ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

অটিস্টিকদের চিকিৎসা নিশ্চিত হোক

রুকাইয়া মিজান মিমি
🕐 ১১:৩২ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ০২, ২০২১

অটিস্টিকদের চিকিৎসা নিশ্চিত হোক

অটিজম মস্তিষ্কের বিকাশজনিত সমস্যা। এটি একটি মানসিক রোগ। এ রোগে আক্রান্তরা সাধারণত আর দশটা শিশুর মতো হেসে-খেলে গড়ে উঠতে পারে না, তাদের প্রয়োজন হয় বিশেষ যতেœর। অথচ সমাজ সচরাচর এদের স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারে না। সে লক্ষ্যেই অটিজমে আক্রান্তদের সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ২০০৮ সাল থেকে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ২ এপ্রিল ‘বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে। এবং প্রতিবছর জাতিসংঘের অন্তর্ভুক্ত দেশসমূহ নানা কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের প্রত্যাশাকে সামনে রেখে দিবসটি উদযাপন করে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, অটিজম নিয়ে ভ্রান্ত ধারণা সমাজে প্রচলিত রয়েছে, এ নিয়ে কুসংস্কারেরও যেন কমতি নেই!

একজন অটিস্টিক শিশুকে সমাজ সহজেই মেনে নিতে পারে না, তাকে কোণঠাসা করে রাখে। বিভিন্ন বঞ্চনার শিকার হয় সে ও তার পরিবার। এমনকি পরিবারেও অটিস্টিক শিশুটি যথার্থ পুষ্টিকর খাবার ও সেবা পায় না। অনেকক্ষেত্রে বাবা-মাও প্রকাশ করতে চায় না তাদের শিশুর অবস্থাটি! আর এই গ্লানি জীবনের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত তাকে বয়ে বেড়াতে হয়।

অথচ শুরুতেই যথাযথ চিকিৎসা গ্রহণ করলে এ রোগের প্রাদুর্ভাব অনেকাংশেই কমিয়ে আনা সম্ভব। সাধারণত গর্ভকালে মায়ের ত্রুটিপূর্ণ অবস্থা- বিষাক্ত ধোঁয়ার প্রভাব, মাদকাসক্তি, পুষ্টির অভাব, সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়া ও অনেক ক্ষেত্রে নিকট আত্মীয়দের মধ্যে বিবাহের ফলে এই রোগ হয়ে থাকে। এর লক্ষ্যসমূহ শৈশবের প্রারম্ভিক পর্যায়েই অর্থাৎ ১-৩ বছরের মধ্যেই প্রকাশ পায়।

এ রোগে আক্রান্ত শিশুদের প্রধানত তিনটি সমস্যা পরিলক্ষিত হয়- ১. সামাজিক মিথস্ক্রিয়ায় অংশ নিতে পারে না, ২. কথাবার্তা ও যোগাযোগে পারদর্শী হয় না, ৩. একই কাজ বারবার করে। এছাড়া এসব শিশুরা পরিবেশ সম্পর্কে উদাসীন থাকে, স্বাভাবিক আচরণ করতে পারে না। তাদের এই লক্ষণসমূহ যত দ্রুত সম্ভব শনাক্ত করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

প্রয়োজনীয় চিকিৎসা গ্রহণ ও থেরাপি প্রয়োগের মাধ্যমে তাদের স্বাভাবিক করে তোলার চেষ্টা চালাতে হবে। সাধারণত দেখা যায় তাদের মাঝে বিশেষ গুণাবলি থাকে এবং তারা কোনো একটি কাজে বিশেষ পারদর্শিতা অর্জন করে। ছবি আঁকা, গান গাওয়া ইত্যাদি। তাদের এই প্রতিভার প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে ও যতœশীল হতে হবে। যথাযথ পরিচর্যার মাধ্যমে তারাও হয়ে উঠতে পারে অনন্য।

তাই অটিস্টিকদের প্রতি পরিবার ও সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন খুবই জরুরি। এক্ষেত্রে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও জাতীয় সংস্থা বেশ উদ্যোগী ভূমিকা পালন করছে। বাংলাদেশ সরকারও ইতোমধ্যে অটিস্টিকদের জন্য আলাদা বিদ্যালয়ের ব্যবস্থা করেছে, যা প্রশংসার দাবি রাখে।

এই বিদ্যালয়ে পাঠানোর মাধ্যমে তাদের মেধার যথার্থ বিকাশ সম্ভব। তবে জনসচেতনতা আরও বৃদ্ধি করতে হবে, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে এর সঠিক কারণসমূহ ও প্রতিকার তুলে ধরতে হবে।

রুকাইয়া মিজান মিমি, শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

 

 
Electronic Paper