণাকে লালন করে চলেছি আমরা। এ ক্ষেত্রে ইচ্ছাশক্তির অভাবের পাশাপাশি রয়েছে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির সীমাবদ্ধতা এবং এ বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার অভাব। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে একটি বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে চেয়েছিলেন।

স্বাধীনতার পর তার প্রণীত বাংলাদেশের প্রথম সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৭, ১৯, ২৮, ২৯-সহ বিভিন্ন ধারায় নারীর শিক্ষা, চাকরি, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির বাধ্যবাধকতা থাকলেও স্বাধীনতার ৫০ বছরেও নারীর ক্ষমতায়নে বঙ্গবন্ধুর এই মনোভাব সম্পূর্ণরূপে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এই সময়ে বিভিন্ন সংগঠনের জরিপে প্রতিনিয়ত উঠে এসেছে ধর্ষণ, নারী নির্যাতন এবং নারীর প্রতি সহিংসতার অসংখ্য ভয়াবহ চিত্র। স্বপ্নের বাংলাদেশ পুনর্গঠনের এই বাস্তব প্রতিফলন বঙ্গবন্ধু হয়তো স্বচক্ষে দেখে যেতে পারেননি। কিন্তু স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বঙ্গবন্ধুকন্যা, দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার নারীর ক্ষমতায়ন ও নারী অধিকার সুপ্রতিষ্ঠায় পুরোদমে কাজ করে যাচ্ছে। শিক্ষায় নারীদের শতভাগ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, অর্থনৈতিকভাবে নারীদের স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলা, নারীবান্ধব কর্মপরিবেশ সৃষ্টি, আইন প্রণয়নের মাধ্যমে নারীদের সুরক্ষা ও অধিকার নিশ্চিতকরণ এবং রাজনীতিতে নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে শেখ হাসিনার গৃহীত উদ্যোগ অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে।

২০১৭-১৮ সালের অর্থবছরে জাতীয় বাজেটের ২৮ শতাংশ নারী উন্নয়নে বরাদ্দ ছিল, ২০১৮-১৯ সালে তা ২৯.৬৫ শতাংশে উন্নীত করা হয়। বর্তমানে প্রাথমিক পর্যায়ে নারী শিক্ষার্থীর হার ৯৯.৪ শতাংশ। সরকার বিনামূল্যে ৬-১০ বছর বয়সী সব শিশুকে বিনামূল্যে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে। এছাড়াও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েরা পড়াশোনা করতে পারছে বিনামূল্যে। মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত চলছে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ এবং পড়াশোনায় মেয়েদের উৎসাহিত করতে রয়েছে সরকারি-বেসরকারি অসংখ্য বৃত্তি ব্যবস্থা।

এছাড়াও নারীদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে জামানত ছাড়াই সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা এসএমই ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আবার নারী উদ্যোক্তারা বাংলাদেশ ব্যাংক ও এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক থেকে ১০ শতাংশ সুদে ঋণও নিতে পারছেন। বর্তমানে ৩০ লাখেরও বেশি নারী শ্রমিক পোশাক শিল্পে কর্মরত আছেন। সরকারের সপ্তম পঞ্চ বার্ষিক পরিকল্পনায় (২০১৬-২০২০) অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীদের সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিতের অঙ্গীকার করা হয়েছে। অন্যদিকে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, সেনা, নৌ, পুলিশ, বিজিবি, সাহিত্য-শিল্পসহ সর্বোচ্চ বিচারিক কাজেও নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ও সাফল্য এখন লক্ষণীয়। আমাদের নারীরা খেলাধুলায়ও পিছিয়ে নেই। বলাবাহুল্য, নারীদের এই অভূতপূর্ব ক্ষমতায়নে অংশগ্রহণের সুযোগ ও অনুপ্রেরণার যিনি প্রথম ভাগিদার, তিনি আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নাইমা সুলতানা : শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

 
Electronic Paper