জীবনের আগে অর্থনীতি নয়
এ কে এম নাজমুল হাসান
🕐 ২:০৬ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ০৮, ২০২০
করোনার প্রকোপের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির মেয়াদ বাড়ানো হলেও বৃদ্ধি পায়নি গার্মেন্টস কর্মীদের ছুটি। এতেই বিপাকে পড়ে যায় লক্ষ লক্ষ গার্মেন্টস কর্মী। চাকরি হারানোর ভয় ও বেতন প্রাপ্তির আশায় করোনার ভয় উপেক্ষা করে গণপরিবহন বন্ধ থাকা সত্ত্বেও কেউ ট্রাক কিংবা পিকআপে করে আবার অনেকে পায়ে হেঁটেই গ্রাম থেকে শহরের গন্তব্যে রওনা হয়।
যানবাহন কিংবা রাস্তা দিয়ে মানুষ যেই পরিমাণ ভিড় করে শহরমুখী হয়েছে তা টিভি নিউজে দেখে প্রতিটি সচেতন নাগরিকের গা শিউরে উঠেছে। এতে করে পুরোপুরি উপেক্ষিত হয়েছে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নীতি। এখন স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সরকারি-বেসরকারি অফিস, আদালত বন্ধ রাখলে গার্মেন্টস কেন নয়? গার্মেন্টস কর্মীরা কি করোনাজয়ী? নীতিনির্ধারকদের উদাসীনতা পুরো সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নীতিকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
গত ১ এপ্রিল বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন গার্মেন্টস বন্ধের বিষয়ে সরকারের কোনো নির্দেশনা নেই। মালিকরা চাইলে সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে গার্মেন্টস চালু রাখতে পারে। কী ধরনের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে পারবে গার্মেন্টসগুলো? মাস্ক আর হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করাই কি যথেষ্ট? সারা বিশ্ব যখন ভাইরাস ঠেকাতে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতের প্রতি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে সেখানে শত শত শ্রমিকদের একত্রে রেখে তাপমাত্রা মেপে, হ্যান্ড স্যানিটাইজার আর মাস্ক পরিয়েই করোনা মোকাবেলা সম্ভব?
জনরোষে আগামী ১১ এপ্রিল পর্যন্ত পোশাক শিল্প বন্ধ ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছে বিজিএমইএ। নির্ধারিত সময়ের পরে কী হবে? অর্থনীতির দোহাই দিয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলা কখনোই কাম্য নয়। জীবনের জন্য অর্থনীতি। অর্থনীতির জন্য জীবন নয়।
এটা নিয়ে চোর পুলিশ খেলার কোনো সুযোগ নেই। কার কী এখতিয়ার আছে কী নেই এসব বলে বসে থাকলে চলবে না, এই মুহূর্তে প্রয়োজন সমন্বিত কার্যক্রম। এ বিষয়ে সরকারকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। সমন্বয়ের অভাব থাকলে দেশকে রক্ষা করা সহজ হবে না। দেশ ও জাতির স্বার্থে এ সময়ে সকলকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।
এ কে এম নাজমুল হাসান, শিক্ষার্থী, অর্থনীতি বিভাগ, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়
[email protected]