ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

দুর্যোগকালীন বাড়ি ভাড়া অর্ধেক করুন

রেজোয়ান হোসেন
🕐 ১:১৭ অপরাহ্ণ, মার্চ ৩১, ২০২০

সারা বিশ্বে হানা দিয়েছে মহামারি করোনা ভাইরাস। আমাদের বাংলাদেশও বাদ পড়েনি সেই তালিকা থেকে। আর এই ভাইরাসের প্রকোপে সারা দেশের মানুষ আজ গৃহবন্দি অবস্থায় দিন পার করছে। রাজধানী ঢাকা ইতোমধ্যে অনেকটাই ফাঁকা হয়ে গিয়েছে। এতটাই ফাঁকা হয়েছে যে বিগত বছরগুলোতে ঈদের সময়টাতেও রাজধানী ঢাকা এতটা ফাঁকা হয়নি। রাজধানীতে অবস্থানরত বিপুল জনসংখ্যার সিংহভাগ জনগোষ্ঠী ভাড়া বাড়িতে বসবাস করে। করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

একটা সহজ সমীকরণ যদি আপনি করেন তাহলে দেখতে পাবেন ভাইরাসের প্রকোপে ব্যবসায়ীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও খেটেখাওয়া মানুষ থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ কম-বেশি কোনো না কোনোভাবে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিন্তু বাড়ির মালিকরা, যারা বাড়ি ভাড়া দেন তারা এই অর্থনৈতিক প্রকোপ থেকে একেবারেই মুক্ত। বাড়িওয়ালাদের অর্থনৈতিকভাবে কোনও লোকসান নেই। তারা ঠিকই মাস গেলে ভাড়া পাবেন। এই দুর্যোগের সময় তারা যদি একটু এগিয়ে আসেন তাহলে হয়ত আমাদের অর্থনীতিতে একটা বিরাট প্রভাব পড়বে।

এমনটি যদি করা সম্ভব হয়, দুর্যোগকালীন এক মাস অর্থাৎ মার্চ অথবা এপ্রিল মাসের বাড়ি ভাড়া মালিকরা তাদের ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে অর্ধেক নেবে। তাহলে বিপুল পরিমাণ একটি অর্থ স্থানীয় বাজারে প্রবেশ করবে। যারা দৈনিক ভিত্তিতে কাজ করেন বা কর্মস্থলে না গেলে বেতন পান না তাদের জন্য এই সময়টা খুবই কষ্টের যাচ্ছে। তারা হয়ত এই সুবিধাটুকু পেলে বিরাট উপকৃত হবে। ঢাকা শহরের বুকে যার একটি বাড়ি আছে, তাকে অন্তত গরিব বলা যায় না। সুতরাং সে যদি এক মাসের বাড়ি ভাড়া অর্ধেক রাখে তবে তার খুব বেশি ক্ষতি হবে না।

অপরদিকে একজন ভাড়াটিয়ার যদি একমাসের ভাড়া অর্ধেক বেঁচে যায় তাহলে বিশেষ করে এই দুর্যোগকালীন মুহূর্তে উপকার হবে। ওই টাকা দিয়ে সে তার প্রয়োজন মেটাতে পারবে। কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে পারবে। এতে করে আমাদের অর্থনীতি খুব দ্রুত সচল হতে পারবে। অপরদিকে এটা করা গেলে বাড়িওয়ালাদের যে খুব বেশি ক্ষতি হবে তা কিন্তু নয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে অনেক পদক্ষেপ নিয়েছেন। যেগুলোর প্রত্যেকটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে আমরা দেখেছি। সেনাবাহিনী নামানো হয়েছে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে। দুর্যোগকালীন বাজেট প্রণয়ন, গুজব প্রতিরোধ, খাদ্য বিতরণসহ নানা কর্মসূচি আমরা দেখতে পাচ্ছি। কয়েকটি পত্র-পত্রিকায় দেখেছি ঢাকার বেশ কিছু বাড়িওয়ালা এই দুর্যোগকালে ভাড়া মওকুফ করেছেন এবং ভাড়াটিয়াদের খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছেন। অবশ্যই সেইসব বাড়িওয়ালা ভূয়সী প্রশংসার দাবিদার। তারা মহৎ হৃদয়ের মানুষও বটে। মহৎ উদ্যোগটি যদি ঢাকাসহ সারা দেশে বাস্তবায়িত করা যায়, অথবা শুধু বিভাগীয় বা জেলা শহরগুলোতে করা যায় তাহলে মানুষ উপকৃত হবে। আর এজন্য দরকার শুধু একটি উদ্যোগের। একটি ঘোষণার।

রেজোয়ান হোসেন : সাবেক শিক্ষার্থী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ

 
Electronic Paper