ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

অধ্যক্ষ নেই ১৭ মাস, প্রশাসনিক কাজে বিঘ্নিত

ঈশ্বরদী সরকারী কলেজ

শমিত জামান, ঈশ্বরদী (পাবনা)
🕐 ৩:৫৫ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৪, ২০২২

অধ্যক্ষ নেই ১৭ মাস, প্রশাসনিক কাজে বিঘ্নিত

অধ্যক্ষ ছাড়াই চলছে পাবনা জেলার ২য় শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ ঈশ্বরদী সরকারি কলেজ। নতুন অধ্যক্ষ পদায়ন না হওয়ায় ১৭ মাস ধরে উপাধ্যক্ষ কে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ করে চলছিল কলেজের প্রশাসনিক কাজ। কলেজের সর্বশেষ অধ্যক্ষ ছিলেন প্রফেসর আব্দুর রহিম। 

তিনি ২০২০ সালের ২১ জুলাই কলেজ থেকে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের নিয়ম অনুযায়ী বদলী হয়ে যান। পরবর্তীতে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের এক আদেশ জারির মাধ্যমে ঈশ্বরদী সরকারি কলেজে উপধ্যক্ষ প্রফেসর ড. জাকিরুল হক কে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বে নিয়োজিত করা হয়।

দীর্ঘ ১৭ মাস কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। তারপর গত বছরের ২১ ডিসেম্বর কলেজ থেকে তাকে চাকরি জীবনের সমাপ্তের বিদায় দেয়া হয়। পরে কলেজে খুঁটিনাটি সার্বিক দায়িত্ব পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হাফিজা খাতুনের উপর অর্পন করা হলেও অর্থনৈতিক ফান্ডের ক্ষমতা না থাকায় কলেজের একাডেমিক প্রসাশনিক কোন কাজ করা যাচ্ছে না বলে কলেজের সকল শিক্ষকরা জানান। এদিকে দীর্ঘ ১ মাস পার হলেও ঈশ্বরদী সরকারি কলেজে অধ্যক্ষের পদ খালি থাকলেও শিক্ষা মন্ত্রনালয় কর্তৃক কোন অধ্যক্ষ এখনো পদায়ন হয়নি বলে জানা যায়।

কলেজ সূত্রে জানা যায়, ৫৮ বছর ধরে এই অঞ্চলের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে ঈশ্বরদী সরকারি কলেজ। ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত কলেজটি প্রথমে উচ্চ মাধ্যমিক দিয়ে যাত্রা শুরু করে, পরে জাতীয়করণ করা হয় ১৯৮৩ সালে ১ জুলাই। পরবর্তীকালে কলেজে ডিগ্রি ও অনার্স কোর্স চালু হয়। বর্তমানে কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক, ডিগ্রি ও ১২ টি বিভাগে অনার্স সহ ১০ হাজার ছাত্র ছাত্রী রয়েছে। পাশাপাশি মাষ্টার্স কোর্স চালু করার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। কলেজে শিক্ষকের পদ ৫৮ টি। এর মধ্যে দীর্ঘদিন থেকে ১৬ টি পদই শূন্য রয়েছে। আর কর্মরত রয়েছেন ৪০ জন শিক্ষক। অধ্যক্ষ ও উপধ্যক্ষ পদ রয়েছে শূন্য। কলেজ সুত্রে আর ও জানা যায়, অধ্যক্ষ না থাকায় কলেজে ২৫ জন মাষ্টার রোলে বিভিন্ন বিভাগে দাপ্তরিক কাজে নিয়োজিত থাকা কর্মচারী। দীর্ঘদিন ধরে ১৬ টি শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় ১২ জন অতিথি শিক্ষক কে বেতন দিতে হিমশিম খাচ্ছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। কলেজের প্রসাশনিক কাজ সহ একাডেমিক শিক্ষা কার্যক্রম ও অনেক টা ব্যাহত হচ্ছে।

কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, অধ্যক্ষ স্যার না থাকায় সকল কাজের জন্যই সহযোগী অধ্যাপক হাফিজা ম্যাডামের কাছে যেতে হয়। তখন দেখা যায় ম্যাডাম কোন না কোন অফিশিয়াল কাজে ব্যস্ত আছেন। বিভাগের কাজের পাশাপাশি দুটি পদের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ম্যাডামের ওপর অধিক কাজের চাপ পড়ছে। ফলে অনেক কাজ দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন যাচ্ছে না।

সহযোগী অধ্যাপক হাফিজা খাতুন বলেন, অধ্যক্ষ স্যার না থাকায় আমরা বিভিন্ন সমস্যা সম্মুখীন হচ্ছি। অনেক সময় দারিদ্র শিক্ষার্থীরা যে সুযোগ গুলো পাওয়ার কথা সেগুলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই শিগগিরই নতুন অধ্যক্ষের পদায়ন দরকার।

কলেজের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক হাফিজা খাতুন আরো বলেন, আর্থিক ক্ষমতা না থাকায় প্রশাসনিক সহ যে কোন কাজ করতেই বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখিন হচ্ছি। কলেজের শীর্ষ পদটি শূন্য থাকায় কলেজের প্রশাসনিক কাজের সম্পন্ন হতে বিঘ্নিত হচ্ছে। তবে আমরা কলেজের সকল সিনিয়র শিক্ষকরা মিলে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি, আমাদের অসুবিধা গুলো আমরা জানাচ্ছি। আসা করি অতি শীঘ্রই এখানে অধ্যক্ষ পদায়ন করবে বলে আমি মনে করি।

 

 
Electronic Paper