ঢাকা, মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর ২০২৪ | ২২ আশ্বিন ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বাংলা একাডেমি জেলা সাহিত্য মেলা প্রসঙ্গে

ইশকে ইলাহী
🕐 ৯:১৫ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২০, ২০২২

বাংলা একাডেমি জেলা সাহিত্য মেলা প্রসঙ্গে

যশোরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জেলা সাহিত্য মেলা। বাংলা একাডেমির তত্ত্বাবধানে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে আজ বুধবার ও বৃহস্পতিবার (২১ ও ২২ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত হবে এ মেলা।

অভিযোগ উঠেছে, এতে অংশগ্রহণের জন্য করতে হয়েছে ফরম পূরণ। অথচ, দেওয়া হয়নি কোনো বিজ্ঞপ্তি, করা হয়নি লেখা আহ্বান। ফলে জেলার অনেক কবি-সাহিত্যিকই এ বিষয়ে জানেন না কিছুই। এদিকে, স্থানীয় কমিটি নিজেরা নিজেদের পছন্দের লেখক-সাহিত্যিক নিয়েই করতে যাচ্ছেন এই জেলা সাহিত্যমেলা বলে রয়েছে অভিযোগ। ফলে অনেকের মধ্যেই ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তাদের দাবি, পরিকল্পিতভাবে মেলার আয়োজন হলে ফলপ্রসূ হতো।

জানা যায়, যশোর টাউনহল মাঠে দুই দিনব্যাপী এই মেলা আজ ২১ ও ২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে যশোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও আইসিটি মোনায়ার হোসেনকে আহ্বায়ক করে করা হয়েছে কমিটি। কমিটিতে আছেন বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রাবন্ধিক হোসেন উদ্দিন হোসেনও। অন্যান্যের মধ্যে আছেন ড. মোস্তাফিজুর রহমান, ড. সবুজ শামিম আহসান, ড. শাহানাজ পারভীন ও গোলাম মোস্তফা মুন্না।

তথ্য বলছে, মেলাতে অংশগ্রহণের জন্য এই জেলার কবি-সাহিত্যিকদের করতে হয়েছে ফরম পূরণ। তবে পূর্বে কোন বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি। এছাড়া যশোর জেলার ওপরে প্রবন্ধ পাঠ ও সংকলন প্রকাশের কথা থাকলেও করা হয়নি লেখা আহ্বান। ফলে এই সাহিত্য মেলা নিয়ে জেলার কবি-সাহিত্যিকদের মধ্যে একধরণে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

কবি পলিয়ার ওয়াহিদ বলেন, জেলা সাহিত্য মেলা নিঃসন্দেহে সরকারের ভালো উদ্যোগের একটি। তবে, বিভিন্ন জেলায় এ পর্যন্ত যে মেলাগুলো হয়েছে সেখানে তত্বাবধানের অভাব দেখা গেছে। ওই সব জেলার বিপুল কবি-সাহিত্যিক না জানতে পেরে অংশগ্রহণ করতে পারেনি। যশোরেও তেমনটিই হচ্ছে। এই যেমন আমি এখন আপনার মাধ্যমে জানলাম। জেলা প্রশাসন বা মেলা কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়নি।

কবি ও সাহিত্য সংগঠক খায়রুল কবির চঞ্চল বলেন, যশোরে সাহিত্য মেলার বিষয়ে কিছুই জানি না। এমন একটি উদ্যোগের জন্য সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানায়। সুন্দর এই উদ্যোগকে ফলপ্রসু করতে পরিকল্পিত চিন্তা ভাবনা রাখলে আরও ভালো হতো।

এক প্রশ্নে কবি আরশি গাইন বলেন, ‘যশোর জেলার কবি-সাহিত্যিদের লেখা নিয়ে সংকলনের বিষয়ে আপনি প্রশ্ন করলেন বলে জানলাম। আমি কয়েকদিন আগে মেলা সম্বন্ধে জেনেছি। সেটি কমিটির কারও কাছ থেকে না বা তারা জানাতে বলেছে বলে জেনেছি--সেরকমও না।’
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কবি ও লেখকের অভিযোগ, যশোর জেলা সাহিত্য মেলার স্থানীয় কমিটি নিজেরা নিজেদের পছন্দের লেখক-সাহিত্যিক নিয়ে করতে যাচ্ছে। সংকলনে লেখা তারাই লিখছে।

কবি ও অণুগল্পকার মামুন আজাদ বলেন, ‘কয়েকদিন আগে যশোরে বইমেলায় ছিলাম। সেখান থেকে আমার কয়েকজন বন্ধু কবির কাছ থেকে সাহিত্য মেলার বিষয়ে জানতে পারি। সংকলন বের হবে কি না জানি না।’

যশোর সাহিত্য মেলা কমিটির সদস্য হোসেন উদ্দিন হোসেন বলেন, ‘আমাকে আগে না জানিয়ে কমিটিতে নাম রাখা হয়েছে। পরে একদিন মিটিংয়ে ডেকে জানানো হয়; প্রবন্ধ পাঠ ও সংকলন বের করা হবে। সেখানে আগেই তিনজনের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। তারাই অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ পাঠ করবেন ও সংকলনও তারাই বের করছেন।’
জানা গেছে, সংকলনের জন্য তিনটি প্রবন্ধের একটি লিখেছেন কমিটির সদস্য ড. শাহানাজ পারভীন।

জানতে চাইলে কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘যশোর জেলা সাহিত্য ও সাংস্কৃতি, যশোর জেলা ছড়া ও কবিতা এবং যশোর জেলা সাহিত্য ও নাটক এই তিন বিষয়ে প্রবন্ধ পাঠ ও আলোচনা করা হবে। বদিউর রহমান, ইমদাদুর রহমান ও আমি নিজেই (ড. শাহানাজ পারভীন) প্রবন্ধ পাঠ করব। একই সাথে সংকলনের জন্য লেখা দিয়েছি।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কমিটির মিটিংয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে সংকলন প্রকাশের আহ্বান জানানো হয়। সেই প্রেক্ষিতে লেখা দেওয়া এই তিন জনের। তবে তিন জনের কার কার লেখা প্রকাশ হবে সেটা এখন বলা যাচ্ছে না।’

বাংলা একাডেমির জেলা সাহিত্য মেলার সম্বয়কারী সাইমন জাকারিয়া বলেন, বাংলা একাডেমি থেকে সাইদ হাফিজ এবং সৈয়দ ইমদাদুল হকের লেখা প্রবন্ধের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় কমিটি জানেন কার লেখা বা প্রবন্ধ পাঠ করা হবে।

তিনি আরও বলেন, মানসম্মত প্রবন্ধ বা লেখা না হলে বাংলা একাডেমিতে অন্তর্ভুক্ত হবে না।’

মেলার আহ্বায়ক যশোর জেলা অতিরিক্ত প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোনায়ার হোসেন বলেন, ‘জেলা সাহিত্য মেলা নিয়ে স্থানীয় একটি কমিটি তৈরি করা হয়েছে। সেই কমিটি সকল কাজ করছেন।’

 
Electronic Paper