একটি জরুরি ঘোষণা
মোহাম্মদ কামরুজ্জামান
🕐 ৮:৪৭ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ০৯, ২০২১
‘জরুরি উন্নয়ন কাজের জন্য কাল সকাল নয় ঘটিকা থেকে পাঁচ ঘটিকা পর্যন্ত...’ এত রাতে আবার কীসের এনাউন্স! জানালা দিয়ে বাইরে তাকালাম। মহল্লার দোকানগুলোর সামনে দিয়ে মাইক-বাঁধা রিকশাটা এগিয়ে আসছে। ‘...অত্র এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকিবে।’ কথা কার মুখ থেকে বেরুচ্ছে বুঝলাম না।
রিকশার সিটে কেউ বসা নেই। রিকশাঅলা ড্রাইভিং সিটে আরাম করে বসে ধীর তালে প্যাডেল ঘোরাচ্ছে। মুখ তারটাও নড়ছে না। গায়েবি আওয়াজ! আমি দৌড়ে গিয়ে মোবাইল সেটটা চার্জে বসালাম। দুই বাথরুমে ছোটাছুটি করে কলের নিচে বালতি রেখে ছরছর করে পানি ছেড়ে দিলাম। ডিপ ফ্রিজের ঢাকনা খুলে একবার চোখ বুলিয়ে নিলাম। ফ্রিজের ডালা বন্ধ করে তিন গ্লাস পানি খেয়ে শুয়ে পড়লাম। সকালে তাড়াতাড়ি উঠে নয়টার ভিতরে গোসল সেরে ফেলতে হবে। যা হয় আর কি। ঘুম থেকে উঠতেই দেরি হয়ে গেল। নয়টা বাজতে মাত্র ১১ মিনিট বাকি। দাঁত মাজলে গোসল করা হবে না। গোসল করতে গেলে টয়লেট সারা হবে না। সুতরাং তিনটা একসঙ্গে করতে লাগলাম। যে কোনো সময় বিদ্যুৎ চলে যেতে পারে, সঙ্গে পানিকেও নিয়ে যেতে পারে। কল ছেড়ে দেখলাম পানির গতি ঠিক আছে। সব সেরে উঠে বালতি বদনা মগ ভরে বেরিয়ে মোবাইল সেটটা হাতে নিয়ে দেখি চার্জ ১০০ শতাংশÑ মিসডকল চারটা, অপারেটরের প্রমোশনাল ম্যাসেজ আটটা- সময় ৯টা ১৬ মিনিট। ড্রয়িংরুমে টিউব লাইট জ¦লছে। মাথার উপরে ফ্যান ঘুরছে। কাপড়চোপড় পরে রেডি হতে হতে ৯টা ৩১। বিদ্যুৎ যায়নি।
সেদিন পুরোদিনে আর বিদ্যুৎ গেল না। রাতে ফিরে এসে বালতি কাত করে সব পানি ফেলে দিলাম। পুরান পানি ব্যবহার করে বিপদ বাড়াব নাকি? ট্রিমার থেকে পুটুস করে চার্জারের প্লাগ খুলে দিলাম। চুল কাটাতে এখনো ২১ দিন বাকি। এত আগে চার্জ দিয়ে রাখলে কি থাকবে? চার্জার লাইটগুলো প্লাগ থেকে খুলে ড্রয়িংরুমে ঝুলিয়ে রাখলাম। সত্যিই যদি বিদ্যুৎ যায় সহজে যেন পাই। ওভেনের ডালা খুলে খসখস করে ভিতরটা পরিষ্কার করলাম। সকালে তাড়াহুড়ো করে নাস্তা গরম করতে গিয়ে পুড়িয়ে ফেলে পালিয়েছিলাম। আসলে রেকর্ড থেকে মাইক বাজছিল। রিকশাঅলা মাইক নিয়ে মহল্লায় মহল্লায় ঘুরছিল। যখন যে মহল্লায় ঢুকছিল সেটাই ‘অত্র’ এলাকা হয়ে যাচ্ছিল। কে জানে সে কতগুলো এলাকায় ঘুরেছে!
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228