ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

৭৫-এ বাংলাদেশের অভিযাত্রা থমকে দাঁড়াল

ড. আতিউর রহমান
🕐 ৩:১১ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৫, ২০২০

বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলার স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন। যদি তার পুরো জীবন দেখি তাহলে দেখতে পাব ছাত্র অবস্থা থেকেই তিনি সোনার বাংলার কথা বলেছেন। ৪৩ এর দুর্ভিক্ষে অনাহারে যখন মানুষ মরছিল বঙ্গবন্ধু তার অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে বলেছেন একদিকে অর্থ খরচ করে অস্ত্র কেনা হচ্ছে অন্যদিকে মানুষ মারা যাচ্ছে।
বাংলা আগে থেকেই সমৃদ্ধ ছিল। বিভিন্ন সময় বিজাতীয় শাসন ও শোষণে বাংলা নিঃস্ব হয়েছে। বঙ্গবন্ধু এই শোষণে ব্যথিত হয়েছে। ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে এ দেশীয় মানুষের বিশ্বাসঘাতকতায় যখন বাংলা পতন হয়। সে সময় মুর্শিদাবাদের একজন ব্যবসায়ীর হাতে এত বেশি পরিমাণ মুদ্রা ছিল বিলাত শহর কিনে নিতে পারতেন। এ রকম একটি সমৃদ্ধ এলাকা ছিল বাংলা। এরপর ইংরেজ শাসনের সময় আমাদের আর্থসামাজিক সমৃদ্ধি হারিয়ে যায়। তারপর সৃষ্টি হয় পাকিস্তান রাষ্ট্রের। পাকিস্তান রাষ্ট্র সৃষ্টির কিছুদিন পরই মোহ ভেঙে যায়। ছাত্রবস্থায় শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বপ্ন দেখেছিলেন তা রূপ দিতে সংগঠনে ব্রতী হন। সৃষ্টি করেন ছাত্রলীগ। তারপর আওয়ামী লীগ। এজন্য তিনি সারা দেশ ঘুরে বেড়িয়েছেন। মানুষকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন। বাংলার মানুষকে আপন করে নিয়েছিলেন। যে পাকিস্তান সৃষ্টির জন্য সংগ্রাম করতে হয়েছিল কিছুদিনের মধ্যে সেই রাষ্ট্রের দুই অংশের মধ্যে তিনি দেখলেন বৈষম্য। ইংরেজদের বিতাড়নের পর জমিদার প্রথা জগদ্দল পাথরের মতো চেপেই বসে আছে। পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর শিক্ষার সংকট ও ভাষার সংকট দেখে তিনি আরও ব্যথিত হলেন।

বঙ্গবন্ধু আর্থসামাজিক মুক্তির কথা বলেছেন। ১৯৫২ সালে বলতে শুনি ইংরেজদের বিতাড়নের অর্থ এই নয় আমাদের ভাষা, হাজার বছরের লালিত সংস্কৃতিকে পাকিস্তানিরা ধ্বংস করে দেবে। ১৫শ’ মাইলের ব্যবধানে পাকিস্তানের দুই অংশের মধ্যে যে বৈষম্য আছে তা নিরসন দরকার। সমাজ সংস্কৃতির ব্যাপারে আমাদের ওপর যে অন্যায় করা হয়েছে সেগুলোর উন্নয়ন ঘটিয়ে উন্নত সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু দেখেছিলেন। 

প্রথমবার করাচিতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু পশ্চিম পাকিস্তান এবং পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ ও প্রকৃতির মধ্যে যে পার্থক্য তা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করলেন। তিনি দেখলেন পশ্চিম পাকিস্তানি মরু ধূসর প্রান্তর। সেখানের মানুষগুলোও রুক্ষ স্বভাবের। তাদের মন মরুভূমির মতো উড়ে উড়ে বেড়ায়। অন্যদিকে পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলা শস্য-শ্যামলে ভরপুর। এখানকার মানুষও মানবিক ও প্রাণসৃমদ্ধ। বঙ্গবন্ধু ওখানকার মানুষকে বললেন, তোমরা থাকো কীভাবে!

কিছুুদিন পরই তিনি চীনে গেলেন। সেখানকার হ্যাংচু প্রদেশে গিয়ে দেখলেন বাংলার মতোই লেক, সবুজ, শ্যামলিমা। বাংলায় যেমন নৌকাবাইচ হয়, সেখানেও নৌকা চলে। ওই সময় শেখ মুজিব কোনো সংসদ সদস্য নন, কোনো মন্ত্রী নন। তখন তিনি তরুণ একজন রাজনীতিক। তিনি সেখানে বললেন, আমি তোমাদের জাদুঘর দেখতে চাই না, তোমাদের বড় দালান দেখতে চাই না। আমি দেখতে চাই খামার, সাধারণ মানুষের উদ্যোগ। সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকা বিকাশে কী কী উদ্যোগ গ্রহণ করেছ? সেগুলো তিনি ঘুরে ঘুরে দেখলেন। শেখ মুজিব অনুধাবন করতে চাইলেন এ অঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য কী কী উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে। কী কী কাজ করা যেতে পারে। যাতে মানুষের কল্যাণ হতে পারে।

তিনি দেখলেন কীভাবে শিল্প চালাচ্ছে, কীভাবে শ্রমিকদের আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে, কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় চালাচ্ছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে জিজ্ঞাসা করছেন কীভাবে তোমরা চালাও, কীভাবে তোমরা দেশচিন্তা যুক্ত করো। তিনি দোকানে চলে যাচ্ছেন, তারা কী ধরনের পণ্য ব্যবহার করছে। একই সঙ্গে তিনি নিজে দেশে কী ধরনের পণ্য ব্যবহার করছে সেগুলোর কথা চিন্তা করছেন। এগুলো বলার উদ্দেশ্য হল, তরুণকাল থেকে সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছেন। তারপর তিনি সংসদ সদস্য হলেন, মন্ত্রী হলেন। প্রথমে কৃষি ও সমবায় মন্ত্রী। এরপর তিনি শিল্পমন্ত্রী হলেন। এই মন্ত্রী থাকাকালে তিনি লক্ষ করলেন, এক অর্থনীতি দিয়ে দুই অঞ্চলের চলা সম্ভব নয়। যদি পূর্ব অঞ্চলের কোনো শ্রমিক আজকে কাজ না পায় তাহলে পশ্চিমে যাবে, সেটা পারছে না। এক অঞ্চল থেকে আরেক অঞ্চলে যাওয়া এক অর্থনীতির অন্যতম শর্ত। দুই অর্থনীতির কারণ হল পাকিস্তানের দুই অংশের দূরত্ব অনেক। এক হয়ে চলতে পারে না। এই দুই অর্থনীতির ওপর ভিত্তি করেই ছয় দফা হয়েছিল।

দুই অর্থনীতির ধরণটা কেমন ছিল, পাকিস্তানের দুই অংশ মিলে যে রাজস্ব আদায় হত তার ৬০ শতাংশ আদায় হত পূর্ব পাকিস্তান থেকে। কিন্তু পূর্ব পাকিস্তানের উন্নয়নে ব্যবহার হত মাত্র ২৫ শতাংশ। আর ৭৫ শতাংশ ব্যবহার হত পশ্চিম পাকিস্তানে। সারা পাকিস্তানে যে রপ্তানি আয় হত তার ৫৯ শতাংশ হত পূর্ব পাকিস্তানের পণ্য রপ্তানি করে। সারা দেশে আমদানি হত তার মাত্র ৩০ শতাংশ আমদানি হত পূর্ব পাকিস্তানের জন্য। তার মানে হলো রপ্তানি করতাম বেশি, কিন্তু এখানকার উন্নয়ন ও ভোগের জন্য আমদানি হত কম। পশ্চিম পাকিস্তানের উন্নয়ন ব্যয় ছিল পূর্ব পাকিস্তানের চেয়ে সাড়ে তিন থেকে চারগুণ বেশি। সশস্ত্র বাহিনীর ১৬ জন জেনারেলের মধ্যে মাত্র একজন জেনারেল ছিলেন পূর্ব পাকিস্তানের। এই বৈষম্য ও ভিন্ন অর্থনৈতিক অবস্থার বাস্তবতায় ও ১৫শ’ মাইল দূরের দুই অংশের দূরের এক অর্থনীতি নিয়ে চলা সম্ভব নয়। এই ধারণা থেকেই তিনি ১৯৬৬ সালে গিয়ে ৬ দফা উপস্থাপন করেছিলেন। এখানকার মানুষের যে বঞ্চনা ছিল ৬ দফায় উপস্থাপিত হয়েছিল। আর ৭০-এর নির্বাচনে দেশের মানুষ তার রায় দিয়েছিল। একটি সৃমদ্ধ সোনার বাংলা গড়ার যে স্বপ্ন তরুণ বয়সে শেখ মুজিব দেখেছিলেন তা ধাপে ধাপে এগিয়ে নিয়েছেন।

বাংলার জনমানুষ রাজনৈতিকভাবে বঞ্চিত। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত। তৃতীয়ত অঞ্চলে অঞ্চলে অর্থনৈতিক বৈষম্য প্রকট আকার ধারণ করেছিল। যাতে করে এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দানা বেঁধেছিল। যা মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বিস্ফোরণ ঘটে। ১৯৭২ সালে পাকিস্তানের জেল থেকে ফিরে এসে পেলেন শ্মশান বাংলা। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এদেশের ব্যাংক-বিমা, শিল্প, অবকাঠামো সব কিছু শেষ করে দিয়ে যায়। এই অবস্থা থেকে তিনি শুরু করলেন সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম, দুঃখী মানুষের হাসি ফোটানোর সংগ্রাম। যুদ্ধ শুরু করলেন অভাব, ক্ষুধা, রোগ-শোকের বিরুদ্ধে। তিনি বললেন, এ যুদ্ধ সহজ নয়। অবিরাম যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে। অভাবমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তবেই আমাদের সংগ্রাম সফল হবে।

বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্নের কথা বললেন, কিন্তু বাস্তবতা ছিল একেবারেই সঙ্গিন। তখন বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার ছিল মাত্র আট বিলিয়ন ডলার। সঞ্চয় ছিল জিডিপির ৩ শতাংশ এবং বিনিয়োগ ৭ শতাংশ। এই অবস্থায় বিপর্যস্ত অবকাঠামো, শরণার্থীদের পুনর্বাসন, গণতান্ত্রিক সংবিধান, কেন্দ্রীয় ব্যাংক, পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা দাঁড় করালেন। অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বৈরী রাজনীতি সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেন। তখন অবধারিতভাবে শিল্পকারখানা জাতীয়করণ করতে হয়েছে। কারণ তখন বেসরকারি উদ্যোক্তা ছিল না বললেই চলে। পাকিস্তানি যে সব উদ্যোক্তা ছিল যুদ্ধের সময় চলে গিয়েছিল। এ অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে হয়েছিল।

শত প্রতিকূলতার মধ্যে বঙ্গবন্ধু তার আজন্ম লালিত স্বপ্নকে নিয়ে এগিয়ে গেছেন। তিনি সে বোধ থেকেই বললেন, আমার আছে মাটি, আমার আছে মানুষ। তিনি প্রথমেই গুরুত্ব দিলেন কৃষির ওপর। এজন্য তিনি কৃষিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিলেন, কৃষি মানুষকে খাদ্য দেবে, কর্মসংস্থান দেবে এবং শিল্পের কাঁচামাল সরবরাহ করবে। শিল্পেরও প্রসার ঘটবে। অবকাঠামো দ্রুত উন্নয়ন করলেন। কৃষিকে গুরুত্ব দিতে ভর্তুকিতে কৃষি উপকরণ সরবরাহ করলেন। কৃষকের বিরুদ্ধে জারি করা এক লাখ সার্টিফিকেট মামলা প্রত্যাহার করলেন। রেশন ব্যবস্থা চালু করলেন। পাশাপাশি তিনি শিল্পের কথাও বললেন।

বঙ্গবন্ধু সমাজতন্ত্রের কথা বলেছিলেন। তবে বাইরে থেকে ধার করা সমাজতন্ত্রের নয়। গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্র একসঙ্গে বসবাস করবে। সামাজিক গণতন্ত্রের মাধ্যমে আর্থসামাজিক রূপান্তর করবেন।

তিনি মানবসম্পদ সৃষ্টির জন্য কাজ করছিলেন। এজন্য কুদরত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশন গঠন করেছিলেন। গণমুখী প্রশাসন দক্ষ করার জন্য মাঠ প্রশাসনকে প্রাধান্য দিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বায়ত্তশাসন দিলেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলেন। এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে দলের সর্বোচ্চ আসনে ছিলেন। এই সময়ে দলের মধ্যে বিভাজন ছিল, টানাপোড়েন ছিল- এগুলো তিনি সমন্বয় করতে পারতেন। সে জন্য রাজনৈতিক নেতা, মানুষের পথপ্রদর্শক এবং উন্নয়নের চালিকাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে পেরেছিলেন।

তথ্য আছে, দেশ স্বাধীন হওয়ার পরপর ১৯৭২ সালে মাথাপিছু আয় ছিল ৯৩ ডলার। ১৯৭৫ সালে তা উন্নীত হয় ২৭৩ ডলারে। অথচ বঙ্গবন্ধু শাহাদত বরণ করার পর ১৯৭৬ সালে এক ধাক্কায় নেমে গেল ১৩৮ ডলারে। তারপরের বছর আরও নেমে ১২৮-এ দাঁড়াল। তার মানে তিনি কৃষি, ছোট্ট ও মাঝারি শিল্প গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছিলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে হারানোর মধ্য দিয়ে থমকে গেল সোনার বাংলার অগ্রযাত্রা।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করেও উৎপাদন বাড়াচ্ছিলেন। সামাজিক নিরাপত্তার সুযোগ তৈরি হচ্ছিল। এসব কিছু থমকে যায় বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে। এটা ছিল বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামের দিক। পরে আবার ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ।

মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তি ঘাপটি মেরে ছিল। মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত হওয়ার সুযোগ খুঁজছিল। তরুণদের উস্কে দিচ্ছিল, বিপথগামী করছিল। এত অল্প সময়ে দেশকে দাঁড় করানো সোজা কথা ছিল না। আমাদের তরুণদের অস্থির করে তুলেছিল। আমাদের অতি বামরাও তখন এদের উসকানি দিচ্ছিল। যার কারণে এই পরিবেশটা তৈরি হয়েছিল। সে সময় আমাদের খাদ্য ঘাটতি ছিল। পর পর দু’বার বন্যা হওয়ার কারণে খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত হওয়া ও বাইরে থেকে খাদ্য আনাও মুশকিল ছিল। কারণ সে সময় আমাদের যথেষ্ট বৈদেশিক মুদ্রা ছিল না, তেলের দাম বেড়ে গিয়েছিল। যে কারণে দেশের অভ্যন্তরে পণ্যের দাম বেড়ে যায়। সে সময়টাতে বঙ্গবন্ধুকে সব দিকে সামলাতে হচ্ছিল। বঙ্গবন্ধু রাশিয়া থেকে খাদ্য সংগ্রহ করছিলেন। কিন্তু আসতে সময় লাগছিল। পরের বছর আমনের বাম্পার ফলনেরও ব্যবস্থা করে ফেলেছিলেন। ষড়যন্ত্রকারীরা বুঝতে পেরেছিল যদি রাশিয়া থেকে খাদ্য এসে পৌঁছায়, দেশে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয় তাহলে বঙ্গবন্ধু প্রতিকূলতা কেটে উঠবে, স্বাধীনতার লক্ষ্য অর্জিত হবে, বঙ্গবন্ধু সফল হবেন। তার আগেই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সরিয়ে দিল।

মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী পরাজিত শক্তি তরুণদের উসকে দিচ্ছিল। তারা চাচ্ছিল না মুক্তিযোদ্ধারা তাদের ওপর ছুড়ি ঘোরাক, তরুণরা তাদের ওপর কথা বলুক। ১৫ আগস্টের মতো পরিবেশ সৃষ্টি করতে তারাও কলকাঠি নাড়ে। অনেকেই বলার চেষ্টা করেন বঙ্গবন্ধু অর্থনীতিকে চালাতে পারছিলেন না। সেটাও একটি ষড়যন্ত্র ছিল। কিন্তু অংক, তথ্য উপাত্ত বলে বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, যে পরিকল্পনা করেছিলেন এবং সেভাবেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি বেঁচে থাকলে আজকে যেমন তার কন্যা খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্ন করেছেন, মাথাপিছু আয় ১৬ করেছেন, দেশে-বিদেশে বাংলাদেশের মর্যাদা উঁচু হয়েছে। বঙ্গবন্ধু ২০ বছর দেশ চালাতে পারলে সিঙ্গাপুরকে ছাড়িয়ে যেতো। বঙ্গবন্ধুকন্যা সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে, আবর্জনা পরিষ্কার করে দেশকে এগিয়ে নিয়েছেন সেদিন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা না করা হলে তিন যুগ আগেই সমৃদ্ধ বাংলাদেশ দেখতে পেতাম।

অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান : সাবেক গভর্নর

 
Electronic Paper