‘তোমরা যারা এসব করছো’ || শাহীন সিদ্দিকী
অনলাইন ডেস্ক
🕐 ৬:৩৩ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৩১, ২০২৩
এক.
ছেলে আর মেয়ে।
না, এখানেই শেষ নয়। আরো আছে। হ্যাঁ, আরো অনেক অ...নে...ক আছে...
সৃষ্টির পর থেকে মানব সভ্যতা আত্ম-পরিচয়ের এরকম ডেফিনেশানের সম্মুখীন আগে হয়নি। মানুষ তার ইনার ফিলিংস থেকে নির্ধারণ করবে সে আসলে কি। যে জেন্ডার নিয়ে সে জন্মেছে সেটা তার ফিলিংস’র সাথে না মিললে সে নিজেই চুজ করবে তার আইডেন্টিটি। জেন্ডার ইজ অ্যা মোর কমপ্লেক্স থিং!
• বাইনারি (পুরুষ বা মহিলা)
• নান-বাইনারি (কোনটাই না। মানে, মেইলও না, ফিমেইলও না। সামথিং এলস, ইট কুড বি আনলিমিটেড)
• ট্রান্স...(এই ট্রান্সের মধ্যে বহু জেন্ডার নিহিত। ট্র্যান্সজেন্ডার বা হিজড়া; ট্রান্সসেক্সুয়াল মানে বার্থ জেন্ডারকে যে চেঞ্জ করে ফেলেছে, ট্রান্সকোয়ার মানে সে জানেই না কোন জেন্ডারের মানুষ সে, ট্রান্সভেস্টাইট মানে সে মনে করে যেভাবে জন্মেছে তাঁর বাইরে কোন ভিন্ন জেন্ডারের মানুষ সে এবং সেভাবেই পোশাক-পরিচ্ছদ পড়ে, ইত্যাদি।)
• জেন্ডারফ্লুয়িড (স্পেসিফিক কোন জেন্ডারের ব্রাকেটে সে নিজেকে আইডেন্টিফাই করে না)
• জেন্ডার স্পেকট্রাম (যার মধ্যে রয়েছে বহু জেন্ডারের সমাহার)
• টু (টু স্পিরিট মানে এক আত্মা দুই দেহতে ভাগ হয়েছে অর্থাৎ গে এবং লেজবিয়ানে। টার্মটা আদিবাসীদের থেকে নেয়া)
• হারমাফ্রোডাইট (যার মধ্যে পুরুষ এবং মহিলা দুইই আছে)
• প্যানসেক্সুয়াল (তার ইনার ফিলিংস থেকে সাড়া দিয়ে একদিন সে ঘোষণা করে আমি অমুক অমুক অমুক জেন্ডারের প্রতি আসক্ত। সাবেক নিউইয়র্ক গভর্ণরের মেয়ে একদিন ঘোষণা দিল সে আর সোজা-সাপটা মেয়ে না, প্যানসেক্সুয়াল!)
• প্লাস (এইটা দিয়ে উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। দাজ্জাল আসার আগ পর্যন্ত এই ধারা চলতেই থাকবে!)
টমেটো, এভোকাডো, ব্রকোলি, কলিফ্লাওয়ার, স্পিনাচ ইত্যাদি দিয়ে কালারফুল ভেজিটেবলের যেমন একটা বাস্কেট বানানো হয়, তেমনি উপরিউক্ত আনলিমিটেড জেন্ডার দিয়েই এই মানবজাতি। জন্মসূত্রে এক বয় চাইল্ড যদি তার ইনার ফিলিংস থেকে উপরের কোন একটি আইডেন্টিটি বেছে নিতে চায়, সে তা পারবে। এটা দোষের না, কমপ্লিটলি নরমাল।
প্যারেন্টসের অনুমোদন?
সেটাও অবশোনাল! জেন্ডার ক্লিনিকে গিয়ে পিউবার্টি ব্লক করে সে তা করতে পারবে, ইত্যাদি। ক্যালিফোর্নিয়া ডিপার্টমেন্ট অব এডুকেশন এসব অনুমোদন করেছে ইনক্লুশোন, টলারেন্স, ইম্প্যাথি এসব সুন্দর সুন্দর শব্দমালার আড়ালে। টিচিং টলারেন্স নামে টিচারদেরকে গাইডও (ডাইভার্স চিল্ড্রেন্স বুকস ট্র্যান্স এন্ড নান-বাইনারি চিলড্রেনঃ ওয়েল্কামিং স্কুলস) সরবরাহ করেছে। জেন্ডার ইভোল্ভ ইজ সাইন্টিফিক, প্রগ্রেসিভ ইত্যাদি। প্রোনাউনও বের করেছে He/She-র পাশাপাশি Ze/Xe ( Hir/Zir, Hirs/Zirs, Hirself/Zirself)! অদ্ভুত!
দুই.
এদের মুখোশ উন্মোচন করছেন ব্রেন্ডা লেবস্যাক। Brenda Lebsack গুগল করলেই সব পেয়ে যাবেন। ২৫ বছরের বেশী সময় ধরে তিনি সেখানে টিচিং এ ছিলেন। বোর্ডেও ছিলেন চার বছর। অদ্ভুত এই সিস্টেমকে তিনি চ্যালেঞ্জ করছেন। ‘ইউ এস ফরেনসিক সাইন্টিস্ট’র দ্বারস্থ হয়েছেন। কথিত সাইন্টিফিকের ব্যাখা চেয়েছেন। ফরেনসিক সাইন্টিস্ট জানিয়েছে, তাদের হাতে এর সপক্ষে কোন দালিলিক প্রমাণ নাই। খ্রিস্টান ধর্মবিশ্বাসী মিস লেবস্যাক খ্রিস্টান, ইসলাম, ইহুদী, হিন্দুসহ সব ধর্মের স্কলারদের কাছেই যাচ্ছেন। লড়ছেন, জনমত গঠন করছেন।
এরা কারা? এদের কারা শক্তি যোগায়?
কেউই জানেনা। কেউ ঠিকমত উত্তর দেয় না। যারা সংখ্যার দিক থেকে শূন্য দশমিক জিরো জিরো জিরো জিরো এক পার্সেন্টও না, তাদের এই বিধ্বংসী শিক্ষা পদ্ধতি নিয়ে কেউ সরব হয় না। কারণ এর বিরুদ্ধে একটা কথা বললেই আপনি ব্যানড হয়ে যাবেন, এক লাইন লিখলেই আপনি একাডেমিক পদ হারাবেন, চাকরি যাবে, সেমিনারে আমন্ত্রণ বন্ধ হয়ে যাবে, আপনাকে সম্পূর্ণ একা করে ফেলা হবে। কেন? মুক্ত দুনিয়ায় তার কোন উত্তরও আপনি জানবেন না। বড় কোন শয়তান আড়াল থেকে এদের নিয়ন্ত্রণ করে।
এর ফলে কি হচ্ছে?
সাইকোলজিক্যালি প্যারালাইজড একটা জেনারেশন তৈরি হচ্ছে। সবকিছুতেই কনফিউজড! সিম্পল জিনিসকে কমপ্লেক্স, মানে যাচ্ছে তাই করে ফেলছে। নতুন এক ধর্ম “এগ্নোস্টিক” এর উদ্ভব হয়েছে। আগে যা ছিল নিতান্তই নগণ্য। কিন্তু এখন বিশ্বের প্রায় ৭ শতাংশ (৪০০-৫০০ মিলিয়ন) মানুষ এগ্নোস্টিক বা এথেইস্ট। আমেরিকার এক ইউটাতেই আত্মহত্যার হার এখন ২০% এরও বেশী।
আপনার সন্তান কি করছে তা আপনি জানেন না। কারণ আপনার বাসার কোন এক ক্লজেটের একজন ‘মুক্ত’ বাসিন্দা সে। ও তো নতুন জগতের ভিন্ন এক প্রজাতি। আপনি নিজে কখনো দেখেন না সে কি করছে, কিইবা শিখছে। কারণ আপনি, আমি যে খুবই ব্যস্ত! সুচতুরতার সাথে তাই থার্ড ওয়ার্ল্ড কান্ট্রির এক মুসলিম দেশ বাংলাদেশকে এসব গিলানোর টেস্ট কেইস হিসাবে নিয়েছে।
এই সন্তানগুলোকে হারাতে দেয়া যাবে না। অস্বাভাবিক, কাল্পনিক এই অভিনব শিক্ষা পদ্ধতির বিরুদ্ধে আপনাকে আমাকে জাগতে হবে। তোমরা ‘সাদামাটা’রা যারা এসব করছো, মনে রেখো, বেলুনের মতো কিছুদিন ফুলে উঠলেও, দ্রুত চুপসে যাবে। পৃথিবীতে তোমাদের সফলতা শুধুই ঘৃণা কুড়ানো!
লেখক: এন্টারপ্রেওনার, প্রকৌশলী, গ্রন্থকার। টরোন্টো, কানাডা থেকে