ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বিশেষ কলাম

বন্ধুত্বই বেশি প্রয়োজন

শিরিন আফরোজ
🕐 ৯:১৬ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৩, ২০২০

সেই প্রাচীন যুগ থেকে আজ পর্যন্ত প্রেমের আকুতি, ভালোবাসার যে আবেদন তা একটুও পাল্টায়নি। শুধু সময়ের ব্যবধানে পাল্টে গেছে এর প্রকাশভঙ্গি। ভালোবাসা হার মানতে জানে না বলেই পাল্টে যাওয়া সময়ের নানা অনুষঙ্গের মধ্য দিয়ে ঠিকই খুঁজে নেয় তার পথ। ভালোবাসার উপহার বা কার্ডের মধ্য দিয়ে প্রেমের প্রকৃতি পৌঁছে যায় এক হৃদয় থেকে আরেক হৃদয়ে। তবে এত কিছুর ভিড়েও চূড়ান্ত শক্তি কিন্তু ভালোবাসাই। সত্যিকার ভালোবাসার তুলনা শুধু ভালোবাসাই। যে ভালোবাসে আর যাকে ভালোবাসা হয় দুজনই ভালোবাসার উপলক্ষ খোঁজে। দুনিয়াজুড়ে ভালোবাসা দিবস সেই উপলক্ষ মাত্র।

 

আমরা যদি একটা চিন্তা করে থাকি, বন্ধু শব্দের মাঝে মিশে আছে নির্ভরতা আর বিশ্বাস। বন্ধু আর বন্ধন একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। বন্ধুত্ব মানেই যেন হৃদয়ের সবটুকু আবেগ নিংড়ে, ভালোবাসা দিয়ে মন খুলে জমানো কথা বলা। বন্ধুর জন্য গেয়ে ওঠা- হাল ছেড়ো না বন্ধু বরং কণ্ঠ ছাড়ো জোরে, দেখা হবে তোমার-আমার অন্যদিনের ভোরে। বন্ধুত্ব এবং ভালোবাসা এই দুটি শব্দের মধ্যে অনেক পার্থক্য এটা ঠিক। কিন্তু একবার চিন্তা করে দেখেন। ভালোবাসার মাঝে যদি বন্ধুত্বটা থাকে তাহলে দুজন দুজনকে বুঝতে জানতে কতটা সহজ হয়। প্রেমিক-প্রেমিকা হোক আর স্বামী-স্ত্রী প্রেমের মূলমন্ত্র হচ্ছে পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস। যত জটিলতাই তৈরি হোক না কেন, ঝড়ঝাপটা যাই আসুক কেউ যেন বিশ্বসচ্যুত না হয়।

এ বিশ্বাস বিয়ের আগে বা পরে বলে কোনো কথা নেই। এ বিশ্বাস হবে সব সময়ের জন্য। যেসব বন্ধুর জন্য হোক বা ভালোবাসার মানুষটির জন্য হোক, সব রকমের সম্পর্কের মধ্যে থাকবে বন্ধুসুলভ সমঝোতা। বন্ধুত্ব হবে পানির মতো টলটলে পরিষ্কার। প্রতিটি মানুষের মাঝেই কিন্তু ভালোবাসার বসবাস থাকে। এ বসবাসের ভেতরই রচিত হয় ভালোবাসার স্বপ্নগাথা। ভালোবাসার এমন কিছু ভাবনা থাকে যা সময়ের দোলাচলে কখনো কখনো পরিবারের কিংবা বন্ধু-বান্ধবদের সামনে প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়ায়। ভালোবাসা সব সময় ভাগ্যের ওপর নয় বরং ভালোবাসা সাহস, আত্মবিশ্বাস, পারস্পরিক সমঝোতা, অন্যের অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার মানুষটিকে বোঝার ওপর নির্ভর করে। আর যদি এককথায় বলি বন্ধুত্বের মতো করে তাকে বুঝতে হবে! তাকে না পেলে জীবনটা বৃথা হয়ে যাবে, এমনটি না ভেবে ভালোবাসা ভাবতে শেখাক জীবনের বাস্তবতা। অকপটে জানিয়ে দেওয়া প্রয়োজন নিজের মনের কথা। খোলা মনে আলাপ করতে হবে তার সঙ্গে। আর খোলা মনে আলাপ করতে হলে বন্ধুত্বের মতো করে কথা বলা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। ভালোবাসার অসংখ্য কারণের সঙ্গে নিজের ভেতরের বৈপরীত্যগুলো বোঝার চেষ্টা করতে হবে এবং আরও বেশি বিশ্বাস নিয়ে তার প্রত্যাশা মতো নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। সততা ভালোবাসার সবচেয়ে বড় ব্যারোমিটার।

বর্তমানে অনেকে বলেন, ভালোবাসার মাঝে নকি স্বার্থ থাকে। বন্ধুত্বের মাঝে থাকে নিঃস্বার্থ ভালোবাসা। তাহলে কি বন্ধুত্বই করবে বেশি নাকি ভালোবাসারও ব্যাপার আছে? তবে জীবনে চলার পথে বন্ধুর হাত তো ধরতেই হয়। কখনো কি মনে হয়েছে, ভালোবাসার মানুষটা যদি বন্ধু হতো তাহলে ভালোবাসা আর বন্ধুত্ব উভয়ই একসঙ্গে থাকত। তবে একজন ছেলে ও মেয়ের মাঝে শুধু ভালোবাসার সম্পর্ক হয়, এটা ভুল। বরং তার চেয়ে একটা ছেলের সঙ্গে একটা মেয়ের খুব ভালো বন্ধুত্ব হতে পারে। বর্তমানে সমাজে খুব দেখা যায় এটা। বন্ধু থেকে প্রেম-বিয়ে। বর্তমানে খুব চোখে পড়ে এমন সম্পর্কের।

শিরিন আফরোজ : কলাম লেখক, চট্টগ্রাম
[email protected]

 
Electronic Paper