ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বঙ্গবন্ধু কেমন বাংলাদেশ চেয়েছিলেন

আরাফাত শাহীন
🕐 ৯:৪২ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৮, ২০২০

বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন হবে এ বছর। বঙ্গবন্ধুকে বিশ্বের বুকে অধিক মাত্রায় পরিচিত করে তুলতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকার। বছরজুড়ে নানা আয়োজনের মাধ্যমে পালন করা হবে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী। এই শুভলগ্নে এসে বঙ্গবন্ধুকে ব্যাপক পরিসরে জানার ও বোঝার প্রয়োজনীয়তা ভীষণভাবে অনুভব করছি। তিনি কেমন বাংলাদেশ দেখতে চেয়েছিলেন এবং আজকের বাস্তবতায় তার কতটুকু প্রয়োগ দেখা যাচ্ছে সে বিবেচনা করা সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে।

বঙ্গবন্ধুকন্যা এবং বর্তমান দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার পিতার শৈশব সম্পর্কে ‘শেখ মুজিব আমার পিতা’ গ্রন্থে লিখেছেন, ‘আমার আব্বার শৈশব কেটেছিল টুঙ্গিপাড়ার নদীর পানিতে ঝাঁপ দিয়ে, মেঠোপথের ধুলোবালি মেখে, বর্ষার কাদা পানিতে ভিজে। বাবুই পাখি বাসা কেমন করে গড়ে তোলে, মাছরাঙা কীভাবে ডুব দিয়ে মাছ ধরে, কোথায় দোয়েল পাখির বাসা, দোয়েল পাখির সুমধুর সুর আমার আব্বাকে দারুণভাবে আকৃষ্ট করত। আর তাই গ্রামের ছোট ছোট ছেলেদের সঙ্গে করে মাঠে-ঘাটে ঘুরে প্রকৃতির সঙ্গে মিশে বেড়াতে তার ভালো লাগত।’

আমরা যদি জাতির পিতার সমগ্র শৈশব পর্যালোচনা করি তাহলে সেখানে দেখতে পাব, তিনি শিশুকাল কাটিয়েছেন এ বাংলার জল, কাদা আর পানিতে। সেই শৈশব থেকেই তিনি মানুষের কাছাকাছি থেকেছেন এবং মানুষের প্রতি বুকের গহিন থেকে গভীর মমত্ববোধ লালন করেছেন। তার এ চেতনার প্রতিফলন পরবর্তী জীবনে যখন রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন তখন পরিপূর্ণভাবে প্রকাশ পেয়েছে।

তিনি রাজনীতি করেছেন এ দেশের মানুষের জন্য, নিজের জীবনবাজি রেখে সংগ্রাম করে গেছেন দেশ ও জাতির স্বাধীনতার জন্য। তাই তো আমরা দেখেছি, তার ২৪ বছরের রাজনৈতিক জীবনের ১২ বছরই কাটিয়েছেন জেলে বসে। তারপরও তাকে শাসকগোষ্ঠী দমিয়ে রাখতে পারেনি। এ অদম্য মনোবল এবং ইচ্ছাশক্তি তিনি পেয়েছেন এ দেশের কাদা, মাটি ও প্রকৃতি থেকে।

বঙ্গবন্ধু জন্মগ্রহণ করেন ১৯২০ সালে বর্তমান গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায়। বস্তুত শৈশব থেকেই তার ভেতর নেতৃত্বগুণ ছিল সমুপস্থিত। একসময় এ ছোট্ট শিশুটিই যে বাঙালি জাতির মুক্তির বার্তা বহন করে নিয়ে আসবে তা আগেই উপলব্ধি করা গিয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালে তিনি সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়লেন। ছাত্রাবস্থায় জেল খাটলেন, শিকার হলেন নির্যাতনের। কিন্তু তিনি হাল ছাড়লেন না। নিজের সিদ্ধান্তে অটল ও অবিচল রইলেন। শাসকগোষ্ঠীর কাছ থেকে দাবি আদায়ের অদম্য স্পৃহা এ যুগের শিক্ষার্থীরা বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে সহজেই পেতে পারে।

১৯৪৭ সালে ধর্মীয় জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে ভারত ও পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম হয়। বঙ্গবন্ধু তখন প্রথম সারির নেতা না হলেও পাকিস্তান সৃষ্টির আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব প্রদান করেছেন। তিনি ভেবেছিলেন, ব্রিটিশ সরকারের অধীনতা থেকে মুক্তি পেয়ে পাকিস্তান রাষ্ট্র গড়তে পারলে বাঙালি মুসলমানদের স্বাধীনতা মিলবে; তারা মুক্তি পাবে চির অভিশাপ থেকে। কিন্তু বাঙালি মুসলমানদের মুক্তি মিলল না। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী শোষণ করার জন্য এ দেশের শান্তিপ্রিয় জনগণকেই বেছে নিল। তারা ’৫২ সালে সর্বপ্রথম আঘাত হানল ভাষার ওপর। তিনি জেলখানায় থাকা অবস্থায় প্রিয় মাতৃভাষার দাবির আন্দোলনে অনশন করেছেন। এ দেশ এবং এ ভাষাকে তিনি মায়ের মতোই ভালোবাসতেন।

বঙ্গবন্ধু এ দেশের মানুষকে নিয়ে সবসময় ভাবতেন। তাদের সুখ-দুঃখের অংশীদার হতে পারাকে গর্বের বলে মনে করতেন। ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থে লিখেছেন- ‘একজন মানুষ হিসেবে সমগ্র মানবজাতি নিয়েই আমি ভাবি। একজন বাঙালি হিসেবে যা কিছু বাঙালিদের সঙ্গে সম্পর্কিত তাই আমাকে গভীরভাবে ভাবায়। এ নিরন্তর সম্পৃক্তির উৎস ভালোবাসা, অক্ষয় ভালোবাসা, যে ভালোবাসা আমার রাজনীতি এবং অস্তিত্বকে অর্থবহ করে তোলে।’

দুই.
বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্রচিন্তা সম্পর্কে কবি কামাল চৌধুরী তার ‘বাঙালির বঙ্গবন্ধু’ প্রবন্ধে লিখেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্রচিন্তার একটি ধারাবাহিকতা আমরা দেখি। ’৫৫ সালে বঙ্গবন্ধু বাংলার কথা বলেছেন। ’৬৬ সালে এসে ‘আমার সোনার বাংলা’ গাইছেন, ’৬৯-এ এসে তিনি বলেছেন, এ অঞ্চলের নাম হবে বাংলাদেশ। হৃদয়ের গভীরে লালিত এ অঙ্গীকার থেকেই বাঙালির রাষ্ট্রচিন্তাকে বঙ্গবন্ধু সামষ্টিক রূপ দিয়েছেন। আমাদের অনৈক্য ও সংশয়কে দূরীভূত করেছেন। বাঙালির আবেগকে উজ্জীবিত করেছেন। স্বপ্ন ও আকাক্সক্ষায় যোগ করেছেন অভূতপূর্ব ঐক্যসূত্র। শেষাবধি পরিণত হয়েছেন ব্যক্তি থেকে জাতির কণ্ঠস্বরে- জাতির প্রতীক মানুষে।’

বস্তুত বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে এ দেশের মাটি ও মানুষের যোগসূত্র ছিল অত্যন্ত গভীর। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময়ই তিনি পাকিস্তানি শোষকের কারাগারে বসে কাটিয়েছেন। তবে যুদ্ধের ময়দানে তিনি উপস্থিত থাকতে না পারলে কী হবে- সমস্ত সময়জুড়েই তিনি এ দেশের আবাল-বৃদ্ধ-বনিতার বুকের ভেতর বাস করে এসেছেন। সেই যে তিনি ৭ মার্চ বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা দিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ তার এ বজ্রধ্বনি শুনে কেউ আর ঘরে বসে থাকেনি। ঝাঁপিয়ে পড়েছিল স্বাধীনতা সংগ্রামে। দেশের আপামর জনসাধারণের অসাধারণ ত্যাগ আর রক্তের বিনিময়েই তো আমরা আজকের এ স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। বঙ্গবন্ধু সবসময় মিশে ছিলেন এ দেশের মাটি ও মানুষের সঙ্গে।

পাকিস্তানের কারাগারে বসেও তিনি সর্বদা এ দেশের কথা ভেবেছেন; সংগ্রামী মানুষের চিত্র তার মানসপটে বারবার ভেসে উঠেছে। জেলে থাকাকালীন তার ফাঁসির আদেশ হয়। তবুও তিনি ভেঙে পড়েননি একটুও। তিনি শাসকের রক্তচক্ষুর সামনে বলেছিলেন, ‘আমার মৃত্যু এসে থাকে যদি আমি হাসতে হাসতে যাব, আমার বাঙালি জাতিকে অপমান করে যাব না, তোমাদের কাছে ক্ষমা চাইব না এবং যাওয়ার সময় বলে যাব- জয় বাংলা, স্বাধীন বাংলা, বাঙালি আমার জাতি, বাংলা আমার ভাষা, বাংলার মাটি আমার স্থান।’

দীর্ঘ নয় মাসের সংগ্রাম আর লাখো মানুষের সীমাহীন ত্যাগের ফলে দেশ স্বাধীন হলো। সর্বোচ্চ ইচ্ছা থাকার পরও পাকিস্তান সরকার বঙ্গবন্ধুকে আটকে রাখতে পারল না। তারা তাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হলো। সাংবাদিকরা জাতির জনককে প্রশ্ন করলেন, ‘আপনি যে আপনার বাংলাদেশে ফিরে যাবেন সেই দেশ তো এখন ধ্বংসস্তূপ!’ তখন বঙ্গবন্ধু জবাবে বলেছিলেন, ‘আমার বাংলার মানুষ যদি থাকে, বাংলার মাটি যদি থাকে, একদিন এই ধ্বংসস্তূপ থেকেই আমি আমার বাংলাদেশকে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত, শস্য-শ্যামলা সোনার বাংলায় রূপান্তরিত করব।’

তিন.
বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরে এলেন। তার স্বপ্নের দেশ এখন স্বাধীন। কোনো বিদেশি শক্তির কাছে এখন আর এ দেশের মানুষের মাথা নত করে থাকতে হবে না। তিনি আবেগে আপ্লুত হলেন। সে দিনের এই আবেগঘন পরিবেশ সম্পর্কে বঙ্গবন্ধুর সেই সময়ের ঘনিষ্ঠ সহচর তোফায়েল আহমেদ লিখেছেন- “সুদৃশ্য তোরণ, বাংলাদেশের পতাকা ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি দিয়ে সজ্জিত রাজপথের দু’পার্শ্বে দাঁড়ানো জনসমুদ্র পেরিয়ে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ময়দানে পৌঁছলাম। ঘড়ির কাঁটায় তখন বিকাল সাড়ে চারটা।

চারদিকে লাখ লাখ অপেক্ষমাণ জনতা, কোনোদিকে তিল ধারণের ঠাঁই নাই। আবাল-বৃদ্ধ-বনিতার মুহুর্মুহু করতালিতে চারদিক মুখরিত। ‘জয় বাংলা’, ‘জয় বঙ্গবন্ধু’ রণধ্বনিতে সবকিছু যেন ডুবে গেল। বঙ্গবন্ধু মঞ্চে উঠে চতুর্দিকে তাকালেন এবং রুমালে মুখ মুছলেন। বঙ্গবন্ধুর মুখের দিকে তাকিয়ে আমার কেবলই মনে হয়েছে, জাতির জনক জীবনভর এমন একটি দিনের অপেক্ষায়ই ছিলেন।”

এবার বঙ্গবন্ধু তার স্বপ্নের স্বদেশ গড়ায় মনোযোগী হলেন। এতদিন তিনি বুকের ভেতর এই মহান স্বপ্ন লালন করে এলেও কুচক্রী শাসকরা তার কোনো সুযোগই দেয়নি। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে যুদ্ধের ফলে দেশে যে অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছিল তা পূরণ করে আবার ঘুরে দাঁড়ানো কম কথা নয়। বেশ সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।

বঙ্গবন্ধু দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়েই সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। তার সৌভাগ্য যে, এ দেশের আপামর জনসাধারণ তাকে তাদের সর্বোচ্চ দিয়ে সমর্থন জানিয়েছিল। ’৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে যেমন জনগণ তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছিল তেমনি যুদ্ধোত্তর দেশ গঠনের সময়ও জনতা তার পাশে এসে দাঁড়াল। কিন্তু এ অবস্থা থেকে বের হয়ে এসে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে ওঠার জন্য যে সময়টুকু প্রয়োজন ছিল তা তিনি পাননি। তার আগেই তাকে দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে হলো। একটি জাতির প্রতিষ্ঠাতাকে বুঝি এভাবেই বিদায় নিতে হয়!

বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর নানা ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে অবশেষে আমরা একটা সম্মানজনক অবস্থানে এসে আজ দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছি। আমরা তার হত্যার বিচার বিলম্বে হলেও এ বাংলার মাটিতে করে দেখাতে পেরেছি। এটাই হয়তো আমাদের সবচেয়ে বড় সফলতা। একটা সময় হেনরি কিসিঞ্জারের মতো মানুষ বঙ্গবন্ধুর প্রিয় স্বদেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ বলে উপহাস করার সাহস দেখাত। আজ আর আমাদের সেই লজ্জাজনক অবস্থা নেই। বিশে^র বুকে আমাদের অবস্থান এখন যে কোনো সময়ের চেয়ে অধিক সম্মানজনক। আমরা ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছি। একটু দেরিতে হলেও প্রমাণ করতে পেরেছি, এ বীরের জাতিকে দাবিয়ে রাখা মোটেও সহজ কাজ নয়।

চার.
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশকে সোনার বাংলায় রূপান্তর করার যে ঐতিহাসিক স্বপ্ন দেখেছিলেন তা কি আজও বাস্তবায়িত হয়েছে? প্রশ্ন থেকেই যায়। আমরা তেমনটা করে দেখাতে পারিনি। এ দায় আমাদের। আজও আমরা দুর্নীতিতে পৃথিবীতে প্রথম সারিতে রয়েছি। জাতির পিতা সারাজীবন এ দুর্নীতি এবং অনাচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন। তবে আমরা কেন বছরের পর বছর ধরে এ মহাসমস্যার মূলোৎপাটন না করে একে জিইয়ে রেখেছি? এ প্রশ্নকে কোনোমতেই পাশ কাটিয়ে যেতে পারি না। আমরা আজ দেশের প্রতিটি খাতে সীমাহীনভাবে লুটপাট চালিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাকে পথে বসিয়ে দেওয়ার মতলব এঁটেছি। এই অবস্থা থেকে যদি বের হয়ে আসতে না পারি তাহলে কীভাবে সোনার বাংলা গড়ে তুলব?

আমার দেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের দেশে পরিণত করতে হলে সবার আগে মূল্য দিতে হবে এদেশের কৃষকের পরিশ্রমের। কিন্তু আমার দেশের কৃষকরা আজ সবচেয়ে বেশি লাঞ্ছিত ও অপদস্ত। কতিপয় মুনাফালোভী স্বার্থান্ধ গোষ্ঠী দেশের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য কৃষককে তার ফসলের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত করে চলেছে।

দেশের প্রতিটি মানুষের জন্য আমরা এখনও পর্যন্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে পারিনি। এ দেশে লাখ লাখ বেকার কর্মসংস্থানের অভাবে মাদকে আসক্ত হয়ে ভয়াবহ জীবন বেছে নিচ্ছে। এসব তরুণরাই একদিন দেশের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। সুতরাং তাদের জন্য কর্মপরিবেশ সৃষ্টির কোনো বিকল্প নেই।

স্বাধীনতার প্রায় অর্ধ শতাব্দী পেরিয়ে আসার পর এমন সমস্যা আমাদের আজও চিন্তিত করে তোলে। নারীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা সম্ভব হয়নি। জাতির পিতার স্বাধীন দেশে ধর্ষিত নারীর হাহাকার আমাদের রাতের ঘুম কেড়ে নেয়। নৈতিকতাকে আজ সর্বক্ষেত্রে বিসর্জন দিয়ে চলেছি। এটাই কি হওয়ার কথা ছিল?

এ দেশকে আমাদের বঙ্গবন্ধুর সেই সোনার বাংলায় রূপান্তরিত করতে হবে। যে স্বপ্ন তিনি আজীবন লালন করে আমাদের একটা স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র উপহার দিয়ে গেছেন তার মর্যাদা রক্ষার তাগিদ আমরা কি একটুও অনুভব করি না? আমাদের চেতনাকে জাগ্রত করতে হবে। পারস্পরিক বিরোধকে চিরতরে মিটিয়ে দিয়ে শুধু দেশের উন্নয়নের জন্য আপামর জনসাধারণকে আবার এক কাতারে এসে দাঁড়াতে হবে।

বঙ্গবন্ধু তো এটাই চেয়েছিলেন- আমরা সবাই এক হয়ে যাই! আজ জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার জন্য সবার আগে তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে। তাদের মধ্যে সংকল্প থাকতে হবে- এ বাংলা বঙ্গবন্ধুর বাংলা; একে তার স্বপ্নের মতো করে সাজাতেই হবে আমাদের।

আরাফাত শাহীন : শিক্ষার্থী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
[email protected]

 
Electronic Paper