মুক্তিযুদ্ধের পর বাঙালির জীবাণুযুদ্ধ
শেখ আনোয়ার
🕐 ৮:৫২ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৩, ২০২০
সংখ্যায় কম হলেও বাংলাদেশে কোভিড-১৯ বা নভেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে। যাদের প্রায় সবাই হয় বিদেশফেরত। নতুবা তাদের প্রবাসীদের কারও মাধ্যমে সংক্রমিত। মৃত দুজনের সঙ্গেও বিদেশযোগ সুস্পষ্ট।
চীনে করোনা দেখা দেওয়ার পরই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে করোনার বিস্তার নিয়ে এক ধরনের চিন্তা, উদ্বেগ ও আতঙ্ক দেখা দেয়। কেননা চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ অনেক বেশি। চীনের হাজার হাজার মানুষ বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে কাজ করছেন। তারা চীনে যাচ্ছেন আবার আসছেন। চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসায়িক সম্পর্কও বেশ গতিশীল। চীন থেকে ইলেকট্রনিক্স গেজেটসহ হরেক পণ্য বাংলাদেশে আনছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে চীন আক্রান্ত হওয়ায় এদেশের মানুষ আসলেই ভীত হয়ে পড়েছিল।
এরপর এ রোগের বিস্তার বিশ্বব্যাপী ঘটতে থাকে। করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ক্ষতিগ্রস্ত দেশ ইতালি। ইতালি, আমেরিকাসহ এখন সারা পৃথিবীর চিত্রই ভয়াবহ। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, ইউরোপ-আমেরিকার পর করোনার চোখ এখন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দিকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আশঙ্কাও তাই। অভিবাসন বা শ্রমশক্তির বিচারে বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ দেশ ইতালি। অনেকে ইতালি থেকে ফিরে এসেছেন। দেখা গেছে, এ পর্যন্ত যারা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের বেশিরভাগই ইতালি ফেরত সংশ্লিষ্ট। এই ইতালিতে একদিনেই মৃতের সংখ্যা সাড়ে ৬শ’ ছুঁই ছুঁই করছে। সে দেশ থেকে বাংলাদেশিরা ফিরে এলে পরিস্থিতি নাজুক হয়ে উঠতে পারে এমন আশঙ্কা করা হচ্ছিল আগেই।
পত্রিকায় জানা যায়, বিদেশে যখন করোনার ব্রিডিংকাল তখন বিভিন্ন দেশ থেকে হাজার হাজার যাত্রী ঢাকায় বিমানবন্দরে অবতরণ করেছেন। সেইসব যাত্রীদের অনেকে বিমানবন্দরের বাইরে এসেই আত্মীয়স্বজনকে জড়িয়ে ধরেছেন। এখনকার মতো অত সতর্কতা ছিল না কোথাও। বিমানবন্দর দিয়ে ঢুকে পড়াদের যথাযথ পরীক্ষা হয়নি। বিমানবন্দরে যারা পরীক্ষার দায়িত্বে ছিল, তাদের ব্যক্তি নিরাপত্তার যথাযথ প্রশিক্ষণ-সতর্কতা ছিল না। খবরে প্রকাশ, নিষেধাজ্ঞা জারির পরও ইউরোপ থেকে যাত্রী আসা থেমে নেই। ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে নানা কৌশলে যাত্রী আসছেই। যদিও সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বিমানবন্দর সেনা নিয়ন্ত্রণে। প্রবাসী বাংলাদেশি বিমানবন্দরে নামলেই হাতে সিল মেরে দেওয়া হচ্ছে। যেমনটা যুক্তরাষ্ট্র ভারতসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশেও দেওয়া শুরু হয়েছে। যাতে হাতে সিল মারা দেখলেই মানুষ সতর্ক হতে পারে। ওই ব্যক্তির তো হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার কথা ছিল। তাছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদেরও চিনতে সুবিধা হবে। নির্দেশ মানবেন না যারা, তাদের শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।
অবশ্য করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) শরীরে সুপ্ত থাকলে তা যাতে সহজে চিহ্নিত করা যায় এবং এই ভাইরাস যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সে কারণে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দেশে ফেরা ব্যক্তিদের নিজ নিজ বাড়িতে কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ আগেই দিয়েছে সরকার। করোনা প্রতিরোধে বিদেশ ফেরত সবাইকে ১৪ দিন নিজ বাড়িতে একটি নির্দিষ্ট কক্ষে অবস্থান করতে বারবার অনুরোধ জানানোয় এবং সারা দেশে ভীতি ছড়ালেও বিদেশ ফেরত অনেকেই ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইনের ছকে বাঁধা থাকতে চাইছে না। তারা নিজেদের সুস্থ মনে করে দিব্যি আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও পাড়া-প্রতিবেশীর বাড়িতে যান ও মেলামেশা করেন। এমনকি এই বিশ^ মহামারির সময়ে দেশে এসে কিছু কাণ্ডজ্ঞানহীন প্রবাসী বিয়েও করেন। ফলাফল যা হওয়ার তাই হয়। বিদেশফেরত, বিশেষ করে ইতালি ফেরতদের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে! ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কোভিড-১৯ সমন্বিত নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জানানো হয় সারা দেশে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে এখন ছয় হাজার ৩৯৩ জন রয়েছে। এদের মধ্যে হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে ছয় হাজার ৩১৫ জন।
প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে ৭৮ জন। তবে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে এর মধ্যে আক্রান্ত সন্দেহে পৃথক থাকা বা বাধ্যতামূলকভাবে কোয়ারেন্টাইন, বা বাড়িতে কোয়ারেন্টাইন অবস্থা থেকে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় চিন্তা বাড়িয়েছে প্রশাসনের। সরকারি নির্দেশ অমান্য করে বিভিন্ন জনের ঘুরে বেড়ানোর অভিযোগও পাওয়া গেছে। এজন্য পালানোকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। কারণ, কেউ যদি আত্মহত্যা করতে চায়, আইনে যাই থাকুক, তিনি দাবি করতে পারেন যে তার নিজের জীবন নিয়ে তিনি যা ইচ্ছে তাই করতে পারেন। কিন্তু নিজের পরিবারকে, দেশকে, দেশের কোটি কোটি মানুষকে নিশ্চিত বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দেওয়ার অধিকার তো কারো নেই। কোয়ারেন্টাইনে থাকা সরকারি নির্দেশনা না মানায় ১৪ জেলায় বিদেশফেরত ১৯ জনকে ইতোমধ্যে অর্থদণ্ড দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, প্রশাসনের কড়া নজরদারি ও ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে জেল-জরিমানা করেও তাদের ইচ্ছামতো চলাফেরা ঠেকানো যাচ্ছে না।
ইতোমধ্যে করোনা সংক্রমণে দেশের মধ্যে শীর্ষে উঠেছে মাদারীপুর। মাদারীপুরের শিবচরে প্রথম লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। কম্পিউটার ভাইরাস যেমন উইনডো ও ড্রাইভ ফরমেট দিতে হয়। ঠিক তেমনি করোনা ভাইরাসেও করতে হয় লকডাউন। চীন তা দেখিয়ে দিয়েছে উহানে। তেমনিভাবে বাংলাদেশ কাজ করছে মাদারীপুরের শিবচরে। যেখানে করোনা ভাইরাস বেশি সংখ্যায় ছড়ানোর আশঙ্কা করছেন রোগতত্ত্ববিদরা। এদিকে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস টেস্টিং কিট তৈরি করতে সক্ষম হওয়া বাংলাদেশের বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা সংস্থা গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রকে সরকার অনুমোদন দিয়েছে। এরই মধ্যে চীন থেকেও এসেছে আরও হাজার হাজার কিট। সরকার নিয়ম মোতাবেক যথাযথ কাজ এগিয়ে নিচ্ছে। তাই এ নিয়ে জনগণের অহেতুক ভয় আতঙ্কের কিছু নেই।
চীনে ঠাসাঠাসি মানুষ। ওখানে জায়গা নেই। আমাদের বাংলাদেশে জায়গার অভাব নেই। বড়ই আশার কথা। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রোধে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সেনাবাহিনীকে দু’টি কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে আশকোনা হজক্যাম্প ও উত্তরা দিয়াবাড়ির রাজউকের ফ্ল্যাট প্রকল্প এলাকায়। কিংবা অন্য কোথাও হতে পারে এই কাজ। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার খালি পড়ে রয়েছে। সেখানে একটা কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা করা অসম্ভব নয়। আর স্পেশালাইজড হাসপাতাল তো রয়েছেই। এ কাজে জরুরি অবস্থায় বিজেএমইএ-র প্রাক্তন ভবন কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশন হসপিটাল হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এরকম আরও অনেক জায়গা আমাদের ঢাকাতেই খালি রয়েছে। তবে সব কোয়ারেন্টাইনের দায়িত্বে রাখতে হবে সেনাবাহিনীকে।
পাশাপাশি মনে রাখতে হবে, চলতি বছরের গোড়া অর্থাৎ পয়লা জানুয়ারি থেকে এ দেশে আসা বাংলাদেশের এবং বিদেশিদের চিহ্নিত করে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার নির্দেশ দেওয়া এবং কঠিনভাবে তা কার্যকর করতে হবে। পয়লা জানুয়ারি থেকে, যে বা যারা করোনা আক্রান্ত দেশগুলো থেকে ফিরেছেন, তাদের খুঁজে বের করে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে। শুধু তারাই নন, এ সময়ের মধ্যে বাংলাদেশি এবং বিদেশি নাগরিক যারা দেশ ছেড়েছেন, তাদের নামের তালিকাও তৈরি করতে হবে। একইসঙ্গে এ দেশে এসেও যে বা যারা একটি জায়গা থেকে অন্যত্র স্থানান্তরিত হয়েছেন, তাদের নামের তালিকা প্রণয়ন করে নতুন সেই এলাকার জেলা প্রশাসনকে দেওয়া দরকার। যাতে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার ক্ষেত্রে কোনও অসুবিধা না হয়। বিদেশ থেকে আসা লোকজনের নামের তালিকা সরবরাহ করবে ব্যুরো অব ইমিগ্রেশন। সেই তালিকা অনুযায়ী লোকজনকে খুঁজে বের করার কাজে স্থানীয় বিভিন্ন এনজিও, ক্লাব ও অন্যান্য সামাজিক সংগঠনের সাহায্য নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া যেতে পারে।
বিদেশ থেকে আসা বাংলাদেশি এবং অবাংলাদেশি যাতে স্বেচ্ছায় এগিয়ে এসে নিজেদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান, সে জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন একটি নির্দেশ জারি করতে পারে। স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে সেটার প্রচার চালাতে হবে। কে বা কারা বিদেশ থেকে এসেছেন, তা জানতে যাতে তারাও সাহায্য করতে পারেন। স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য জরুরি এই কাজে ফরেনার্স রেজিস্ট্রেশন অফিস এবং জেলা পুলিশ সুপারদের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। তবে গোটা প্রক্রিয়াটাই অত্যন্ত যত্ন ও বিনয়ের সঙ্গে সারতে হবে। কারণ, কোভিড-১৯ সংক্রমণ কোনও অপরাধ নয়। আক্রান্তদের উপযুক্ত চিকিৎসা এবং মনস্তাত্ত্বিক সাহায্য দরকার। বোঝাতে হবে, পালিয়ে যাচ্ছেন? পালিয়ে থাকছেন? কোয়ারেন্টাইন মানবেন না। কিন্তু কার কাছে যাচ্ছেন? থাকছেন! প্রিয়তমা স্ত্রীর কাছে। প্রাণপ্রিয় সন্তানের বুকে। নাকি গর্ভধারিণী মায়ের আঁচল তলে। ভাই-বাবার পাশে। ওরাই তো আপনার সবচেয়ে প্রিয়, তাই না! সবার আগে তো আপনার প্রিয় মানুষগুলোই বিপদে পড়ছে। আক্রান্ত হচ্ছে। বৃদ্ধ মা বাবাকে তো বাঁচাতেই পারবেন না। বুড়ো দাদাকে যে পায়ে ধরে সালাম করলেন। এটাই হয়ত শেষ সালাম। আপনি হয়ত ভালো হয়ে গেলেন। যারা আপনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হল তাদের দায় কি আপনার ওপর বর্তাবে না? দিন শেষে আপনিই তো দায়ী হবেন। আপনার দেশে আপনি এসেছেন। দেশটাকে নিরাপদ রাখা দায়িত্ব নয় কি? পরিবার ও দেশের জন্য অনেক করেছেন। দেশ পরিবার যেন আপনার দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
বড়ই আশার কথা, বাংলাদেশে করোনা মোকাবেলায় এগিয়ে এসেছে রাষ্ট্রযন্ত্রের সর্বাঙ্গ। করোনা পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে ঐতিহাসিক মুজিব জন্মশতবার্ষিকীর প্রধান কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। মোবাইল ফোনে চলছে করোনা নিয়ে ভয়েস মেসেজ। বন্ধ করা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তবে এখনো চালু রয়েছে ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, ব্যাংক-বীমা, সরকারি প্রতিষ্ঠান, শপিংমল এবং যানবাহন। করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে সরকার সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয়সহ সকল প্রকার জনসমাগম সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। জ¦র, সর্দি এবং ফ্লুতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নির্দেশনা অনুসরণ করে ঘরে বসে নামাজ পড়তে বলা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনকে কোনও প্রয়োজনে পিএমওতে বিগ্রেডিয়ার জেনারেলের তদারকিতে পরিচালিত সার্বক্ষণিক মনিটরিং সেলটির সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
করোনা নিয়ে অত ভয় আতঙ্কের কিছু নেই। একসময় বাংলাদেশে কলেরা হত গ্রামের পর গ্রাম মানুষ মরত। এখন কি সেই অবস্থা আছে? নেই। মুক্তিযুদ্ধের বাঙালির সন্তান এই সময়ের ডিজিটাল প্রজন্ম বড়ই সচেতন। বাংলাদেশকে কলেরা গ্রামের মতো করোনার গ্রাম হতে দেবে না। এক সময় ঝড় সাইক্লোন বন্যায় বাংলাদেশে অনেক লোকজন মারা যেত।
কিন্তু এখন এসব পরিস্থিতির সঙ্গে লড়তে লড়তে অভ্যস্ত সংগ্রামী বাঙালির মৃত্যু কমেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে এখন কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাংলাদেশের চেয়ে আমেরিকায় মৃত্যুহার বেশি। সময় এসেছে, করোনা মোকাবেলায় স্বাস্থ্য দফতরকে এখন যুদ্ধকালীন ভিত্তিতে দিন-রাত কাজ করার। আমাদের সাধ্যের মধ্যে করোনা সংকট মোকাবেলার সুষ্ঠু ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব। চীন, ভারত, জাপান, কোরিয়ার উদাহরণ আমাদের সামনে রয়েছে। ভালো খবর হলো, চীন করোনাকে মোটামুটি রুখে দিয়েছে। সর্বশেষ রিপোর্টে প্রকাশ, উৎপত্তিস্থল উহানে একজনও আক্রান্ত হয়নি। সঠিকভাবে সংকল্পবদ্ধ হলে কী অসাধ্যই না সাধন করতে পারে মানুষ- তাই যেন আরেকবার প্রমাণিত হলো উহানে, চীনে। যেমনটা বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের সময় দেখিয়ে দিয়েছে বাঙালি। জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে জাতিসংঘের দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফলতা দেখিয়েছে বর্তমান বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘ভ্যাক্সিন হিরো’ উপাধি পেয়েছেন।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধেও আশা করা যায় বাংলাদেশ নতুন দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করবে। ভয়ের কোনো কারণ নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা উদ্যোগ ও সহযোগিতায় বাংলাদেশ ইনশাল্লাহ জীবাণুযুদ্ধে জয়ী হবে। করোনা দমনেও বিশ্বে অনুকরণীয় রোল মডেল হোক বাংলাদেশ। এই প্রার্থনা ও প্রচেষ্টা হোক সবার।
শেখ আনোয়ার : বিজ্ঞান লেখক ও গবেষক
[email protected]