বিএনপির অগ্নি-সন্ত্রাসের বিচার করতে হবে
আদম তমিজী হক
🕐 ৫:২৫ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ০৫, ২০২২
একটি গণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছে বিএনপি। গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাতে বিভিন্ন জেলায় গণসমাবেশ করছে দলটি। আপাতত শান্তিপূর্ণ সমাবেশ নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারও ভীষণ নমনীয়। বাধা দেওয়া হচ্ছে না বিএনপির তথাকথিত সমাবেশে। কিন্তু সাধারণের আতংক আসলে ১০ ডিসেম্বর নিয়ে।
মাসখানেক আগে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েছেন ১০ ডিসেম্বর থেকে দেশ চলবে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের কথায় দেশ চলবে। তিনি নেতাকর্মীদের সারাদেশ অচল করে দেয়ার কথা বলেছেন। কী মারাত্মক হুমকি! এই হুমকি বাস্তবায়নে বিএনপি যে নৈতিক কোনো পথে হাঁটবে না, সেটি নিশ্চিত। নৈতিকতা বিবর্জিত দলটি খুব বেশিদিন আগে নয় , ২০১৩-১৫ সালেই মেতেছিল আগুন সন্ত্রাসে। সেই সময়ে দলটি আওয়ামি লীগ সরকারকে হঠাতে ট্রেন, বাস , লঞ্চ , প্রাইভেট কার এমনকি এ্যাম্বুলেন্সেও আগুন দিয়েছে। তাদের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার আগুণে পুড়ে জীবন দিয়েছে বহু মানুষ। আগুনে পুড়ে পঙ্গু হয়েছে আরও বহুগুণ।
বিএনপির রাজনীতিতে ইতিবাচক কোনো কিছু খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তারা রাজনীতি করে ক্ষমতার জন্য। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে গ্রেনেড ছুঁড়ে বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টায় বাঁধেনি তাদের। শেখ হাসিনা বেঁচে গেলেও ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট প্রাণ হারিয়েছিলেন মহিলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভানেত্রী বেগম আইভি রহমানসহ ২২ জন নেতাকর্মী। এ ছাড়া সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়াকে ২০০৫ সালে হত্যা করা হয় গ্রেনেড হামলায়। এমন নৃশংস অনেক ঘটনা রয়েছে বিএনপির ইতিহাসে। এছাড়া দেশে জঙ্গিবাদের উত্থানে বিএনপির মদদের বিষয়টিও কারো অজানা নেই। সঙ্গে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতের সঙ্গে অশুভ আঁতাত তো আছেই।
বিএনপির ইতিহাস জানি বলেই আমানউল্লাহ আমানসহ মির্জা ফখরুল আর রিজভি আহমেদদের সাম্প্রতিক হুমকি আমাদের আশংকায় ফেলে দিচ্ছে। বিএনপি যাতে আন্দোলনের নামে ফের আগুন সন্ত্রাস কিংবা লাশ ফেলার রাজনীতিতে মেতে উঠতে না পারে, সেই জন্য সরকারকে কঠোর হতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২৮ অক্টোবর গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে বলেছেন, 'আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে বলেই, বিএনপি আজ আন্দোলন করতে পারছে। কিন্তু বিএনপির যারা খুনের সঙ্গে জড়িত, অগ্নিসন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত, তাদের ধরতে হবে। তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।'
আমরা বিশ্বাস করি, আওয়ামী লীগ সরকার কোন নেতিবাচক ঘটনা ঘটবার আগেই কঠোর হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে পূর্বের সব আগুন সন্ত্রাসে জড়িতদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনার নির্দেশ হবে। এছাড়া আন্দোলনের নামে হুমকিধামকিও অপরাধ। জনমনে যা আতংকে ছড়ায়। নাগরিক জীবনকে স্বস্তিতে রাখতে হুমকি-ধামকির রাজনীতি করা বিএনপি নেতাদেরও আইনের আওতায় আনা দরকার।
বিএনপি যে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পথে যাবে না এটি নিশিচত। কারণ তারা জানে, আন্দোলনের নামে পথে নামলে নিজেদের কিছু কর্মী আর ভাড়া করা সন্ত্রাসী ছাড়া কাউকে পাশে পাবে না । গত ১৩ বছরে পায়নি। তাই তারা আন্দোলনের নামে সন্ত্রাসকেই বেছে নেবে শেষপর্যন্ত।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৬ নভেম্বর বিএনপির অতীত আগুন-সন্ত্রাস নিয়ে কথা বলবেন। আমরা চাই , তিনি তাঁর বক্তব্যে পূর্বের সমস্ত সন্ত্রাসী কার্যক্রমের জন্য বিএনপিকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবেন। না হলে বিএনপি সুযোগ পাবে আরও একবার দেশকে অস্থিতিশীল করার। এটি হতে দেওয়া যাবে না।
লেখক: রাজনীতিবিদ ও সমাজকর্মী