সোনারগাঁয়ে শিক্ষকের উপর সন্ত্রাসী হামলা ও লুটপাটের অভিযোগ
সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
🕐 ৫:০৪ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৩, ২০২২
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার চরাঞ্চল নুনেরটেক এলাকায় শিক্ষকের উপর সন্ত্রাসী হামলা, বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। হামলার ঘটনায় শিক্ষক মরিয়ম আক্তারসহ ৫ জন গুরুত্বর আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষকের ভাই আহত মো: শরিফ বাদী হয়ে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগে সূত্র জানা যায়, উপজেলার বারদী ইউনিয়নের নুনেরটেক এলাকায় ‘মায়াদ্বীপ শিশু পাঠশালা’ আমার বোন শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পর থেকে আবুল হাশেম ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর সাথে বিরোধ চলে আসছে। এরই জের ধরে টেকপাড়া গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে আবুল হাশেমের নেতৃত্বে ২৫ থেকে ৩০ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গত শনিবার গভীর রাতে 'মায়াদ্বীপ শিশু পাঠশালা'র শিক্ষক মরিয়ম আক্তার পাখির বাড়িতে অতর্কিত হামলা চালিয়ে বাড়িঘর ভাংচুর করে নগদ ও স্বর্ণের চেইনসহ ২ লাখ ৩০ হাজার টাকার মালামাল লুট করে।
এ সময় সন্ত্রাসীদের দেশীয় অস্ত্র ও কিলগুষি এবং ক্ষুরের আঘাতে মরিয়ম আক্তার পাখি (২৪) তার বৃদ্ধ মা নাছিমা বেগম (৫০), তাঁর ভাই রাশেদ (২০), শরীফ (২২) ও পাখির দেড় বছরের কন্যা শিশু পারিশা মারাত্মকভাবে আহত হয়। তাদের আর্তচিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে এলে তাদের প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে সন্ত্রাসীরা চলে যায়। পরে আশপাশের লোকজন তাদের উদ্ধার করে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আহত শিক্ষক মরিয়ম আক্তার পাখি। তিনি জানান, 'মায়াদ্বীপ শিশু পাঠশালা'য় শিক্ষক হিসেবে যোগ দেওয়ার পর থেকে স্কুলটি বন্ধ করতে আবুল হাশেম প্রতিনিয়ত আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যদের নানাভাবে হুমকি, ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছে। গত রাতে আমার ও আমার পরিবারের উপর হামলা চালিয়েছে। তাদের হাত থেকে আমার দেড় বছরের কোলের শিশুটিও রক্ষা পায়নি।
সুবর্ণগ্রাম ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা কবি শাহেদ কায়েস। তিনি জানান, নুনেরটেকে বালুসন্ত্রাস, হুন্ডি ব্যবসা ও মাদকের সাথে জড়িত আবুল হাশেম ও বাহিনীর সব ধরনের ব্যবসার বাধা হয়ে দাঁড়ায় 'মায়াদ্বীপ শিশু পাঠশালা'। ২০০৭ সালে এ স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে নদীবেষ্টিত এ চরাঞ্চলে নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ড দেখতে পাই। এসবের প্রতিবাদ করায় আমি ৩ বার এ সন্ত্রাসী হামলার শিকার হই। আমার উপর ২০১৩ সালে মেরে ফেলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করলে হাশেম সহ ৭ জন নানা মেয়াদে কারাভোগ করে জামিনে বেরিয়ে আসে। স্কুলটি বন্ধ করে দিতে পারলে আমি আর মায়াদ্বীপে যেতে পারব না। তাই তদন্ত করে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি।
অভিযুক্ত আবুল হাশেম বলেন, ‘এ ঘটনার সাথে আমি জড়িত না। পাকির ভাই শরিফের সাথে অন্য একটি পক্ষের মেয়ের সাথে ঝামেলা হইছে। সেই ঘটনাকে অন্যদিকে মোড় দিতেই স্কুল উঠিয়ে দেওয়ার মিথ্যা অভিযোগ করেছে। গ্রামের সবাই স্কুলের পক্ষে।’
এ ব্যাপারে সোনারগাঁ থানার ওসি (তদন্ত) এসএম শফিকুল ইসলাম। তিনি খোলা কাগজকে জানান, ‘এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।’