ডা. মুরাদ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ছাত্রদলের নেতা ছিলেন: মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৬:০৮ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ০৬, ২০২১
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমান তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক ছিলেন। পরে তিনি ছাত্রলীগে যোগ দেন।
মির্জা ফখরুল তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানকে ‘ভূঁইফোড়’ ডাক্তার হিসেবেও দাবি করেন।
সোমবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে স্বৈরাচার পতন ও গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা ও মুক্তির দাবিতে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ তথ্য জানান তিনি।
তিনি বলেন, আমরা জানতে চাই যে, আপনি কী এমন একটি সরকার নিয়ে এখানে এসেছেন যে সরকার আমাদের দেশের সমস্ত কৃষ্টি, আমাদের দেশের যে সৌজন্যবোধ, আমাদের যে ঐতিহ্যগুলো আছে তাকে বিনষ্ট করে দেবে? রাজনীতিকে তো ধ্বংস করেছেনই।এখন ন্যুনতম মূল্যবোধগুলো আছে, আমাদের মা-বোনের প্রতি আমাদের সম্মান-শ্রদ্ধা সেটাও কী আপনি ধ্বংস করে দেবেন?
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে অত্যন্ত জঘন্য, নিকৃষ্ট কথাবার্তা বলছেন। কাকে নিয়ে করছে? একজন ভুঁইফোড় ডাক্তার ছিলো শুনেছি, সম্ভবত জামালপুরের সরিষাবাড়ীর। এটাও শুনেছি সে নাকি একসময় ছাত্রদল করতো। দুঃখের কথা, দুর্ভাগ্যের কথা। আগে সে ছাত্রদল করতো। সে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের প্রচার সম্পাদক ছিলো। পরবর্তীকালে সে ছাত্র লীগে জয়েন করেছে। ধিক্কার দেই আমি তাকে। সেইম।’
‘আমরা তীব্রভাবে শুধু প্রতিবাদ নয়, আমাদের ঘৃণা প্রকাশ করছি, ধিক্কার জানাচ্ছি সেই সমস্ত বক্তব্যের জন্যে।’
ফখরুল বলেন, এটা তাদের চরিত্র। এই যে বর্ণবাদী কথা, এই যে নারী বিদ্বেশী কথা। আমার বোনদের অনুরোধ করবো আপনাদের প্রতিবাদ জানানো উচিত। আজকে আমি ধন্যবাদ জানাই কয়েকজন নারী নেত্রীকে তারা আজকে প্রতিবাদ করেছেন।
‘একটা কথা আমাদের মনে রাখতে হবে, ১৯৭১ সালে আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছিলাম, নব্বইয়ের স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে গণঅভ্যত্থান ঘটিয়েছিলো আমাদের নেতারা এই কারণে যে, একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ, একটি সভ্য-স্বাধীন বাংলাদেশ নির্মান করবার জন্য। আজকে এই শেখ হাসিনার নেতৃত্বে, এই সরকারের নেতৃত্বে সেই দেশটি আজকে একটি অসভ্য, অশালীল, অমর্যাদাকর দেশের পরিণত হয়েছে।’
এই পর্যায়ে ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটের দ্বিতীয়তলায় যুব দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহবায়ক গোলাম মাওলা শাহিন দাঁড়িয়ে মহাসচিব মির্জা ফখরুলের বক্তব্যের দ্বিমত পোষন করে বলেন, ‘মুরাদ ছাত্রদল করে নাই।’
এসময়ে মহাসচিবের সঙ্গে বির্তকে জড়িয়ে পড়ে এই তরুন যুবদল নেতা।
মির্জা ফখরুল তাকে থামিয়ে বলেন, ‘ইউ ডোন্ট নো। তুমি বাজে কথা বলবে না। তুমি জানো না। আমি বলে বলছি।’
তারপরও শাহিন আবার মহাসচিবের সঙ্গে তর্কে শুরু করলে পুরো মিলনায়তনে কর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়। এই সময়ে মহাসচিব তাকে চুপ করতে বলে এবং নিচে নেমে মঞ্চে আসার জন্য বলেন। এ সময়ে মিলনায়তনে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের পক্ষে শ্লোগান দিতে থাকেন।
এই সময়ে মঞ্চে থাকা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ, দক্ষিণের আবদুস সালাম হাত উঠিয়ে তাকে চুপ করতে বলেন।
বিএনপি মহাসচিব এই পর্যায়ে সকলকে শান্ত হয়ে বসার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘দুর্ভাগ্য আমাদের, দুর্ভাগ্য আমাদের যে, এক সময়ে সে ছাত্রদল করেছেন, পরবর্তীতে সে ছাত্রলীগের নেতা হয়ে প্রেসিডেন্ট হয়েছে। এটা দুর্ভাগ্য আমাদের এই রকম একটা ছেলে ওই সময়ে ছাত্রদলে ছিলো। দিস দ্যা মোস্ট আনফোরচুনেট।’
স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘সরকারের অধঃপতন যখন হয় কিভাবে হয় ..। ফুটপাত থেকে ধরে এনে মন্ত্রী বানিয়েছে। বাংলাদেশের লোক ফুটপাতের মন্ত্রী দেখতে চায় না, বাংলাদেশের লোক চোর-বাটপার দেখতে চায় না, বাংলাদেশের ঘুষখোর লোক মন্ত্রী দেখতে চায় না, বাংলাদেশের লোক তাদের অশ্রাব, অকথ্য কথা-বার্তা শুনতে চায় না।’
ডাকসুর সাবেক ভিপি আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ফজলুল হক মিলনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় নব্বইয়ের সাবেক ছাত্র নেতার মধ্যে আসাদুজ্জামান রিপন, হাবিবুর রহমান হাবিব, খায়রুল কবির খোকন, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, নাজিম উদ্দিন আলম, জহির উদ্দিন স্বপন, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, সাইফুদ্দিন মনি, খন্দকার লুতফুর রহমান, আসাদুর রহমান খান প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।