ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ভাসানচর রোহিঙ্গাদের জন্য নিরাপদ: বিশেষজ্ঞদের অভিমত

খোলা কাগজ ডেস্ক
🕐 ৯:৫২ অপরাহ্ণ, মার্চ ০৬, ২০২১

ভাসানচর রোহিঙ্গাদের জন্য নিরাপদ: বিশেষজ্ঞদের অভিমত

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভাসানচর ভূতাত্বিকভাবে স্থিতিশীল এবং জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা যাদের কক্সবাজার ক্যাম্প থেকে অস্থায়ীভাবে স্থানান্তর করা হচ্ছে, তারা এই দ্বীপে নিরাপদে আছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপ-উপাচার্য এবং দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল শনিবার এক সেমিনারে বলেন, ভূতাত্বিকভাবে এই দ্বীপ (ভাসানচর) স্থিতিশীল… ভাসানচর রোহিঙ্গাদের জন্য একটি নিরাপদ এলাকা।

সেন্ট্রাল ফাউন্ডেশন ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (সিএফআইএস) সহযোগিতায় ডিইউ-এর শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগ ‘কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর: সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ড. কামাল বলেন, ভাসানচরের জীবনযাত্রা কক্সবাজার শিবিরের চেয়ে ভালো। এই দ্বীপে রোহিঙ্গা শিশুদের সংগঠিতভাবে শিক্ষা সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরের তুলনায় ভাসানচরে জীবিকার সুবিধা ভালো।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ ড. কামাল বলেন, ভূতাত্বিক দিক বিবেচনা করে তার নেতৃত্বে একটি গবেষক দল গত কয়েক মাসে ভাসানচরের ওপর একটি গবেষণা চালিয়ে জানতে পারেন দ্বীপটি স্থিতিশীল কি-না।

ভাসানচর একটি দ্বীপ যা প্রায় ১৭ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, তিনি আরও বলেন এই দ্বীপটি ভাঙনের আশংকা কম। মেঘনা নদী দিয়ে প্রতি বছর প্রায় দুই বিলিয়ন টন ময়লা নেমে বঙ্গোপসাগরে জমা হচ্ছে। এই দ্বীপ দিন দিন প্রসারিত হচ্ছে এবং ভবিষ্যদ্বাণী করা হচ্ছে একদিন ভাসানচর সন্দ্বীপ সঙ্গে সংযুক্ত হবে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, ভাসানচরের ১২০টি গুচ্ছগ্রামে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে, যা দুর্যোগে বিপর্যয় কমাতে সাহায্য করবে। ভাসানচরে আন্তর্মহাদেশীয় এবং স্থানীয় সুনামির কোনো সম্ভাবনা নেই এবং এ কারণে এটি রোহিঙ্গাদের জন্য একটি নিরাপদ এলাকা।

ড. কামাল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাস্ত্যুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের আশ্রয় দিয়ে তার উদারতা দেখিয়েছেন এবং ‘মানবতার মায়ের’ মর্যাদা অর্জন করেছেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার জন্য মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়ানোর আহ্বান জানান।

সিএফআইএসএস-এর চেয়ারম্যান কমোডোর এমএন আবসার বলেন, যখন উন্নত দেশগুলো রোহিঙ্গাদের প্রবেশের কথা অস্বীকার করে, তখন বাংলাদেশ মানবিক বিবেচনায় তাদের আশ্রয় দেয়। কিন্তু তারা বিভিন্ন হুমকি দিচ্ছে। একটি বাসযোগ্য অবস্থা পেতে আরও রোহিঙ্গা কক্সবাজার শিবির থেকে স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যেতে আগ্রহী। মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার আগে তাদের একটি মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন করা উচিত।

দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. জিল্লুর রহমান বলেন, বঙ্গোপসাগরে ময়লা জমা হচ্ছে এবং ভাসানচরকে কিছু প্রকৌশল ব্যবস্থা গ্রহণ করে স্থিতিশীল রাখা যেতে পারে। ভাসানচরের চারপাশে ইতোমধ্যে নয় ফুট উঁচু একটি বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে এবং ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসসহ প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে দ্বীপটিকে রক্ষা করতে এর উচ্চতা ১৯ ফুটে উন্নীত করা হবে।

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. সাদেকা হালিম, শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন উন্নয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন সেমিনারে বক্তব্য রাখেন।

শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন উন্নয়নের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. তৌহিদুল ইসলাম একটি গবেষণার ফলাফল সমূহ উপস্থাপন করেন। খবর বাসসের। 

 
Electronic Paper