ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

সম্ভাবনাময় বাজারে পিছিয়ে বাংলাদেশ

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক
🕐 ৪:০৪ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৩, ২০২১

সম্ভাবনাময় বাজারে পিছিয়ে বাংলাদেশ

বিশ্বব্যাপী টেকনিক্যাল টেক্সটাইল বাজারের আকার এখন প্রায় ১৮০ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু বাংলাদেশ এ বাজারে ঢুকতে পারছে না। বাজারের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতনতা, প্রযুক্তিগত দক্ষতা, উচ্চ-কর্মক্ষম কাঁচামাল, কমপ্লায়েন্স ও সার্টিফিকেশন এবং প্রয়োজনীয় মূলধনের অভাবে এ সম্ভাবনাময় বাজারে প্রবেশ করতে পারছে না বাংলাদেশ।

‘ফিজিবিলিটি স্টাডি অন স্কেলিং আপ দ্য প্রোডাকশন অব টেকনিক্যাল টেক্সটাইল (টিটি) ইনক্লুডিং পার্সোনাল প্রোটেক্টিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক গবেষণায় উঠে এসেছে এসব তথ্য। গতকাল মঙ্গলবার পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সঙ্গে যৌথভাবে গবেষণাটি প্রকাশ করে জার্মানভিত্তিক এই সংস্থা।

গবেষণায় বলা হয়, বাংলাদেশ এখনো টেকনিক্যাল টেক্সটাইলের প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এ পণ্যের বড় ক্রেতা ইউরোপ ও আমেরিকার বাজার ধরার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের। গবেষণাটি পরিচালনা করেছে জার্মানভিত্তিক সংস্থা ‘গিজ’ (ডয়েচে গেজেলেশাফ্ট ফুয়ের ইন্টারন্যাশিওনালে সুজামেনারবাইট- জিআইজেড)। টেকনিক্যাল টেক্সটাইলে সাধারণত নান্দনিক উদ্দেশ্যে পণ্য তৈরি করা হয় না। এখানে কার্যক্ষমতাই হলো পণ্যের প্রাথমিক মানদ-। বর্তমানে প্রযুক্তিগত বা টেকনিক্যাল টেক্সটাইল উপকরণগুলো ফিল্টার পোশাক, আসবাবপত্র, স্বাস্থ্যবিধি ও চিকিৎসা এবং নির্মাণ সামগ্রীতে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে। এমনকি মাস্ক এবং পিপিইও টেকনিক্যাল টেক্সটাইলের অন্তর্ভুক্ত।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের অধিকাংশ পোশাক প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের আকারই মাঝারি ধরনের। এমনকি টিটি/পিপিই পণ্যের বড় পোশাক গোষ্ঠীগুলো আন্তর্জাতিক ক্রয় সংস্থাগুলোর কাছে পরিচিত নয়। এছাড়া মেডিকেল পিপিই পণ্যের সোর্সিং সাপ্লাই চ্যানেল তৈরি পোশাকের তুলনায় অনেক বেশি জটিল। তাই ইইউ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানোর জন্য পণ্যের কার্যক্ষমতা, পরীক্ষা এবং সনদ সংক্রান্ত প্রয়োাজনীয় বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া প্রয়োজন।’

ধারণা করা হচ্ছে, টেকনিক্যাল টেক্সটাইল বাজার ২০২৫ সালের মধ্যে ২২৪.৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে, যেখানে বার্ষিক গড় বৃদ্ধির হার হবে ৪ দশমিক ২ শতাংশ। আবার বিশ্বব্যাপী পিপিই-এর বাজার ২০২৫ সালের মধ্যে ৯৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলেও অনুমান করা হচ্ছে।

এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ ২০২০-২০২১ অর্থবছরে বাংলাদেশ বিশ্ববাজারে ৬১৮ মিলিয়ন ডলারের মাস্কসহ পিপিই রপ্তানি করেছে, যা আগের বছরের চেয়ে ২৩ শতাংশ বেশি। এর বাইরে অন্যান্য টেকনিক্যাল টেক্সটাইল পণ্য কী পরিমাণ রপ্তানি হয়েছে, তার সুনির্দিষ্ট হিসাব পাওয়া যায়নি।

পোশাক শিল্প খাতের উদ্যোক্তারা বলছেন, বিশ্ববাজারে যে পরিমাণ চাহিদা রয়েছে, বাংলাদেশ এখনো তার ০.৫ শতাংশও রপ্তানি করতে পারছে না। অথচ তৈরি পোশাকের বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের অবদান ৬ শতাংশেরও বেশি। পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ বলছে, তাদের সদস্যভুক্ত ১৫৫টি প্রতিষ্ঠান মাস্ক ও পিপিই রপ্তানি করে থাকে। এর মধ্যে বিশ্বের ১৯টি দেশে মাস্ক ও ৬টি দেশে পিপিই রপ্তানি করা হচ্ছে।

কাঁচামাল সংগ্রহ এবং পণ্যের গুণমান পরীক্ষা বা সনদের মান সংক্রান্ত জটিলতাকে গবেষণায় বাংলাদেশের টেকনিক্যাল টেক্সটাইল রপ্তানিতে পিছিয়ে থাকার অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

 

 
Electronic Paper