শেখ হাসিনার নেতৃত্বগুণে সম্ভাব্য সংকট কাটবে
আদম তমিজী হক
🕐 ৮:৪২ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ০২, ২০২২
জাতিসংঘের খাদ্য নিরাপত্তা বিভাগের প্রধান ডেভিড বিসলি সাম্প্রতিক সময়ে বলেছেন যে, বর্তমান বিশ্বে খাদ্যপণ্যের মূল্য যে হারে বাড়ছে, তা অব্যাহত থাকলে আগামী ২০২৩ সালে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে খাদ্য সংকট শুরু হবে। ফলে শিগগিরই বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ শুরু হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অথচ বাংলাদেশের একশ্রেণির অপরাজনৈতিক পক্ষ, বৈশ্বিক সংকট কে না দেখে শেখ হাসিনার সমালোচনায় গিয়ে ফায়দা লুটতে চায়। ভুলে গেলে চলবে না যে, অতিমারি কোভিড- ১৯ মোকাবিলা করার পর বাংলাদেশকে রয়ে সয়ে এখন এগোতে হচ্ছে। উপরন্ত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সংকট তো আরও বেড়েছেই।
সূত্র এদিকে এও দাবি করছে যে, বিশ্বের প্রায় ৩৫ কোটি মানুষ দুর্ভিক্ষের মুখে। ৮২টি দেশের নাগরিকশ্রেণি আসন্ন এই নির্মম বাস্তবতাকে সঙ্গী করতে পারে। ২০২৩ সালে তাই সারাপৃথিবী জুড়ে অনেকেই অতি খারাপ থাকবেন বলে অনুমিত হয়।
জাতিসংঘ যেমন বলছে যে, অন্তত ৩৪ কোটি ৫০ লাখ চূড়ান্ত খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। সতর্কতা দিয়ে জাতিসংঘ থেকে বলা হচ্ছে, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে শিগগিরই এই সংখ্যার সঙ্গে আরও ৭০ কোটি মানুষ যুক্ত হবেন।
অন্যদিকে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে জানানো হয়, এই মুহূর্তে বিশ্বের অন্তত ৪৫টি দেশে দুর্ভিক্ষ পরিস্থতির সৃষ্টি হয়েছে। মহামারির আগ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে ক্ষুধার যে ঢেউ ছিল, মহামারির প্রভাবে তা সুনামিতে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে খাদ্যপণ্যের মূল্য যে হারে বাড়ছে, তা অব্যাহত থাকলে আগামী ২০২৩ সালে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে খাদ্য সংকট শুরু হবে। ফলে শিগগিরই বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ শুরু হওয়ার বিষয়টিকে স্ব স্ব রাষ্ট্রের সরকারকে আমলে নিতে হবে।
সূত্র বলছে, ইথিওপিয়া, নাইজেরিয়া, দক্ষিণ সুদান, ইয়েমেন, সোমালিয়া, আফগানিস্তানসহ এশিয়া ও আফ্রিকার বেশ কিছু দরিদ্র দেশে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় এরইমধ্যে মানবিক বিপর্যয় পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে।
সোমালিয়া আগ হতেই অর্থনৈতিক দিক দিয়ে খারাপ ছিল। এখন সেখানে ইতোমধ্যে বড় ধরণের দুর্ভিক্ষ শুরু হয়ে গেছে। অন্য দেশগুলোর অবস্থাও খুব খারাপ পর্যায়ে রয়েছে। সেসব দেশে লাখো মানুষ একবেলাও ঠিকমতো খেতে পারছে না।
বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী অতি সম্প্রতি বলেছেন, ২০২৩ সালে সারাবিশ্বের মানুষ ভোগান্তির মধ্যে পড়ে যাবে। তিনি বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আবাদী জমির ব্যবহার নিশ্চিতকরণে বলেছেন যে, কোনো জমি খালি রাখা যাবে না, আপনারা ফলনে মনোযোগী হন। বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তায় শেখ হাসিনা এখনই তার শ্রেষ্ঠটা দিচ্ছেন। প্রত্যেকটি সংকট মোকাবিলায় তিনি অপরাপর রাষ্ট্রপ্রধান থেকে এগিয়ে থাকেন। সে কারণেই তিনি একজন সফল রাষ্ট্রনায়কও বটে।
উন্নয়নের অভিযাত্রায় থেকে শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের টানা তিন মেয়াদের সরকার যখন গুছিয়ে নিয়েছিল, সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল- একটা পর্যায়ে অতিমারি কোভিড-১৯ এসে উন্নয়নের সড়কে গতিরোধকের ভুমিকায় অবতীর্ণ হয় যেন। দেশের মানুষগুলো বাঁচানোর পাশাপাশি তথা স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার পর ভ্যাকসিন কার্যক্রম পরিচালনা করেও শেখ হাসিনা আলাদা জাতের রাষ্ট্রনায়ক হিসাবে নিজের জাতকে চেনাতে সক্ষম হন। কিন্তু, বৈশ্বিক একটি আলোচিত অযাচিত যুদ্ধ সারাবিশ্বকে ঝামেলায় ফেলে দিয়েছে, এটি মেনে যারা রাজনীতি করতে চায় না, তাদেরকে রাজনৈতিক শক্তি বলা যাবে কী?
বাংলাদেশে স্বাধীনতার পর ১৯৭৪ সালে একদল লোক দুর্ভিক্ষের মধ্যে সুদের ব্যবসা চালিয়ে আজ পদক কুড়িয়ে বেড়ায়। আরেকটি পক্ষ মুক্তিযুদ্ধ কে স্বীকার না করে কথিত জাতীয়তাবাদী শক্তি হিসাবে ঘোলা পানিতে জল শিকার করতে চায়। শেখ হাসিনার নেতৃত্বগুণেই আসন্ন দুর্ভিক্ষের মত অনাকাঙ্ক্ষিত প্রেক্ষিত কে মোকাবিলা করবে বাংলাদেশ। এমন যুক্তির পেছনে দেশের সত্যিকারের বিদগ্ধজনেরা পাশে দাঁড়াবেন বলে মনে করার সুযোগ আছে।
লেখক: রাজনীতিক ও সমাজকর্মী