ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ভ্রমণ হোক স্বাস্থ্যবিধি মেনে

আরিফুল ইসলাম
🕐 ১২:১৬ অপরাহ্ণ, মার্চ ০৪, ২০২১

ভ্রমণ হোক স্বাস্থ্যবিধি মেনে

অপার সৌন্দর্য ঘেরা বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন। কিন্তু নানাবিধ কারণে দ্বীপটি সংকটাপন্ন হয়ে পড়ছে। হারিয়ে যাচ্ছে এর নৈসর্গিক রূপ। বৈচিত্র্যময় সেন্টমার্টিনের জীববৈচিত্র্য এখন হুমকির দ্বারপ্রান্তে। সেন্টমার্টিনের এমন পরিবেশগত বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে মূলত মানুষই বিশেষভাবে দায়ী। সৌন্দর্য উপভোগ করতে কার না ভালো লাগে। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৯-১০ হাজার পর্যটক সেন্টমার্টিনে অবস্থান করে।

কিন্তু ভ্রমণপিয়াসী এসব মানুষের পরিবেশবিরোধী আচরণের ফলে এর পরিবেশ ও সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে। সেন্টমার্টিন যাওয়ার পথে ঝাঁকে ঝাঁকে দেখা মেলে গাংচিল পাখির। এমন দৃশ্য দেখে পর্যটকরা জাহাজ থেকে তাদের চিপস, বিস্কুট ইত্যাদি খেতে দেয়। নিষিদ্ধ হলেও কে শোনে কার কথা। পর্যটকদের দেওয়া এসব খাদ্য পাখির জীবনকে মরণাপন্ন করে তুলছে, নাফ নদীতে কমেছে গাংচিলের সংখ্যা।

এছাড়া ভ্রমণের সময় পর্যটকরা চিপস, বিস্কুটের প্যাকেটসহ বিভিন্ন প্লাস্টিক বর্জ্য জাহাজ থেকে সাগরে ফেলছে। ফলে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে সামুদ্রিক বিভিন্ন জলজ ও উদ্ভিজ্জ প্রাণী। নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য। একটি পরিসংখ্যান বলছে, সমুদ্রের পানিতে ৫ ট্রিলিয়নের বেশি প্লাস্টিক ভেসে থাকে। ১৪ মিলিয়ন টনের বেশি প্লাস্টিক প্রতিবছর সমুদ্রে জমা হচ্ছে। প্লাস্টিকের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় সামুদ্রিক প্রাণীর উপর এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। খাদ্য হিসেবে ভুল করে প্লাস্টিক খাওয়ার ফলে প্রতিনিয়ত প্রাণীর মৃত্যু হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্নভাবে সেন্টমার্টিন দূষণ হচ্ছে।

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সেন্টমার্টিন ভ্রমণে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০)-এর ০৪ ধারায় নীতিমালা থাকলেও হচ্ছে না যথাযথ বাস্তবায়ন। সেন্টমার্টিন দ্বীপ রক্ষায় পরিবেশ অধিদপ্তরের নেই ন্যূনতম মাথাব্যথা। সেন্টমার্টিন দ্বীপ আমাদের জাতীয় সম্পদ। সৌন্দর্য ঘেরা লীলাভূমি বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প উন্নয়নের অপার সম্ভাবনা বিদ্যমান। তাই পর্যটন সম্ভাবনা ধরে রাখতে হলে সর্বপ্রথম প্রাণ ও প্রকৃতিকে রক্ষা করতে হবে। সচেতন ও পরিবেশবান্ধব পর্যটন স্থান বিদেশি পর্যটকদেরও আকর্ষণ করে কিন্তু প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় মানুষ উদাসীন!

করোনাকালে পর্যটকদের পদচারণা না থাকায় সেন্টমার্টিনসহ দেশের পর্যটন স্থানগুলো ফিরে পেয়েছিল তাদের চিরচেনা প্রাকৃতিক রূপ। কিন্তু করোনার ধকল কাটিয়ে ওঠার আগেই সেন্টমার্টিন হয়ে উঠেছে পর্যটকমুখর। পর্যটকদের অসচেতনতার ফলে দিন দিন আশঙ্কাজনক হয়ে উঠছে দ্বীপটি। সরকারের এটি সংরক্ষণের জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। দ্বীপে পর্যটকদের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।

আরিফুল ইসলাম : শিক্ষার্থী, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার্থী, চট্টগ্রাম

 
Electronic Paper