ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

প্রয়াত কথাসাহিত্যিক নিমাই ভট্টাচার্য স্মরণে...

ফেসবুক থেকে নেয়া
🕐 ৭:০৩ পূর্বাহ্ণ, জুন ২৭, ২০২০

মেমসাহেব-খ্যাত নিমাই ভট্টাচার্য। প্রিয় লেখকদের একজন। আহা, আর কখনো দেখা হবে না।

অরুণ কুমার বিশ্বাস, লেখক

জি, কথা সত্য, নিমাই ভট্টাচার্য বেহেস্তে যাইতে পারবেন না। এইটা ওনার জন্মগত দুর্ভাগ্য। উনি চাইলে দিনের রাস্তায় আসতে পারতেন। কিন্তু আসেন নাই। কাজেই ওনার জন্য জাহান্নামের আগুন অপেক্ষা করতেছে। এইটা অত্যন্ত দুঃখের কথা। এর চেয়ে বড় দুঃখের ব্যাপার কী জানেন? আপনেরা কুটি কুটি দিনদার চ্যালচ্যালাইয়া বেহেস্তে যাইবেন কিন্তু আপনাগো লাইগ্যা আত্মীয়স্বজন ছাড়া কেউ কান্দবে না। নিমাই ভট্টাচার্যগো লাইগ্যা লক্ষ লক্ষ মানুষ কষ্ট পাইতেছে। কানতেছে।

ব্রত রায়, ছড়াকার

মেমসাহেবকে যিনি চিনতেন, তিনি (নিমাই ভট্টাচার্য) আজ মারা গেছেন। অদ্ভুত ব্যাপার হল, মেমসাহেব বইটা আমার সংগ্রহে ছিল, কিন্তু এই মুহূর্তে হাতের কাছে নাই। তাই বিকেলে পিডিএফ নামালাম। তারপরেই শুনলাম... তিনি আর নাই!

সাইফুল ইসলাম জুয়েল, রম্য লেখক

চলে গেলেন ‘মেমসাহেব’ উপন্যাসের স্রষ্টা নিমাই ভট্টাচার্য। জন্ম ১০ এপ্রিল ১৯৩১, তৎকালীন যশোর জেলার মাগুরা মহকুমার (বর্তমান জেলা) শালিখা থানার অন্তর্গত শরশুনা গ্রামে। তিন বছর বয়সে তিনি মাতৃহীন হন। তার পিতার নাম সুরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। ১৯৪৮ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি। এরপর কলকাতার রিপন কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর স্নাতক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। নিমাই ভট্টাচার্য বাংলাদেশের বগুড়া জেলার কালীতলার বিশিষ্ট ব্যবসায়ীর কন্যা দীপ্তি ভট্টাচার্যকে বিবাহ করেন। দেশভাগের পর তিনি পূর্ববঙ্গ থেকে পশ্চিমবঙ্গে স্থায়ী হন। অতঃপর তিনি কলকাতার টালিগঞ্জের শাশমল রোডের বাসায় বসবাস করতেন।

নির্মম অদৃষ্টে সাড়ে তিন বছর বয়সে মাতৃহীন হয়ে ভীষণ কষ্টে পিতার সীমিত আয়ের মধ্যে ভর্তি হন কলকাতা করপোরেশনের ফ্রি স্কুলে। কলকাতা রিপন কলেজে কিছুদিন পড়ালেখা করার পর যশোরে ফিরে আসেন। ১৯৪১ সালে তিনি যশোরের সম্মিলনী ইনস্টিটিউশনে চতুর্থ শ্রেণিতে ভর্তি হন এবং নবম শ্রেণি পর্যন্ত সেখানে পড়াশোনা করেন। নিমাই ভট্টাচার্যের পিতা সুরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য নিজেও যশোরের সম্মিলনী ইনস্টিটিউশনের ছাত্র এবং পরবর্তীকালে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কলকাতা গমনের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত। পরবর্তীকালে দেশ বিভাগের পর নিমাই ভট্টাচার্য তার পিতার সঙ্গে পুনরায় কলকাতায় যান এবং সেখানে আবারো রিপন স্কুলে ভর্তি হন। সেখান থেকে তিনি ১৯৪৮ সালে ম্যাট্রিক পাস করেন এবং সেখান থেকেই তিনি আইএ পাস করেন। এবং ১৯৫২ সালে বিএ পাস করেন।

বঙ্গ রাখাল, কবি

সাহিত্যিক নিমাই ভট্টাচার্য অনন্তলোকে। বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই।

মোজাম্মেল হক নিয়োগী, কবি কথাসাহিত্যিক

আমার বয়সী কেউ আছেন, কৈশোরত্তীর্ণ বয়সে মেমসাহেব পড়ে বালিশ ভেজাননি!

রুমা মোদক, লেখক শিক্ষক

চলে গেলেন দুই বাংলার তুমুল জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক নিমাই ভট্টাচার্য। ২৫ জুন দুপুরে তিনি মারা গেছেন, তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। একাধারে তিনি ছিলেন প্রখ্যাত সাংবাদিক ও খ্যাতিমান লেখক। সাংবাদিকতার পাশাপাশি নিমাই ভট্টাচার্য রচনা করেছেন অনেক বই। তার লেখা বইগুলো নানাভাবে সমৃদ্ধ ও বৈচিত্র্যময়। তবে তাকে মনে রাখার জন্য একটি বই-ই যথেষ্ট। সেটি তার জনপ্রিয় উপন্যাস ‘মেমসাহেব’। এই ‘মেমসাহেব’র জন্যই বাংলার তরুণ সমাজের কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন রিপোর্টার নিমাই ভট্টাচার্য। তার জন্ম ১৯৩১ সালে, নিমাই ভট্টাচার্য ভারতে জন্মগ্রহণ করলেও তার আদিনিবাস বাংলাদেশের যশোরে। যশোরের সম্মিলনী ইনস্টিটিউশনে ক্লাস নাইন পর্যন্ত পড়েন তিনি।

তারপর ১৯৪৭ সালের দেশভাগের সময় চলে যান কলকাতায়। তার পেশাগত জীবন শুরু হয় সাংবাদিকতা দিয়ে। প্রথম উপন্যাস ছাপা হয় অমৃত পত্রিকায়। উপন্যাসটি পাঠকপ্রিয়তা পায়। ১৯৬৮ সালে প্রকাশ পায় ‘মেমসাহেব’ উপন্যাস, তার উপন্যাসের সংখ্যা ১৫০টিরও বেশি। জনপ্রিয় উপন্যাস ‘মেমসাহেব’ চলচ্চিত্রে রূপ পায় ১৯৭২ সালে। তাতে কেন্দ্রীয় বাচ্চু চরিত্রে অভিনয় করেন শক্তিশালী অভিনেতা উত্তম কুমার। এছাড়া ‘মেমসাহেব’-এর ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী অপর্ণা সেন। এরপর তার অনেক উপন্যাস চিত্রায়ন হয়েছে। অমৃত পত্রিকায় প্রকাশিত হয় রাজধানীর নেপথ্যে।

আঞ্জুমান রুহি, লেখক

প্রয়াত হলেন সাহিত্যিক নিমাই ভট্টাচার্য। বৃহস্পতিবার সকালে টালিগঞ্জের বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। বেশ কয়েক বছর ধরেই বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি। বিনম্র শ্রদ্ধা।

রণজিৎ সরকার, শিশুসাহিত্যিক

 
Electronic Paper