ছাত্র রাজনীতি নয়, বন্ধ হোক অপরাজনীতি
মীর ইমরান আলী
🕐 ৭:০২ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ০৫, ২০২০
গ্রামে একটা কথা আছে গরিবের বউ সবার ভাউজ। ভাউজ মানে হল ভাবি। বাংলাদেশের রাজনীতিতে ছাত্র রাজনীতি হলো তেমন গরিবের বউ। কিছু ঘটলেই দোষ পড়ে ছাত্র রাজনীতির ঘাড়ে।
কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কিছু ঘটলেই দাবি ওঠে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের। এই প্রবণতা নতুন নয়। অনেকদিন ধরেই চলে আসছে। ক্ষমতাসীন দলের সমর্থিত ছাত্র সংগঠনের নেতারা যখন হত্যা, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিতে জড়িয়ে পড়েন; তখনই সবাই সুর তোলেন ছাত্র রাজনীতি বন্ধের। কিন্তু যুবলীগ নেতারা যে ক্যাসিনো কেলেঙ্কারিতে জড়িত, কেউ কি একবারও যুব রাজনীতি বন্ধের দাবি তুলেছেন? বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের অনেকেই যে হত্যা, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ব্যাংক লুট, শেয়ারবাজার কারসাজির সঙ্গে জড়িত; কেউ কি একবারও রাজনীতি বন্ধের দাবি তুলেছেন, ভুলেও ভেবেছেন!
আচ্ছা বাদ দেন রাজনীতি। বাংলাদেশের কোন পেশার মানুষের মধ্যে অবক্ষয় নেই পুলিশ, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, সাংবাদিক; কোনো পেশায় বেশি, কোনো পেশায় কম; তাই বলে কি কোনো পেশা বন্ধের দাবি উঠেছে? সব দোষ তাহলে ছাত্র রাজনীতির হবে কেন? এখন দেশে একটা বিপজ্জনক রাজনীতিবিমুখ প্রজন্ম বেড়ে উঠছে। জিজ্ঞেস করলেই তারা স্মার্টলি জবাব দেয়, ‘আমি রাজনীতি পছন্দ করি না।‘ শুধু নতুন প্রজন্মই নয়, সব বয়সের মানুষের মধ্যেই রাজনীতি নিয়ে এক ধরনের অনীহা কাজ করে। সাধারণ মানুষ রাজনীতিকে এক ধরনের ভয় পায়। তাই দূরে থাকে। এখন আর কেউ চান না, তার সন্তান ছাত্র রাজনীতি করুক। আর মন্ত্রী-এমপি-নেতা-আমলারা তো তাদের সন্তানদের বিদেশেই পড়ান। তাই দেশ, রাজনীতি, ছাত্র রাজনীতি গোল্লায় গেলে তাদের যেন কিছু যায় আসে না।
এই প্রবণতা দেশ ও জাতির জন্য বিপজ্জনক। তাহলে কি আমরা নিজেরা রাজনীতি থেকে দূরে থাকব আর জেনেশুনে দুর্বৃত্তদের হাতে দেশটা লিজ দিয়ে দেব? ব্যাপারটা যদি এমন হয়, মেধাবীরা সব বিসিএস ক্যাডার হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হবে বা ভালো চাকরি নিয়ে বিদেশে চলে যাবে আর ছাত্র হিসেবে খারাপ এবং স্বভাবে মাস্তানরাই শুধু রাজনীতি করবে; তাহলে আমাদের কপালে সত্যি খারাবি আছে। কারণ ব্যাপারটা খুব সহজ, সাধারণ নিয়মে যারা রাজনীতি করবে, তারাই ভবিষ্যতে এমপি হবে, মন্ত্রী হবে; রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারণ করবে। একটু কল্পনা করুন, ক্লাসের মেধাবী ছাত্রটি বিসিএস দিয়ে প্রশাসন ক্যাডারে গেল আর মাঝারি মানের ছাত্রটি রাজনীতি করল। যে ক্যাডার সার্ভিসে গেল সে প্রমোশন পেতে পেতে সচিব হল। আর মাঝারি ছাত্রটি ধাপে ধাপে মন্ত্রী হল। এখন মন্ত্রণালয়ের নীতিগত সিদ্ধান্ত কিন্তু মন্ত্রীই নেবেন, সচিব তা কার্যকর করবেন শুধু। তার মানে কম মেধাবীরা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, আর বেশি মেধাবীরা তা কার্যকর করছেন।
ব্যাপারটা যদি উল্টো হত যদি মেধাবীরা নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জায়গায় থাকত, তাহলে তা দেশ ও জাতির জন্য আরো কল্যাণকর হত। যার রাজনীতি ভালো লাগে সে রাজনীতি করবে, যে একাডেমিকভাবে ভালো করতে চায়, সে তাই করবে। কিন্তু ছাত্র রাজনীতি বন্ধের নামে রাজনীতি করতে চান, এমন একজন ছাত্রের সামনে একটি অপশন বন্ধ করে দেওয়া মানে তো তার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ। ১৮ বছর বয়সীরাই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন। তারা ভোট দিতে পারবেন, কিন্তু রাজনীতি করতে পারবেন না, এ কেমন বৈপরীত্য!
রাজনীতির একশটা, হাজারটা সমস্যা আছে। তারপরও আমি বিশ্বাস করি, আমরা যত সমালোচনাই করি, রাজনীতিবিদরাই দেশ চালান, নীতি নির্ধারণ করেন। সবচেয়ে খারাপ গণতন্ত্রও অন্য যে কোনো ব্যবস্থার চেয়ে ভালো। ছাত্র রাজনীতি একজন ছাত্রকে সাহসী করে, দায়িত্বশীল করে, স্বার্থপরতার ঊর্ধ্বে উঠে ভাবতে শেখায়। জীবনের সমস্যাগুলো সাহসের সঙ্গে মোকাবেলা করতে শেখায়। তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিতে শেখায়। সবচেয়ে বড় কথা হল, নেতৃত্ব দিতে শেখায়। একজন রাজনৈতিক কর্মী কখনোই তার সহযোদ্ধাকে বিপদে ফেলে পালাবে না। একজন রাজনৈতিক কর্মী কখনোই একা কিছু খাবে না, কেউ কারাগারে গেলে বা পালালে তার পরিবারের পাশে দাঁড়াবে।
মানুষের জীবনটা শুধু হেসে খেলে, বিয়ে করে, ছাও পুষে পার করে দেওয়ার জন্য নয়। জীবনের আরো মহত্তর লক্ষ্য আছে। আছে সমাজকে, রাষ্ট্রকে, বিশ্বকে আরো ভালোর পথে বদলে দিতে আপনার জীবনকে কাজে লাগানোর চেষ্টা। এখন রোবটেরও বুদ্ধি আছে, কিন্তু মানুষ রোবট নয়। গাছেরও জীবন আছে, কিন্তু মানুষ গাছ নয়। মানুষ সৃষ্টির সেরা। কারণ মানুষের জীবন আছে, বুদ্ধি আছে, বিবেক আছে, বিবেচনা আছে। এই পৃথিবীকে আরো বাসযোগ্য করতে, আরো উন্নত করতে সে তার আদর্শকে কাজে লাগাবে। ভালোর সঙ্গে মন্দের পার্থক্য করবে। একজন ছাত্রের মধ্যে সেই আদর্শিক চেতনার বীজ বুনে দেবে ছাত্র রাজনীতি।
বাংলাদেশে ছাত্র রাজনীতির উজ্জ্বল ঐতিহ্য রয়েছে। ৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র আন্দোলনের গৌরবজনক ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু ৯০ সালে স্বৈরাচারের পতনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের যে নতুন অভিযাত্রা শুরু হয়েছে, তার সময় থেকেই শুরু হয়েছে ছাত্র রাজনীতির পচন। এরশাদের আমলে চারবার ডাকসু নির্বাচন হলেও, স্বৈরাচার পতনের পর ২৮ বছর আটকে ছিল ডাকসু নির্বাচন। বিশাল প্রত্যাশা নিয়ে গত বছর ডাকসু নির্বাচন হলেও তা প্রত্যাশা মেটাতে পারেনি। আর ডাকসু নির্বাচন দিয়েই সরকার বুঝে গেছে, সাধারণ ছাত্রদের মধ্যে তাদের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের জনপ্রিয়তা তলানিতে। তাই ডাকসুর পর অন্য বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের যে আশা জেগেছিল; তা পূরণ হয়নি।
ছাত্র সংসদ নির্বাচন না হওয়ায় নেতৃত্বের পাইপ লাইনটা আমরা আটকে রেখেছি। সুস্থতার পাইপ লাইনটা বন্ধ করে আমরা অসুস্থতার আমদানি করেছি অবাধে। এরশাদের আমলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক সব ছাত্র সংগঠনের সহাবস্থান ছিল। এখন যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে, ক্যাম্পাসে শুধু তাদের তৎপরতাই থাকে। বাকিরা রীতিমতো নিষিদ্ধ। যেমন এখন ছাত্রলীগের একক নিয়ন্ত্রণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাস। ছাত্রদলের কোনো অস্তিত্ব নেই। আবার যখন বিএনপি ক্ষমতায় ছিল তখন ছিল উল্টো চিত্র। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার বদলের সঙ্গে সঙ্গে রাতারাতি বদলে যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দখল। শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই এখন ছাত্রলীগের একক কর্তৃত্ব।
তবে এটা জনপ্রিয়তায় বা ভালোবাসায় নয়; গায়ের জোরে ভয় দেখিয়ে। সমস্যাটা এখানেই। ছাত্রলীগের মাস্তানি, চাঁদাবাজি, দখলবাজিকে আমরা ছাত্র রাজনীতির সমস্যা ভেবে বসে আছি। ১৮ থেকে ২৫Ñ এই বয়সটাই অন্যরকম। এই সময় মানুষ কিছু না কিছু করার জন্য তোড়পাড়। সবাই তখন ‘আমি বিদ্রোহী রণক্লান্ত, আমি সেই দিন হবো শান্ত...’র মতো বিদ্রোহী; সবাই তখন মিছিলে যাওয়ার জন্য, যুদ্ধে যাওয়ার জন্য এক পায়ে খাড়া। তারুণ্যের সেই শক্তিকে গঠনমূলক কাজে লাগাতে না পারলেই বরং বিপদ। আমরা আগে দেখেছি, যে সব প্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতি নেই, সেখানেই জঙ্গিবাদের চাষবাস হয়েছে। ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করে আমরা কি তবে দেশজুড়ে জঙ্গিবাদের বিস্তার ঘটাব? অনেকেই বলেন, এখন আর ছাত্র রাজনীতির কোনো লক্ষ্য নেই, তাই এর দরকারও নেই। এটা ঠিক ভাষার দাবি, শিক্ষার দাবি, স্বৈরাচার পতনের দাবি, সমাজ বদলের দাবিÑ এমন কোনো মহৎ উদ্দেশ্য নেই তাদের সামনে। অবশ্য একেবারে কোনো লক্ষ্য নেই তা বলা যাবে না। এই যে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গেস্টরুম, টর্চার সেল, র্যাগিংয়ের কথা শুনি; সুস্থ ছাত্র রাজনীতি থাকলে কোনোভাবেই এটা সম্ভব হত না। এখনও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নানান সমস্যা আছে। সেই সব সমস্যা সমাধানে ছাত্র নেতারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন।
এছাড়া গণতন্ত্রের দাবি, ভোটাধিকারের দাবি, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার দাবি আদায়েও ছাত্ররা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এখন আওয়ামী লীগের লেজুড় হয়ে গেছে বটে, তবে ছাত্রলীগের জন্ম কিন্তু আওয়ামী লীগেরও আগে। আর ছাত্রলীগের রয়েছে গৌরবের দীর্ঘ ঐতিহ্য। কিন্তু গত ১০ বছরে ছাত্রলীগ দানবে পরিণত হয়েছে। বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার পর এখন জানা যাচ্ছে, ছাত্রলীগের নেতৃত্বে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে টর্চার সেল আছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির কাছে চাঁদা চেয়ে পদ হারিয়েছেন ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির কাছে চাঁদা চেয়েছে বলেই না সেটা প্রধানমন্ত্রীর কান পর্যন্ত গেছে। এমনিতে ছাত্রলীগের নেতারা গত দশকজুড়ে সারা দেশে যে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে, তার খবর কিন্তু সাধারণ মানুষ জানে।
ছাত্রলীগের মতো ঐতিহ্যবাহী সংগঠনের নামে এখন গুগলে সার্চ দিলে যা আসে সব নেতিবাচক সংবাদ। হত্যা, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি হেন কোনো অপরাধ নেই তারা করেনি। ছাত্রলীগ এখন আর আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন নয়, বোঝা হয়ে গেছে। তবে আমি ছাত্রলীগকে পুরো দোষ দিই না। তাদের নিয়ন্ত্রণ করার কি কেউ নেই দেশে? দেশের বিভিন্ন স্থানে মূল দলের নেতারাই ছাত্রলীগকে তাদের অপকর্মের লাঠিয়াল হিসেবে ব্যবহার করে। আর দোষ হয় ছাত্রলীগের একার। কারা ছাত্রলীগকে দানব বানাল, সেটাও দেখা দরকার। বুয়েটের যে ছাত্ররা সহপাঠী আবরারকে পিটিয়ে মারল, তারা সবাই কিন্তু এলাকায় নম্র-ভদ্র হিসেবে পরিচিত। সেই মেধাবী ছাত্রগুলো কীভাবে বুয়েটে এসে এমন খুনি হয়ে গেল, বুয়েট কর্তৃপক্ষ কি একবারও ভেবে দেখেছে? মানলাম ছাত্রলীগরা বিভিন্ন ক্যাম্পাসে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। কিন্তু তাহলে প্রভোস্ট, প্রক্টর, ভিসিরা কী করেন? তারা কেন আটকান না ছাত্রলীগকে? আটকান না, কারণ সেই শিক্ষকরাও দলীয় রাজনীতির বিষে নীল। ছাত্র আর শিক্ষকরা যেন মাসতুতো ভাই!
সমস্যা হল, ছাত্রলীগের বিভিন্ন অপকর্মকেই ছাত্ররাজনীতির সঙ্কট মনে করে একটি মহল ছাত্র রাজনীতি বন্ধের ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। মাথা ব্যথা হলে মাথা কেটে ফেলা কখনোই সমাধান নয়। ছাত্র রাজনীতি বন্ধের চেষ্টা আসলে বিরাজনীতিকরণেরই চেষ্টা। ছাত্ররা রাজনীতি না করলে, ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের জন্য সৃষ্টি না হলে কারা দেশের নেতৃত্ব দেবে? অবসরপ্রাপ্ত সামরিক-বেসামরিক আমলা, ব্যবসায়ী, কালোবাজারি আর দুর্বৃত্তরা? কেউ কেউ মনে হয় সেটাই চাইছেন। ছাত্র রাজনীতি করলেই কেউ রসাতলে যাবে, এমন ভাবার কারণ নেই। ছাত্র রাজনীতি করে পরে সাফল্যের সঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিয়েছেন বা দিচ্ছেন এমন মানুষের সংখ্যা কম নয়। বরং যারা ছাত্রজীবনে রাজনীতি করেন, তারা পরে অন্য পেশায়ও নেতৃত্বের পর্যায়ে থাকেন। তাই ছাত্র রাজনীতিকে দোষ না দিয়ে, সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে, তার চিকিৎসা দিতে হবে। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতে সব সংগঠন তৎপরতা চালাতে পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে। ক্ষমতাসীন দলের সংগঠন যাতে সাধারণ ছাত্রদের ওপর নির্যাতন চালাতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে। সরকার চাইলেই সেটা সম্ভব। সাধারণত ক্ষমতাসীনরা ছাত্র আন্দোলনকে ভয় পায়। তারা কোনো না কোনোভাবে ছাত্র রাজনীতিকে দমিয়ে রাখতে চায়। সরকার যদি ছাত্র রাজনীতি বন্ধের চেষ্টা করত, সবার উচিত হত তার প্রতিবাদ করা।
এখন হয়েছে উল্টো, প্রধানমন্ত্রী ছাত্র রাজনীতির পক্ষে বলছেন আর যাদের ছাত্র রাজনীতির পক্ষে থাকার কথা সেই সুশীল সমাজ এর বিপক্ষে বলছেন। অদ্ভুত! ছাত্র রাজনীতি নয়, অপরাজনীতি বন্ধ হোক চিরতরে। আর সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরে আসুক শিক্ষা এবং ছাত্র রাজনীতির সুষ্ঠু পরিবেশ। আবরার হত্যার পর আবেগের প্রবল ঢেউয়ে বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আমি চাই আবেগের ঢেউ থিতিয়ে এলে, বুয়েটেও ছাত্র রাজনীতি করার অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হোক। কারণ বুয়েটের শিক্ষার্থীদের তো পরে অন্তত প্রকৌশলীদের নেতৃত্ব দিতে হবে।
মীর ইমরান আলী : শিক্ষার্থী, আহ্ছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়