ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

শেখ হাসিনা : আপনার হাতে আলোর ফুল

এরশাদ উল্লাহ
🕐 ৭:২৪ অপরাহ্ণ, জুন ০৫, ২০২০

পদ্মের সুরভিতে বিমুগ্ধ বাংলা। পদ্মদল বাংলার জলে ভাসে। পদ্মের হাসিতে অন্ধকার নাশিতে বাংলার আকাশে সোনালি সূর্য উদয় হয়েছে। পদ্মের ছোঁয়া পবিত্রতার প্রতীক। পদ্মের স্নিগ্ধ হাসি প্রশান্তির প্রতীক। আমার পঞ্চপ্রাণের প্রণতি হৃদয়ভরা আরতি পদ্মসম মা জননীর চরণে। মায়ের আসনে মমতার ভূষণে পরিস্ফুটিত পদ্ম। সেই মায়ের কথা বলছি, যিনি মৃত্যুর কাছ থেকে ফিরে এসেছেন কয়েকবার। ব্যর্থ করে দিয়েছেন ষড়যন্ত্র। দুর্বৃত্তকে পরোয়া না করে সত্যের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। সত্য প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে নির্ভীক চিত্তে সংগ্রাম করেছেন। দেশ ও জাতিকে সুন্দরভাবে বাঁচার স্বপ্ন দেখিয়েছেন এবং সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিয়েছেন।

আমি সেই মায়ের কথা বলছি, যিনি বিপ্লবী চেতনায় সঞ্চারিত এবং সুখের প্রদীপ্ত বাসনায় পুষ্পিত বাংলাদেশের বিনির্মাণের দিশারি। যিনি মমতার আঁচলে হারানোর বেদনা ঢাকা দিয়ে হৃদয়পটে এঁকেছেন লাল-সবুজের পতাকা। সেই মায়ের কথা বলছি, যে মায়ের অন্তরে সীমাহীন গভীরতা। সেই মায়ের বুকে এত ভালোবাসা যেন পদ্মা মেঘনা যমুনা ঢেউ খেলে। সেই অধিকারিণী পদ্মসম জননী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আপনার চেতনায় তিয়াসী বাসনায় বাংলার ছবি মটরশুটির ক্ষেত আর কুমড়ার ফুল ছুঁয়েছে। আপনি বাংলা, বাংলা বলে রাজপথের কপাট খুলেছেন বারবার। বাঙালির হৃদয়বীণা আপনার সুরে ঝঙ্কার তুলেছে। আজ বাংলার ঘরে ঘরে আনন্দ বাসা বেঁধেছে। আপনি মহিমান্বিত আপনার অবদান অনস্বীকার্য। ব্যাকুল পিয়াসে বিধাতা যেন কোহিনূর পাথরখচিত মুকুট আপনার জন্য নির্বাচন করেছেন। আপনি বাংলাকে মনে ধরে পবিত্র কাবাঘরে প্রার্থনা করেছিলেন। বাঙালি জাতির সুখ-সমৃদ্ধির কথা বলে কম্পিত হৃদয়ে কেঁদেছিলেন।

এত প্রেম এত ত্যাগ এ দেশের মানুষের জন্য। এ সত্যটুকু কুর্নিশ করে বলতে ইচ্ছে করে। আপনি জীবন নৌকা বাইলেন শুধু বাংলার তরে। দেখেছি চিন্তায়, চেতনায়, দেখেছি অবচেতনে আপনার অন্তর-আত্মা একাকার হয়ে গেছে বাংলা আর বাঙালির পরানে। আলোর দিশারি আপনি, প্রশান্তির ছায়া। আপনার আহ্বানে চৈতি-রাতের চাঁদনি জাগে কী দারুণ মায়ায়। অনবদ্য অনুকরণীয় বৈশিষ্ট্য আপনার, হৃদয়ে রেখাপাত করে। আপনার আদর্শ ধারণ করব এই প্রবৃত্তি মনে বাবুই পাখির বাসা; শ্বাশত শিল্প সৃষ্টি যেন দৃষ্টিলহরি চমকিয়া চায়। নিশুতির আঁধারে মনের সঙ্গে কথা কই, আপন খেয়ালে জেগে রই! আপনার পথচলা কুসুমাস্তীর্ণ হোক। মায়ের আসনে সমাসীন হে জননী আপনি বাংলার অহঙ্কার।

বাংলার মাঠে আপনার পদধূলি, তাই বুঝি উর্বরতা এতটাই। যেথায় আপনার পদচারণ স্মরণ করে হৃদয় এখানে এসেছেন মা নিশ্চয়। নয়ত বাদল কেটে যেতো না। ফুটে উঠত না ঘাসের ফুল। ভেজা বৃষ্টিতে নিত্যনতুন সৃষ্টিতে নাচল হৃদয় জাগল বাংলার মুখ। আপনার চরণধূলি মেখে গায় হৃদয় এমন করে সাজল আর ক্লান্তি রইল না। মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে শিখল; শক্তি ও সাহস সঞ্চারিত হল বুকে। চেয়ার টেবিলের ওপর পড়ে থাকা অগোছালো খাতাপত্রগুলো চোখ মেলল, স্থবির হয়ে যাওয়া কাজগুলো নিবিড় গতি খুঁজে পেল। আপনার পদধূলি পড়েছে বলে বাংলার পথঘাট আজ কাদামুক্ত, পরিপাটি হয়ে গেল। দখিনা হাওয়া বইছে। জাতি আজ প্রশান্তির নিঃশ্বাস ছেড়ে ঘুমাচ্ছে। পাখির কিচিরমিচির ডাকে সকালে ঘুম ভেঙে উঠছে। আপনারা আছেন বলেই আমরা দাঁড়িয়ে সকালটা উপভোগ করছি যথাযথভাবে। 

কতটা প্রশান্ত হলে নিজেকে চেনা হয়, আপনার কাছ থেকে শেখা যায়। মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে, চলার পথে পুষ্পরেণু ছিটাতে আপনি অকল্পনীয় কল্পনার ছবি। আপনি নিশিজাগা পূর্ণিমার রজনী। আপনার আলোতে এ বাংলা আলোকিত। শত অচেনা মুখ আপনার চেনাজানা আপনি বাংলার প্রিয় খুব। নদীতে ঢেউ দেখে মাঝি যেমন হাল ছেড়ে দেয় না। পাড়ে যেতে নৌকা চালায় সে কখনো রপছন ফিরে চায় না।

তেমন সোনার বাংলার ঘাটে নোঙর ফেলতে আপনি নৌকার মাঝি, আপনার তুলনা দেব কীসে। কর্মপরিকল্পনা সুসংহত। সূচনা থেকে সমাপ্তি অবধি মানদ- বজায় রাখা এবং লক্ষ্য নির্ধারণে শতভাগ উজাড় করা আপনার আদর্শ। আত্মপ্রত্যয়ী মনোবল, উদাস সংকল্প ছুঁয়ে যায়। লক্ষ্য কেবল লক্ষণীয় কোঠায় আবদ্ধ নয়; এ যেন বাঞ্ছনীয় পরিসরে পরিশেষ। সমস্ত আক্ষেপ, আকাক্সক্ষার শীর্ণতা বিদীর্ণ করে সম্পূর্ণতার আকাশছোঁয়া আপনার বৈশিষ্ট্য। নীল আকাশের বুকে পাখি সব ডানা মেলে; যেন চিরকালের বন্ধুত্বের বন্ধন হৃদকপাটে কড়া নাড়ে। আর আপনি তো আপন মহিমায় উদ্ভাসিত মুক্ত চেতনা বাংলার হৃদয়জুড়ে।

 

এরশাদ উল্লাহ : চিকিৎসক ও সাংবাদিক

[email protected]

 
Electronic Paper