‘আপাতত বাংলাদেশে আঘাত হানছে না তিতলি’
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ২:২৩ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১১, ২০১৮
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেছেন, ‘বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত হারিকেনের তীব্রতাসম্পন্ন ঘূর্ণিঝড় তিতলি উত্তর, উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে বৃহস্পতিবার ভোরে ভারতের উড়িষ্যা ও অন্ধ্র উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করেছে। আপাতত এবার বাংলাদেশে তিতলি আঘাত হানছে না। এরপরও যদি আঘাত হেনে বসে, সেক্ষেত্রে আমরা বেশ কিছু প্রস্তুতি রেখেছি। ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’র কারণে উপকূলীয় ১৯ জেলার সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।’
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’ উপলক্ষে সার্বিক পরিস্থিতি ও প্রস্তুতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
মন্ত্রী বলেন, সকালে ঘূর্ণিঝড়টি ভারতে আঘাত হেনেছে। কিন্তু আমাদের এখানে আঘাত হানার আশঙ্কা ছিল। এরপরও যদি আঘাত হেনে বসে, সেক্ষেত্রে আমরা বেশ কিছু প্রস্তুতি রেখেছি। আমরা সকল কর্মকর্তাদের সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করেছি। দুর্যোগপ্রবণ ১৯টি জেলায় প্রতিদিন সংশ্লিষ্টদের নিয়ে মিটিং হচ্ছে। জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ১৯ জেলার রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মাধ্যমে ইতোমধ্যে দেশের সাইক্লোন সেন্টার, স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। নিরাপদে যাতে ওইসব এলাকার বৃদ্ধ নারী, শিশু, প্রতিবন্ধী ও বয়ঃবৃদ্ধরা যাতে তাদের জানমাল নিয়ে সেখানে আশ্রয় নিতে পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ফায়ারসার্ভিস, সেনাবাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
মন্ত্রী জানান, দুর্যোগপ্রবণ জেলাগুলো হচ্ছে- বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, খুলনা, কক্সবাজার, চট্রগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, ভোলা, চাঁদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর ও শরীয়তপুর।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় তিতলি যদি আঘাত করেও সেক্ষেত্রে তা মোকাবেলার সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ১০৯০ নম্বরের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক আবহাওয়া বার্তা দেওয়া হচ্ছে। গভীর সমুদ্রে যেসব মাঝি মাছ ধরতে গেছে তারা যাতে আবহাওয়া বার্তা সহজে পায় তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে গভীর সমুদ্রে যেসব মাঝি মাছ ধরতে গেছে তারা নিরাপদে ফিরে আসতে শুরু করেছে।
মন্ত্রী আরো জানান, আমারা নিয়মিতভাবে যেসব জেলায় দুর্যোগের আশঙ্কা রয়েছে সেই জেলাগুলোতে খাদ্য মজুদ রাখি। প্রতিটি জেলা প্রশাসকের অফিসে পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ আছে যাতে করে যেকোনো সময় খাদ্য সরবরাহ করা যায়। আমরা ইতোমধ্যে সেসব এলাকায় ২৫ হাজার শুকনা খাবার মজুদ রেখেছি যা চাওয়া মাত্র আমরা দিতে পারব। প্রতিটি জেলায় দুই শ থেকে আট শ মেট্রিকটন চাল মজুদ রাখা হয়েছে। যাতে এ ধরনের দুর্যোগ আসলে তাৎক্ষণিক সরবরাহ করা যায়। আবাসনের জন্য টিনসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী আমরা সেসব এলাকায় প্রস্তুত রেখেছি।
এদিকে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’ বৃহস্পতিবার ভোরে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য অন্ধ্র প্রদেশ ও উড়িষ্যার মাঝামাঝি এলাকায় আঘাত হেনেছে। এটি স্থলভাগ দিয়ে উপরের দিকে সরতে সরতে দুর্বল হয়ে পড়ছে। ঘূর্ণিঝড় তিতলির আঘাতে ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের শ্রীককুলাম জেলার পলাসায় দুইজন নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছেন টাইমস অব ইন্ডিয়া।