নৌ পরিবহনে সমস্যা আছে, সমাধান নেই
মুহাম্মদ শফিকুর রহমান
🕐 ৮:১১ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ০৪, ২০২০
যাত্রীবাহী নৌযান। ঝড়, বন্যা বা অন্য কোনো কারণে দুর্ঘটনা কবলিত হতে পারে। এটা স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু আমাদের সঠিক পদক্ষেপের অভাবে যদি দুর্ঘটনা ঘটে। তাজা প্রাণ হারায়, সেটা মেনে নেওয়া কঠিন। সম্প্রতি বুড়িগঙ্গায় একটি ছোট লঞ্চ ডুবে গেছে। মারা গেছে প্রায় ত্রিশ জন। অন্য লঞ্চ ছোট লঞ্চটিকে সরাসরি আঘাত করে। সিসি টিভি ফুটেজে এমনটা দেখা গেছে। ভাগ্য ভালো, এই দুর্ঘটনা রেকর্ড হয়েছে। অন্য সব দুর্ঘটনা রেকর্ডই হয় না। প্রকৃত কারণ কী, কম সময়ই আমরা জানতে পারি।
লঞ্চটি আঘাত করেছে, সেটি দূর থেকেই ছোট লঞ্চটিকে দেখেছে। তখন স্পিড কমাল না কেন? ওই জায়গায় এমন বেপরোয়াভাবে লঞ্চ চালানোর কোনো যুক্তি ছিল না। অবশ্য বেপরোয়া লঞ্চ চালনা, বিপজ্জনক প্রতিযোগিতা করা নতুন কিছু নয়। বুড়িগঙ্গায় বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য খেয়াঘাট। ছোট ছোট নৌকা খেয়া পার করে। দিন রাত সব সময়। এদের কারণে নৌযান চলাচল ব্যাহত হয়। বরিশালে যে বড় লঞ্চগুলো যায়। সেগুলো দুইশ’ থেকে আড়াইশ’ ফুট লম্বা। ইচ্ছে করলে হুট করে বাসের ব্্েরক কষে লঞ্চ থামানো যায় না। হুট করে নৌকা চলে আসলে তখন সমস্যা হয়। বাল্কহেড (বালুবাহী জাহাজ) রাতে চলাচল করা নিষেধ। তবুও অবাধে চলাচল করছে। এগুলো দূর থেকে দেখে চেনা যায় না।
এগুলোতে সিগন্যাল বাতি থাকে না। অধিকাংশ অংশ পানিতে ডুবে থাকে। ফলে নৌযানের সঙ্গে এর দুর্ঘটনা ঘটে। বহু কথা হয়েছে। ভারি নৌযান তোলার সক্ষমতা বাড়ানোর ব্যাপারে। দুঃখজনক, বাস্তবে কোনো কাজ হয়নি। উদ্ধারকারী জাহাজ বৃদ্ধ হামজার আয়ু শেষ। যাত্রীবাহী, মালবাহী যত নৌযান গত এক দশকে ডুবে গেছে, আশি ভাগই আমরা তুলতে পারিনি। ডুবন্ত নৌযান অন্য নৌযান চলাচলে সমস্যা সৃষ্টি করছে। এমনও হয়েছে, বিভিন্ন চ্যানেল ডুবন্ত নৌযানের কারণে নৌ চলাচল বন্ধ হয়েছে। নদী খননের কথা না হয় নাইবা বললাম। চরম ঝুঁকি নিয়ে বরিশালের লঞ্চগুলো যাতায়াত করে। নদী খননের নামে বরাদ্দ হয়। তবে কাজ কতটুকু হয়।
তা কারো অজানা নয়। দুর্ঘটনা ঘটলে মৃতদের পরিবারকে টাকা দেওয়া হয়। ভালো কথা। তবে এই টাকা দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে সে জন্য আগে কেন খরচ করা হয় না। ডুবে যাওয়া ছোট লঞ্চটির ফিটনেস ছিল কিনা সন্দেহ আছে। বড় নদীতে এত ছোট লঞ্চ চলার অনুমতি কেন দেওয়া হল। দুর্ঘটনায় মানুষের মুত্য হলে আমরা নড়েচড়ে বসি। তদন্ত কমিটি হবে। এই তো!
মুহাম্মদ শফিকুর রহমান, বানারীপাড়া, বরিশাল ৮৫৩০