ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বাস চললেও কমেনি যাত্রী ভোগান্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৯:০৫ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ০৮, ২০২১

বাস চললেও কমেনি যাত্রী ভোগান্তি

করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণে সোমবার থেকে এক সপ্তাহের জন্য কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার। গত সোম ও মঙ্গলবার গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকলেও খোলা ছিল অফিস। এ জন্য গত দুদিন অফিস যেতে ও বাসায় ফিরতে মানুষকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ফলে দাবি ওঠে গণপরিবহন চালুর। গতকাল বুধবার থেকে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে দেশের সব সিটি করপোরেশন এলাকায় সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়। এতেও কমেনি ভোগান্তি।

লোকাল বাসে দেখা গেছে ভাড়ার নৈরাজ্য। আবার ঢাবায় ঢুকেছে বাইরের বাসও। সবকিছু মিলিয়ে মনিটরিংয়ের দাবি করেছেন সাধারণ যাত্রীরা। রাজধানীর আসাদগেট, কলাবাগান, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, বাটা সিগন্যাল, আজিমপুর ও নীলক্ষেত এলাকা ঘুরে যাত্রীদের নানা ভোগান্তির দৃশ্য দেখা যায়। সরকারি নির্দেশ অনুসারে ধারণক্ষমতার অর্ধেক আসন খালি রেখে চলাচল করতে হচ্ছে গণপরিবহন। আর এর কারণে স্বল্প দূরত্বের যাত্রীদের বাসে তুলতে অনীহা দেখাচ্ছেন কন্ডাক্টররা। ফলে বাসে উঠতে অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে অনেক যাত্রীকে। আবার বাড়তি ভাড়া নিয়েও অভিযোগ অনেক যাত্রীর।

তারা বলছেন, এমনিতেই রাজধানীজুড়ে গণপরিবহনের সংকট রয়েছে। তার মাঝেই যাত্রী পরিবহনে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। এমন অবস্থায় যাত্রীরা পড়েছেন মহাবিপাকে। সময় মতো অফিস পাড়ায় পৌঁছাতে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হচ্ছে। সেই সঙ্গে ভাড়ার নৈরাজ্য তো রয়েছেই। মাসের শেষে যে টাকা বেতন আসবে তার অর্ধেকের বেশিই চলে যাবে অফিস যাতায়াতে গণপরিবহনের ভাড়ায়।

ভাড়া নিয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন স্বল্প দূরত্বে যাতায়াতকারী যাত্রীরা। বাসে উঠলেই তাদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। নাজমুল হোসেন নামে এক যাত্রী বলেন, বাস থামানোর পর যখন স্বল্প দূরত্বের কথা বলছি তখন আর কেউ নিতে চাইছে না। সিট খালি থাকলেও গাড়িতে উঠতে দিচ্ছে না। সাব্বির আহমেদ নামে এক যাত্রী বলেন, প্রতিদিন যাতায়াতেই চলে যায় আড়াইশ’ থেকে তিনশ’ টাকা। বেতন আর কত পাই? এমন অবস্থা যদি দীর্ঘসময় চলতে থাকে তবে আমাদের বেঁচে থাকাই দায় হয়ে পড়বে। গাড়িতে অর্ধেক যাত্রী পরিবহন করলে অর্ধেক ভাড়া বাড়ানো যেতে পারে কিন্তু ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করার কোনো মানেই হয় না। সংশ্লিষ্টদের উচিত অচিরেই এই বাড়তি ভাড়া প্রত্যাহার করা।

প্রশাসনের সমন্বয়হীনতার ভোগান্তি সাধারণ জনগণ পোহাচ্ছে বলে মনে করছেন যাত্রী অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক কেফায়েত শাকিল। তিনি বলেন, ৬০ শতাংশ বাড়তি ভাড়া আদায় মানুষের প্রতি চরম অবিচার। কেননা করোনাকালে এমনিতেই মানুষের আর্থিক দৈন্যদশা চলছে। তার ওপর এই বাড়তি ভাড়া মানুষের মানসিক যন্ত্রণা ছাড়া আর কিছুই নয়। এ বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আরও ভাবা দরকার এবং বাড়তি ভাড়া প্রত্যাহার করে স্বাভাবিক ভাড়া ফিরিয়ে আনা উচিত।

এদিকে গণপরিবহন চলাচল বিষয়ে নতুন সিদ্ধান্তে বাইরের গণপরিবহন সিটিতে প্রবেশ করতে পারবে না বলে জানিয়েছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বাইরের গণপরিবহনগুলো প্রবেশ করছে রাজধানী ঢাকায়। গতকাল সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ের কাজলা এলাকায় দেখা যায়, নারায়ণগঞ্জের অসংখ্য বাস রাজধানীতে প্রবেশ করছে। একই সঙ্গে সিলেট, কুমিল্লা ও লাকসাম এলাকার দূরপাল্লার বাসগুলোকেও প্রবেশ করতে দেখা গেছে।

এ বিষয়ে ডিএমপি ট্রাফিকের ওয়ারী বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার গোবিন্দ চন্দ্র পাল বলেন, শুধু সিটি করপোরেশন এলাকায় বাস চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। যাত্রাবাড়ী পয়েন্ট দিয়ে বাইরের গাড়ি প্রবেশ করছে কি-না সেটা আমরা তদারকি করছি। নির্দেশ অমান্য করে কেউ যদি গাড়ি নিয়ে আসে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 
Electronic Paper