ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

উদ্যোক্তাদের নেগোসিয়েশন ক্ষমতা বাড়াতে হবে

জাফর আহমদ
🕐 ১০:১৭ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ৩১, ২০২১

উদ্যোক্তাদের নেগোসিয়েশন ক্ষমতা বাড়াতে হবে

দেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক। মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৫ ভাগ আসে এই খাত থেকে। একক খাত হিসেবেও এ শিল্পে সর্বোচ্চসংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে এ শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অর্থনীতির সব খাত। এতদিন এ খাতে তুলনামূলকভাবে ছোট্ট ছোট্ট কারখানা বন্ধ হয়েছে। এবার দেশের সবচেয়ে বড় ও বনেদি কারখানা ওপেক্স-সিনহা ও স্টাইল ক্রাফটসহ তিনটি ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়েছে; যে সব শিল্প কারখানা উদ্যোক্তাদের কাছে দৃষ্টান্তের। এ ধরনের কারখানা বন্ধ হওয়ার মধ্য দিয়ে তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য কোন নতুন বার্তা দিয়ে যাচ্ছে? কী ভাবছে এই শিল্পের অভিভাবক সংগঠন বিজিএমইএ, এ বিষয়ে খোলা কাগজের কথা হয় বিজিএমইএর সিনিয়র সহসভাপতি এস এম মান্নান (কচি)’র সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জাফর আহমদ-

 

*তৈরি পোশাক শিল্পে এতদিন তুলনামূলক ছোট্ট ছোট্ট কারখানা বন্ধের ঘটনা ঘটেছে। এখন ওপেক্স-সিনহা, স্টাইল ক্রাফট ও শ্যামলীর মতো কারখানা বন্ধের ঘটনা ঘটছে। বিষয়টি আপনারা কীভাবে দেখছেন?

সর্বশেষ পেনুইনের শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছে। এই কারখানার উদ্যোক্তা বেশ পুরাতন ব্যবসায়ী। তিনি বর্তমানে লন্ডনে আছেন। আরও যে দুটি প্রতিষ্ঠানের নাম বললেন এই দুটি প্রতিষ্ঠান দেশের পুরাতন ও প্রতিথযশা উদ্যোক্তার প্রতিষ্ঠান। বিশেষ করে আমাদের সিনহা সাহেব অত্যন্ত বিনয়ী, নম্র, ভদ্র এবং সফল একজন ব্যবসায়ী। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ সফলতার সঙ্গে ব্যবসা করছেন। ব্যবসা বাণিজ্যে সফলতা আছে, আবার ব্যর্থতাও আছে। একজন সফল ব্যবসায়ীও এক পর্যায়ে গিয়ে অসফল হতে পারেন। কর্মী ব্যবস্থাপনা, মার্কেটিংসহ ব্যবসা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যখন সমন্বয় করতে না পারেন তখন বিরূপ পরিস্থিতি তৈরি হয়। আমাদের সিনহা সাহেবের তাই হয়েছে।

পেনুইনের মালিক, স্টাইফ ক্রাফট বা ওপেক্সের মালিক যখন ব্যবসা করেছেন তখন মার্কেট অনেক ভাল ছিল, তখন প্রাইস অনেক ভালো ছিল। যত দিন যাচ্ছে পরিস্থিতি তত প্রতিকূল হচ্ছে। রানা প্লাজা দুর্ঘটনা ঘটার পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। নন কমপ্লায়েন্স কারখানাতে বায়াররা আর অর্ডার দেয় না। আবার তারা কথা দিয়ে কথাও রাখে না। রানা প্লাজা ধসের সময় ক্রেতারা বলেছিল, আপনারা কারখানা কমপ্লায়েন্স করুন আমরা প্রাইজ বাড়িয়ে দেব। আমরা কারখানাতে বড় ধরনের বিনিয়োগ করে কারখানা কমপ্লায়েন্স করেছি কিন্তু তারা প্রাইজ বাড়াইনি। বরং প্রতি বছর তৈরি পোশাকের দাম কমিয়েছে। এর ফলে একদিকে আমাদের অতিরিক্ত বিনিয়োগের কারণে ব্যাংকঋণের সুদ গুনতে হয়েছে। অন্যদিকে প্রাইজ কম দিয়েছে। আবার কয়েক বছর পর পরই শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করতে হয়েছে।

ক্রেতারা চায়না বা অন্যান্য দেশে বেশি প্রাইজ দিলেও আমাদের দেশে আসে কম দাম দেয়ার জন্য, সেই অ্যাটিচুড নিয়ে আসে। কিন্তু আমাদের কোয়ালিটিসহ আরও যে সব রিকোয়্যার আছে সেগুলো সবই ভালো। নীটে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ, নীটের ফেবরিকের প্রয়োজনের প্রায় পুরোটাই আমরা তৈরি করছি। কিন্তু ওভেনে আমরা ৩০ পার্সেন্টসও নিজেরা করতে পারছি না। সে সক্ষমতা আমাদের তৈরি হয়নি। ফেব্রিক চায়না থেকে আনতে হচ্ছে। ফলে আমরা তো চায়নার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে পারবো না। চায়না নিজেরা ফেব্রিক তৈরি করছে, সেই ফেব্রিক থেকে পোশাক তৈরি করে রপ্তানি করছে। তারা একদিকে কম দামে তৈরি করছে, অন্যদিকে কম সময়ের মধ্যে পোশাক রপ্তানি করছে।

এই মহামারী করোনা আমাদের আর বেশি সমস্যায় ফেলে দিয়েছে। সরকার যদি শ্রমিকদের বেতন দেওয়ার জন্য সফট লোন না দিতো তাহলে আমাদের দাঁড়ানো সম্ভব ছিল না। অধিকাংশ ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে যেত। অনেক ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে গেছেও।
রানা প্লাজার ধসের পর কমপ্লায়েন্সে আমাদের ৩০ ভাগ খরচ বেড়েছে। সুতার দাম বেড়েছে। এক বছর আগে যে সুতার মূল্য ছিল ২.৫ ডলার, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪.৫ ডলার। কিন্তু সেভাবে পোশাকের দাম বাড়েনি, বরং আগের চেয়ে কমেছে। সেই সাথে গত দুই বছরে করোনা আমাদের যে সমস্যার মধ্যে ফেলে দিয়েছে, এ অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়ানো আমাদের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব অবস্থা যারা সমন্বয় করতে পেরে তারা টিকে আছে। যারা সামাল দিতে পারেনি তারা সংকটে পড়েছে।

* এ অবস্থা ধেতে উত্তরণের কোন পথই খোলা নেই?

এ অবস্থা থেকে উত্তরণে আজকে বায়ারদের সঙ্গে নেগোসিয়েশন করার সময় এসেছে। যেসব অর্ডার আসছে সেগুলো নেগোসিয়েট করতে হবে। এমনভাবে নেগোসিয়েশন করতে হবে যাতে শ্রমিকদের বেতন দিয়ে আমাদেরও কিছু টাকা লাভ থাকে এবং আমাদের ব্যাংকের ঋণ শোধ করতে পারি। কিছু সুবিধাবাদী ক্রেতা আছে, করোনা কালে আমরা ঝুঁকি নিয়ে উৎপাদন করেছি। এটা তারা জানার পরও কখনো কেনসেল করেছে, কখনো ডিসকাউন্ট চেয়েছে, এ রকম নানা ধরনের অজুহাত খুঁজেছে। কিন্তু আমরা কোয়ান্টিটি, কোয়ালিটি সবই ঠিকমতো দিয়েছি। আমরা চেয়েছি শুধু সঠিক দাম। উল্টো তারা নানাভাবে সমস্যায় ফেলেছে। তারা করোনার অজুহাতে আমাদের বিপদে ফেলে সুবিধা নিয়েছে। এখন নতুন পুরাতন অনেক বায়ার আসছে, কার্যাদেশ দিচ্ছে। আমাদের দেশ থেকে তৈরি পোশাক কিনছে। আমাদের এখন সময় এসেছে, নেগোসিয়েশনে সক্ষমতা দেখানোর। বিজিএমইএ-এর পক্ষ থেকে এটা আমাদের পরামর্শ।

* এই যে বড় তিনটি শিল্প গ্রুপ সংকটে। প্রতিষ্ঠান তিনটির প্রায় বিশ হাজার শ্রমিক এখন পথে। উদ্যোক্তারা অনেকটা দিশাহারা। এই সংকট থেকে আমরা কী শিক্ষা নেব, এখানে ব্যবস্থাপনার উত্তরাধিকার তৈরিতে কোনো ঘাটতির কারণে এমন হচ্ছে কি না?

এক কথায় বলার সুযোগ নেই। উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে আমরা বলতে পারি অনেকে ভালো করছে। এখন যারা বড়, গ্রিন ও ভালো কারখানা করছে তারা সবাই তরুণ এবং দ্বিতীয় প্রজন্মের। তারা মার্কেটিং খুব ভালো করে বুঝছে। তারা সেভাবেই করছে, সেভাবে হ্যান্ডেলিং করার চেষ্টা করছে। কিন্তু আমাদের যারা পুরাতন যারা ব্যবসাটা করে আসছে, এই যে যে সব ফ্যাক্টরি বন্ধ হচ্ছে তারা কিন্তু তাদের শ্রমিকের প্রতি যে মনোযোগ দেওয়ার কথা ছিল সেভাবে দিচ্ছে না। এখন নতুন করে যে সমস্যা হচ্ছে শ্যামলীসহ একই গ্রুপের আরও একটি কারখানার। এ কারখানার মালিক লন্ডনে আছে। তিনি মার্কেটিং নিজে করেন, ভালো বোঝেন। এই যে সমস্যা হচ্ছে তার শ্রমিকের সামনে গিয়ে মালিক যদি গিয়ে দাঁড়ান সমস্যার অর্ধেক সমাধান হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে তার স্টাফ দিয়ে কতটা সম্ভব তা আমরা সবাই জানি। স্টাইল ক্রাফট এবং পেনুইন-দুইটি কারখানা সম্পর্কে আমি সেটাই বলব, সেটা হলো হলো তাদের ব্যবসার দুর্বলতা।

আজকে অনেকে সফলতার সাথে ব্যবসা করছে। অনেকেই উত্তরাধিকার তৈরিতে সমস্যার কারণে সংকটে পড়েছে। আমি বৃদ্ধ হয়ে গেলাম, ব্যবসা পরিচালনা ক্ষেত্রে ততটা মনোযোগ দিতে পারলাম না, আমরা সন্তান নেই বা আমার সন্তানরা আছে তারা যোগ্য না অথবা ব্যবসা বোঝে না। তাদের জোর করে যদি চাপিয়ে দেই সে সফল হবে না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে কিন্তু সে ধরনের সমস্যা আছে। স্টাইল ক্রাফট দেখেছি-এত সুন্দর ফ্যাক্টরি, এত সুন্দর পরিবেশ। সংকট উত্তরণে বৈঠকে তাদের পক্ষে যারা আসছে তারা স্টাফ, ফ্যাক্টরির মালিক সামনে নেই। সংকটের এটা একটি কারণ বলে আমি মনে করি। তবে যে সব ফ্যাক্টরি বন্ধ হচ্ছে এর পেছনে শুধু একটি নয়, বিভিন্ন ইস্যু আছে।

* এই যে বলছে নীটে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ গড়ে ওঠার কারণে মহামারীর মধ্যেও ভালো করছে। বৈশি^ক সংকট সহ নতুন নতুন সমস্যার মধ্যেও ভালোভাবে মোকাবিলা করতে পারছে। তাহলে ওভেনের সামনে-

আমি বলছি, রাতারাতি কোনো কিছুই পরিবর্তন সম্ভব নয়। আমরা এক সময় ঘরের মধ্যে ফ্যাক্টরি করেছি। এখন আমাদের ফ্যাক্টরির দিকে তাকিয়ে দেখেন আমরা কত বিশাল বিশাল কমপ্লায়েন্স ফ্যাক্টরি করেছি। নীটেও কিন্তু আমাদের ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ কারখানা ছিল না, আপনি যেটা বলছেন। এখন কিন্তু আল্লাহর রহমতে আমরা প্রায়ই স্বয়ংসম্পূর্ণ। ওয়েভেনেও আজ আমাদের অনেক ফ্যাক্টরি গড়ে উঠছে। ধীরে ধীরে গড়ে উঠবে, হঠাৎ করে কোনো কিছু সম্ভব নয়।

আমরা অনুন্নতদেশ ছিলাম, ধাপে ধাপে আমরা কিন্তু উন্নয়নশীল দেশে চলে আসছি। আমাদের ব্যবসা বাণিজ্য বলেন, আমাদের সব দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। এক সময় ভারতীয় গরু না হলে আমাদের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটতো না। সেই গরুতে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ। খাদ্য ঘাটতি ছিল, আগে অল্প অল্প রেমিট্যান্স আসত, এখন অনেক রেমিট্যান্স বেড়েছে। তৈরি পোশাক রপ্তানিতে আমরা উত্তর-উত্তর সাফল্য অর্জন করছি, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছি। খাদ্য আমদানি করতে আর বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করতে হয় না। আগে যা কিছু বৈদেশিক অর্জিত হতো তা খাদ্য আমদানি করতেই শেষ হয়ে যেতো। যদি দেশে খাদ্য উৎপাদন না হতো, রেমিট্যান্স না বাড়তো, রপ্তানির উন্নয়নের যে ধারা সূচিত হয়েছে যে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে তা কিন্তু হতো না। দেশ এগিয়ে আসছে, আমাদের শিল্পও সমৃদ্ধ হচ্ছে। ওভেনের ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজে ঘাটতি আছে সেটাও আস্তে আস্তে হয়ে যাবে, টেক্সটাইলও এগিয়ে যাবে।

এজন্য সরকারের নীতি সহায়তা বাড়াতে হবে। টেক্সটাইলের ক্ষেত্রে অন্যান্য দেশগুলোতে যে ধরণের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয় সেগুলো নিশ্চিত করতে। একজন ব্যবসায়ীর যেমন সফলতা আছে, আবার ব্যর্থতাও আছে। সেটা উত্তরাধিকার বলেন, দক্ষ জনবল তৈরি করার ক্ষেত্রে বলেন, ব্যাংকিং সমস্যা বলেন-ঘাটতি থাকতেই পারে। যে সব দেশ শিল্পে ভালো করেছে একজন উদ্যোক্তা যখন দেউলিয়া হয়ে যায় তখন কিন্তু সরকার সাপোর্ট দেয়। তার এক হাজার শ্রমিক আছে, তার সম্পত্তি আছে, সে চালাতে পারবে কি না-এমন পরিস্থিতিতে সরকার প্রতিষ্ঠানটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। এভাবে ওই প্রতিষ্ঠানটিকে সাপোর্ট করে। যাতে ওই শিল্পের শ্রমিকরা বেকার না হয়, দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।

আমাদের দেশে এখন পর্যন্ত এই নীতি নেই, এই সাপোর্টটাও নেই। আমরা তা পাচ্ছি না। আরও একটি বিষয় একটি প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে, ঋণ খেলাপি হয়ে যায়, তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। এই মামলার কারণে তাকে জেলে যেতে হচ্ছে। পালিয়ে থাকতে হচ্ছে। তার দায় সন্তানদেরও বহন করতে হচ্ছে। এ চিত্র আমাদের হতাশ করে। তাই আমি মনে করি আমাদের এজন্য এক্সিট পলিসি করতে হবে। যারা ব্যর্থ হচ্ছে এ জন্য যেন তাকে যাতে জেলে যেতে না হয়, আবার যাতে ঘুরে দাঁড়াতে পারে, ঠিকমতো এক্সিট পায়-এই এক্সিট পলিসি সরকারকে ঠিক করে দিতে হবে। আমরা ইতোমধ্যে অর্থ সচিবের সঙ্গে বৈঠক করেছি, বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক করেছি। সংশ্লিষ্ট সবার কাছে আমরা এ সহযোগিতা চাই।

* ওপেক্স-সিনহা গ্রুপের যে ঘটনা ঘটেছে, এখানেও কী উত্তরাধিকার সমস্যা বা এ রকম সমস্যা দেখছেন?

উনার সম্পর্কে আমি বলতে চাইছি না। উনি একজন সম্মানী মানুষ। উনি বিশাল ফ্যাক্টরি গড়ে তুলেছেন। উনি সব ফ্যাক্টরি বন্ধ করেননি। আমরা দেখেছি মালিকের কিছু কিছু সমস্যায় পড়েন। আমাদের দেশের কিছু শ্রমিক নেতা আছেন, শ্রমিকের যারা নেতৃবৃন্দ আছেন তারাও কিন্তু তাদের সুশিক্ষিত না।

যারা ট্রেড ইউনিয়ন করছে তারা যখন, তখন বিনা কারণে বা বেতন দিতে সাত দিন দেরি হলেই রাস্তায় নেমে যান, ভাঙচুর করে। ট্রেড ইউনিয়নের এটা কোনো নিয়ম নয়, শ্রম আইনেও নেই। ট্রেড ইউনিয়ন হচ্ছে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য কিন্তু উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাদের প্রতিযোগি দেশগুলোর স্বার্থ রক্ষার জন্য কিছু শ্রমিক নেতা আছে যারা তাদের পারপাস সার্ভ করে, এই খাতকে অশান্ত করার পাঁয়তারা করে। সকলে না, দুয়েকজন শ্রমিক নামধারী নেতা তারা ট্রেড ইউনিয়নের নামে অপচর্চা করে।

তারা কারণে, অকারণে ফ্যাক্টরি ভাঙচুর করে। ট্রেড ইউনিয়ন আছে, শ্রম আইন অনুযায়ী, বিধান অনুযায়ী নোটিস দিতে পারে। এ ধরনের নিয়মান্ত্রিক শান্তিপূর্ণ কার্যক্রম করতে পারে। কিন্তু তারা কথায় কথায় ভাঙচুর, জ্বালাও পোড়াও মারধর, এটা তারা করতে পারে না। এ ধরনের কাজ করে সুশিক্ষার অভাব, সচেতনতার অভাবে। কারখানায় সংকটের এটাও একটি কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এতে কোনো কোনো উদ্যোক্তা বিরক্ত হয়ে যায়, বীতশ্রদ্ধ হয়ে যায়। বার বার এভাবে ভাঙচুর, বার বার ব্ল্যাকমেইল করাও কোনো ফ্যাক্টরির সংকটের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বিগত দিন আমাদের এ অভিজ্ঞতা দিয়েছে।

 
Electronic Paper