চুক্তি মানেই দেশবিরোধী নয়
সাজ্জাদ কাদির
🕐 ১০:১০ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১২, ২০১৯
কদিন আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চার দিনের ভারত সফর করেছেন। এক দেশের সরকারপ্রধান আরেক দেশ সফর করবেন এটিই স্বাভাবিক। কিন্তু সেই সফর নিয়ে যখন একটি গোষ্ঠী ষড়যন্ত্রের রাজনীতিতে লিপ্ত হয় কিংবা কোনো ধরনের বিচার-বিশ্লেষণ না করেই পারস্পরিক কাদা ছোড়াছুড়ি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টায় লিপ্ত হয় তখনই কথা ওঠে। আমাদের দেশেও একটি কট্টরপন্থি গ্রুপ আছে যারা সব সময় ওতপেতে থাকে। শেখ হাসিনা ভারত সফরে গেলেই সাধারণ মানুষকে ভুলভাল বুঝিয়ে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়। ফাঁকা আওয়াজ তোলে দেশ গেল দেশ গেল করে।
জনগণকে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলার সব অপচেষ্টা সমানতালে চলে। এবারও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। ঘোলা পানিতে মাছ শিকার অব্যাহত আছে। এমনকি দেশের সবচেয়ে মেধাবী ছাত্ররা যে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে পড়ে সেই বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ক্যাম্পাস এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদের রক্তে রঞ্জিত হয়েছে।
সে ঘটনায় সমগ্র জাতি চোখের জ্বলে ভেসেছে; দেশের এমন মেধাবী সন্তানের খুন হওয়ায় আমরা সবাই ব্যথিত। তীক্ষ্ণ মেধাবী আমাদের এ শ্রেষ্ঠ সন্তানটির বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি। সেই সঙ্গে খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।
একটু দেখে নেওয়া যাক শেখ হাসিনার এবারের ভারত সফরে কী কী চুক্তি সই হয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সাতটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়।
চুক্তিগুলো হচ্ছে-ফেনী নদী থেকে প্রতি সেকেন্ডে ১ দশমিক ৮২ কিউসেক পানি উত্তোলন করতে পারবে ভারত। দুই দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে উপকূলে সার্বক্ষণিক মনিটরিং ব্যবস্থার (কোস্টাল সারভেইল্যান্স সিস্টেম-সিএসএস) বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সই করেছে দুই দেশ। চট্টগ্রাম ও মোংলা সমুদ্রবন্দর দিয়ে ভারতীয় পণ্য পরিবহনের বিষয়ে একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) স্বাক্ষর হয়েছে।
বাংলাদেশকে দেওয়া ভারতের ঋণ প্রকল্প বাস্তবায়ন চুক্তি করা হয়েছে। সহযোগিতা বিনিময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক। এ ছাড়া সাংস্কৃতিক কার্যক্রম বিনিময় নবায়ন এবং যুব উন্নয়নে সহযোগিতা নিয়ে দুটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।
সাতটি চুক্তির মধ্যে কয়েকটি নিয়ে খুব বড় রকমের বাড়াবাড়ি করে দেশের শান্তি বিনষ্ট করার অপচেষ্টা চলছে যা অত্যন্ত দুঃখজনক। সেগুলোই বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করেছি।
০১.
অন্যতম প্রধান একটি বিষয় হলো, ফেনী নদীর পানি ত্রিপুরার সাবরুম শহরে সুপেয় পানির জন্য ভারতকে প্রদানের চুক্তিটি নিয়ে ব্যাপকভাবে বিভ্রান্তি ছাড়ানো হচ্ছে। বাংলাদেশের পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্রমতে, শুকনো মৌসুমে ফেনী নদীতে ৪৬-৪৭ কিউসেক পানি প্রবাহিত হয়। নদী বিশ্লেষকদের মতে, সেখান থেকে ভারতের ত্রিপুরার সাবরুম শহরে তাদের তীব্র সুপেয় পানির অভাব পূরণের জন্য প্রতি সেকেন্ডে ১ দশমিক ৮২ কিউসেক বা প্রায় ৫০ লিটার মানে ৩ বালতি পানি সরবরাহ করলে ফেনী নদীর পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের কোনো পরিবর্তন ঘটবে না।
শেখ হাসিনা ভারতের প্রতি এই ছোট্ট সেক্রিফাইসটি (উৎসর্গ) কেন করছেন জানেন? একটি বৃহৎ স্বার্থ অর্জনের জন্য। আমরা সবাই জানি দীর্ঘদিন যাবৎ তিস্তা চুক্তি হবে হবে করেও হচ্ছে না। এই ছোট্ট সেক্রিফাইসটির মাধ্যমে যেন ভবিষ্যতে ভারতকে তিস্তা চুক্তি করতে রাজি করানো যায়।
ভুলে গেলে চলবে না, ভারত আমাদের বাংলাদেশ সীমানার চারপাশ ঘেঁষা একটি বড়ভাইসুলভ বৃহৎ প্রতিবেশী রাষ্ট্র। বড়ভাই যদি ছোট ভাইকে কোনোভাবে বঞ্চিত করে আপনার আমার কিচ্ছু করার নেই; করার থাকেও না। আইন আদালত যতই করেন ঝুলে পড়ে থাকবেন। আপনার আমার নিজেদের ব্যক্তিগত জীবনে এমন উদহারণ ভুরি ভুরি আছে। একটু শুধু মিলিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করুন দেখবেন মিলে যাবে। রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রেও একই। যতই আন্তর্জাতিক আদালতে যান বছরের পর বছর ঝুলে থাকবেন। আর ভারতের সঙ্গে গায়ের জোরেও কিছু করার ক্ষমতা আমাদের নেই। সমস্যা সমাধানের একমাত্র উপায় কৌশলগত রাজনীতি। শেখ হাসিনা সেটিই করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
০২.
আর একটি আলোচিত চুক্তি হচ্ছে- এলপিজি (বাসা-বাড়িতে রান্না করার জন্য সিলিন্ডারে ভরা গ্যাস) ভারত বাংলাদেশ থেকে আমদানি করবে। এ ব্যাপারে এখানে আরও পরিষ্কার করে বলা প্রয়োজন, পাইপলাইনে আমাদের নিজস্ব ভূগর্ভস্থ প্রাকৃতিক গ্যাস রপ্তানির কোনো চুক্তি হয়নি ভারতের সঙ্গে। চুক্তি হয়েছে বিদেশ থেকে আমাদের আমদানি করা গ্যাস সে দেশে রপ্তানির।
ভারতের অন্যান্য প্রদেশ থেকে ত্রিপুরায় এলপিজি পাঠাতে ১৫০০ কিলোমিটার দুর্গম পথ পাড়ি দিতে হয়। তারা বাংলাদেশ থেকে আমদানি করতে পারবে মাত্র ২০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে। আমাদের এলপিজি গ্যাস শিল্প গড়ে উঠেছে নিজস্ব ভূগর্ভস্থ প্রাকৃতিক গ্যাসের ওপর ভিত্তি করে নয় বরং বিদেশ থেকে আমদানির ওপর ভিত্তি করে। সেই আমদানিকৃত পণ্যে মুনাফা করে ভারতের কাছে রপ্তানি করলে সমস্যা কোথায়? বরং ভারতের সঙ্গে আমাদের ব্যবসার মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের একটি নতুন দ্বার উন্মোচিত হলো।
ভারতে রপ্তানিকৃত পণ্যের তালিকায় আরও একটি পণ্য যুক্ত হলো। ওই অঞ্চলে আগে থেকেই বাংলদেশের নির্মাণসামগ্রী যেমন- রড, সিমেন্ট, ঢেউটিন, কসমেটিক্স, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি হয়ে থাকে। এমনকি ওই অঞ্চলের মার্কেট ধরার জন্য আমাদের দেশিও কোম্পানি প্রাণ আরএফএল গ্রুপ ত্রিপুরায় ফ্যাক্টরি পর্যন্ত করেছে।
এভাবে ভারতের সেভেন সিস্টার্স রাজ্যগুলোতে আরও নানা পণ্য রপ্তানি করা সম্ভব। বাংলাদেশের ব্যবসা বাণিজ্যের এক বিশাল সম্ভাবনাময় মার্কেট এটি। এই মার্কেটকে যতই কাজে লাগানো যাবে ততই আমরা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হব। এই লাভবান হওয়ার পদক্ষেপটি ষড়যন্ত্রকারীদের কিছুতেই পছন্দ হয় না। এলপিজি রপ্তানি ইস্যুটিকে কেন্দ্র করে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।
০৩.
ভারতকে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহারের সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত আগেই হয়েছে। এ সুযোগটি কীভাবে ব্যবহৃত হবে, তার জন্য এই স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) স্বাক্ষর প্রয়োজন ছিল। এই স্বাক্ষর নিয়েও ষড়যন্ত্রের বিষবাষ্প ছড়ানো হচ্ছে। এখানে বলে রাখা প্রয়োজন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বন্দরসমূহ বিভিন্ন দেশ তাদের ভৌগোলিক সুবিধামতো ভাড়া নিয়ে ব্যবহার করে থাকে। সেখানে বাংলাদেশের বন্দর ব্যবহার করতে পাশ্ববর্তী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের বাধা কোথায়? বরং এখানেও বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে। বন্দর ব্যবহারের বিনিময়ে ভারতের কাছ থেকে বাংলাদেশ অর্থ উপার্জন করবে। কুচক্রী মহলের এই লাভবান হওয়া কিংবা অর্থ উপার্জন করা পছন্দ হচ্ছে না। তাই দেশ গেল দেশ গেল করে ফাঁকা আওয়াজ তুলে পানি ঘোলা করার চেষ্টা চলছে।
০৪.
বাংলাদেশের উপকূলে ভারতের যে রাডার সিস্টেম বসাতে দুদেশের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে তার ধরন এবং ব্যবহার কী হবে তা যদিও এখনো স্পষ্ট নয় তারপরও দুদেশের নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, সমুদ্রপথে আসা বিভিন্ন ধরনের হুমকি মোকবেলায় এই রাডার ব্যবস্থা দুদেশের জন্যই কার্যকর হবে। তবে এই মনিটরিং ব্যবস্থা দুদেশের মধ্যে সমতার ভিত্তিতে হতে হবে। ঢাকা এবং দিল্লির মধ্যে এই সহযোগিতা চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে অনেকে অপপ্রচার চালাচ্ছে। কিন্তু বিষয়টি যে শুধু কেবল বাংলাদেশের সঙ্গেই ভারত করছে তা নয়। অতীতে ভারত মরিশাস, পূর্ব আফ্রিকার দেশ সেশেলস এবং মালদ্বীপে এ ধরনের রাডার ব্যবস্থা স্থাপন করেছে। মিয়ানমারে একই ধরনের ব্যবস্থা স্থাপনের আলোচনা চলছে। সমুদ্রপথে চীনের সামরিক গতিবিধি নজরে রাখার জন্য ভারত এই নেটওয়ার্ক গড়ে তুলছে বলে অনেকে মনে করেন। আবার আরেকটি পক্ষ এই ব্যাখ্যাকে ভয় বিক্রির চেষ্টা বলে আখ্যায়িত করেছেন।
অন্য চুক্তিগুলো খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয় বিধায় সেগুলো নিয়ে তেমন আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে না। উপরে উল্লেখিত চুক্তিগুলোতে আমাদের জন্য অনেক ইতিবাচক দিক আছে কিন্তু নিন্দুকরা এটিকে অর্জন হিসেবে দেখতে নারাজ। তারা বলার চেষ্টা করছে, শেখ হাসিনার এবারের ভারত সফর ব্যর্র্থ। কারণ, আমাদের আরও অনেক অমীমাংসিত বিষয় রয়ে গেছে যেগুলো সমাধানের পথে এগুনো সম্ভব হয়নি। কিন্তু বাস্তবে যে অগ্রগতি নেই তাও বলা যাবে না। যেমন রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ভারত সহায়তা করার আশ্বাস দিয়েছে আবার। তবে সম্প্রতি জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে বিষয়টি উঠেছিল। বাংলাদেশের সমর্থনে ভোট দিয়েছে ৩৭টি দেশ। চীন যথারীতি বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে। ভারত ভোটদানে বিরত থেকেছে। আগেই বলেছি ভারত আমাদের বড় ভাই। বড় ভাই সহায়তা না করলে কীবা করার আছে? তাই বলে তো আমরা মারামারি করতে পারব না। সুকৌশলে এগুতে হবে। সে পথেই আছেন শেখ হাসিনা।
আসামের নাগরিক তালিকা নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে নিজে আশ্বাস দিয়েছেন। এর আগে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও আশ্বস্ত করেছেন যে, এটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়, বাংলাদেশের উদ্বেগের কিছু নেই। দীর্ঘদিন থেকে ঝুলে থাকা তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তির সমাধান হচ্ছে হচ্ছে করেও যেন হচ্ছে না। ১৯৮৭ সালের পর থেকে তিস্তার পানি নিয়ে ভারতের সঙ্গে কোনো চুক্তি নেই বাংলাদেশের। একতরফাভাবে তিস্তার পানি প্রত্যাহার করে নিচ্ছে ভারত। ফলে বাংলাদেশের তিস্তা আববাহিকায় পানির সংকট চলছে।
২০১১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরে তিস্তার পানিচুক্তি সই হওয়ার কথা ছিল। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির তখন ঢাকা সফরের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত আসেননি। তাই তিস্তাচুক্তিও আর হয়নি।
এরপর ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তিস্তার ব্যাপারে খুব শক্ত আশ্বাস দিয়েছিলেন। সেই আশ্বাস আজও বাস্তবায়ন হয়নি। ২০১৫ সালে ঢাকা সফরকালে তিস্তার পানি দেওয়া যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন মমতা। এভাবেই চলছে বিষয়টি। তবে এ ব্যাপারেও অত্যন্ত কৌশলে এগুচ্ছেন শেখ হাসিনা। আশা করা যায়, একদিন এক্ষেত্রেও সফল হবেন তিনি। কারণ শেখ হাসিনা ভারতের সঙ্গে আমাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট যতগুলো বিষয় সমাধান করেছেন অতীতে আর কোনো সরকারের পক্ষেই তা করা সম্ভব হয়নি। বিশেষভাবে বলতে পারি সমুদ্রসীমা ও সিটমহলের কথা।
এত কথার পরও বলতে চাই, ভারতের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বের সম্পর্ক অসম। আমরা ছোটতাই পদে পদে আমাদের বঞ্চিত করার চেষ্টা করা হয়। অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের মানবিক দিক বিবেচনা করা হয় না বরং নিজেদের স্বার্থকেই তারা বড় করে দেখে। অনেক সময় চুক্তি করলেও সেই মোতাবেক কাজ হয় না। এ ব্যাপারে ফারাক্কার পানিবণ্টন চুক্তির কথা বলা যায়।
সাম্প্রতিক সময়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে রোহিঙ্গা প্রশ্নে ভোটদানে বিরত থাকাটাও আমাদের জন্য অস্বস্তির কারণ। অভিন্ন নদী, সীমান্ত, অসম ব্যবসা-বাণিজ্যসহ আমাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট নানা ইস্যু তারা সুকৌশলে দীর্ঘদিন ঝুলিয়ে রেখেছে। তাই বলে কী আমরা ভারতবিদ্বেষী হয়ে উঠব? না, সেটি মোটেই আমাদের জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে না। খাদ্য, চিকিৎসা, অবকাঠামো উন্নয়নসহ নানা বিষয়ে তাদের ওপর আমরা একদিকে নির্ভরশীল। অন্যদিকে সেভেন সিস্টার্সকে কেন্দ্র করে ভারত আমাদের ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল হয়ে উঠতে পারে।
যদি আমরা ধীরে ধীরে সেই পরিবেশটা তৈরি করতে পারি। কারণ এই সাত রাজ্যকে অখণ্ড ভারতের মধ্যে রাখতে হলে বাংলাদেশকে তাদের পাশে পাওয়া ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। বাংলাদেশের উপর নির্ভরতা বাড়িয়ে নিজেদের অধিকার আদায়ের যুদ্ধটিই শেখ হাসিনা করে যাচ্ছেন। আর এজন্য এ দেশের মানুষের অকুণ্ঠ সমর্থন প্রয়োজন। কারণ নিজের জন্য নয়; দেশের জন্যই তিনি এতসব কাজ করে যাচ্ছেন। সেখানে অন্ততপক্ষে সমর্থন দিয়ে আমরা তার সঙ্গী হব না? এ কেমন কথা!
পরিশেষে বলতে চাই, শেখ হাসিনার চেয়ে বড় দেশপ্রেমিক নেই। আমরা সবাই জানি এর পেছনে বহু কারণ রয়েছে। আর শেখ হাসিনার মতো গুণী রাজনীতিবিদও সারা পৃথিবীতে খানিকটা বিরল। সেখানে আপনি আমি নস্যি। ’৭৫-পরবর্তী বাংলাদেশের বেড়ে ওঠাটা হয়েছে আওয়ামী লীগ ও ভারতবিরোধী এক অপপ্রচারের স্বর্গরাজ্যে। আমাদের আর কত ভারত জুজুর ভয় দেখানো হবে? বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়িয়ে আমাদের ভাইয়ে ভাইয়ে আর কত রক্তের হোলিখেলা হবে? বন্ধ হোক এসব।
সাজ্জাদ কাদির : কলামিস্ট, টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব ও তথ্যচিত্র নির্মাতা
[email protected]