লুঙ্গি ফ্যাশন
মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহ
🕐 ২:৪৬ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২১
ইদানীং ফেসবুক ব্যবহার করে আগের মতো মজা পাই না। মজা ছিল আমাদের সময়! প্রোফাইল লক করার কোনো অপশনই ছিল না তখন। যখন তখন যার তার প্রোফাইলে ঢুকে পড়া যেত, ঘুরে আসা যেত টাইমলাইন থেকে। কিন্তু প্রোফাইল লক অপশন চালু হওয়ার পর থেকেই দেখি প্রায় সব সুন্দরীর আইডি লক করা।
একটু যে মন-প্রাণ ভরে দেখব সে সুযোগটাও পাওয়া যায় না। তবে নতুন নতুন ফিচার অ্যাড হওয়ায় এখনো ফেসবুকে সময় খারাপ কাটে না। বিশেষ করে সুন্দরীদের লাইভগুলো, তারা কত কিছু যে দেখায়! না মানে বলছিলাম, জামা-কাপড়, কসমেটিক থেকে শুরু করে কত কিছু যে বিক্রি করে...! তো এরকম একটা লাইভ দেখছিলাম, খুব উত্তেজনাকর মুহূর্তে আছি। লাইভের আপুটা অনেকক্ষণ থেকে দেখাবে দেখাবে বলতেছে... কিন্তু কিছু দেখাচ্ছেও না, কী দেখাবে সেটাও বলছে না...! কমেন্ট করতে গিয়েও করলাম না। একবার এক আপুর লাইভে মজা করে কমেন্ট করেছিলাম, ‘আমি কিন্তু সব দেখে ফেলছি!’ এরপরই ব্লক খেলাম। তো লাইভের মধ্যে পুরোপুরি মজে আছি, এমন সময় ইরা আপু হাজির। আমাকে ডিস্টার্ব করাটাই যেন ইদানীং তার কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসেই মোবাইল ফোনটা নিয়ে বলল, এসব হাবিজাবি কী দেখিস? তুই নাকি ইদানীং কী সব কাব্য-টাব্য লিখছিস?
বললাম, ‘হুম। লিখি তো। তো কী হয়েছে?’
আপু বোঝানোর ভঙ্গিতে বলল, ‘শোন, এসব কাব্য-টাব্য মানুষ এখন আর পড়ে না। মেয়েরা তো মোটেই না। এই উল্টা-পাল্টা কাব্য পড়ে কোনো মেয়েই প্রেমে পড়বে না, মেয়েরা এখন গাড়ি, বাড়ি, টাকা-পয়সা এসব দেখে প্রেমে পড়ে! তার চেয়ে বেকার বসে না থেকে তুই বরং আমার সঙ্গেই কাজে যোগ দে।’
জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললাম, ‘কী কাজ?’
‘এই যে আমি ফেসবুকে যখন লাইভ করি, তখন আমাকে হেল্প করবি, কাপড়চোপড় এগিয়ে দিবি, ঠিকঠাক করে রাখবি।’
‘এতে আমার লাভ কী?’
‘তোর হাতখরচ দেব আর তোকেও মাঝে মাঝে আমার লাইভে দেখাব। আমার কিন্তু কয়েক লাখ ফলোয়ার যার মধ্যে অধিকাংশই মেয়ে।’
ভেবেচিন্তে ইরা আপুর প্রস্তাবে রাজি হয়ে গেলাম। যতটুকু না হাতখরচের লোভে, তার চেয়ে মেয়ে ফলোয়ারের কথা শুনে। শর্ত হলো আমাকেও লাইভে দেখাতে হবে। আমার সম্মতি পেয়ে ইরা আপু বলল, ‘চল, তাহলে কিছু স্যাম্পল নিয়ে আসি। আজ লাইভ আছে।’
আমার সম্মতি পেয়ে ইরা আপু প্রস্তুত হতে গেল। ১০ মিনিটের কথা বলে গেলেও আধা ঘণ্টা হয়ে গেছে। ইরা আপুর খবরই নাই। আমার সময় অবশ্য খারাপ কাটেনি, এ সুযোগ আরও দশ-বারজনের প্রোফাইল ও পেজ থেকে ঢুঁ মেরে এলাম।
ইরা আপু আসতেই আমার মাথায় দুষ্টুমি খেলে গেল। অবাক হওয়ার ভঙ্গিতে বললাম, ‘তুমি মনে হয় ভুলে পেটিকোট পরে চলে এসেছ?’
আপু হেসে বলল, ‘আরে না, একে প্লাজো বলে।’
‘ও। পেটিকোটকে মাঝখানে কেটে দু’পাশে সেলাই করে দিলে প্লাজো হয়ে যায়! তাহলে আমার লুঙ্গিটাকেও প্লাজো বানিয়ে দিও!’
সাধনপুর (মোকামীপাড়া), বাঁশখালী, চট্টগ্রাম
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228