ডিজিটাল নিরাপত্তা ও লেখকের মৃত্যু
ফকির ইলিয়াস
🕐 ১১:৩২ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ০২, ২০২১
পাশ্চাত্যের মিডিয়ায় ছড়িয়েছে এই সংবাদ। বাংলাদেশে জেলে একজন লেখক মৃত্যুবরণ করেছেন। তার নাম মুশতাক আহমেদ। না, আমি তার কোনো লেখা পড়িনি। হয়ত তা আমার অপারগতা! তার আরেকটি পরিচয় ছিল। বাংলাদেশে কুমির চাষের উদ্যোক্তা ছিলেন। বিদেশে বেশ কয়েক বছর কাটিয়ে দেশে গিয়ে এই কাজ হাতে নিয়েছিলেন। শুধু বাংলাদেশেই নয়, পুরো দক্ষিণ এশিয়াতে মুশতাক আহমেদই প্রথম কুমির চাষ করা শুরু করেন। মিডিয়ায় পরিচিত হয়েছিলেন ‘কুমির ভাই’ বলে। দেশ থেকে প্রথম কুমির রপ্তানি করেন এই মুশতাক আহমেদ।
প্রকাশিত নিউজ থেকে জেনেছি; মুশতাক আহমেদ তার লেখা বই ‘কুমির চাষির ডায়েরি’তে তার কুমির চাষের শুরু থেকে প্রথম বাণিজ্যক কুমির রপ্তানি পর্যন্ত খুঁটিনাটি তুলে ধরেছেন। ২০২০ সালের মে মাসে পুলিশ জনপ্রিয় কার্টুনিস্ট আহমেদ কবীর কিশোর এবং লেখক মুশতাক আহমেদকে ঢাকার বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে। তাদের বিরুদ্ধে ‘ফেসবুকে করোনাভাইরাস নিয়ে গুজব ও মিথ্যা তথ্য ছড়ানো’, ‘জাতির জনকের প্রতিকৃতি’, ‘জাতীয় সঙ্গীত’ এবং ‘জাতীয় পতাকা’কে অবমাননার অভিযোগ আনা হয়। মুশতাক আহমেদ ‘মাইকেল কুমির ঠাকুর’ নামে একটি ফেসবুক পেজও পরিচালনা করেন, যাতে সামাজিক ও রাজনৈতিক বিভিন্ন বিষয়ে মন্তব্যও উঠে আসত। তার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ পুলিশের ডায়েরিতে ছিলÑ তা আদালত জানেন। কিন্তু অনলাইনে তার কথিত পেজ ঘেঁটে আমি এমন কিছু পাইনি যা বড় রকমের অপরাধযোগ্য। অথবা তার ফলোয়ারও যে খুব বেশি এমন কিছু নেই সোশ্যাল মিডিয়ায়!
মুশতাক আহমেদ ফেরারি আসামি ছিলেন না। তিনি ‘মারাত্মক রাষ্ট্রদ্রোহ কর্ম’ কী করেছিলেন- সেই বিতর্কে না গিয়ে যে বিষয়টি সহজ সমীকরণে বলতে চাই, তা হলো মুশতাকের বিরুদ্ধে মামলা কি জামিনযোগ্য ছিল না? তিনি কি পালিয়ে যেতেন? তার শারীরিক অসুস্থতার কারণেও তিনি জামিন পেতে পারতেন। কেন তিনি জামিন পাননি?
মুশতাক কারাগারে মৃত্যুবরণ করেছেন। এটা খুবই বেদনাদায়ক খরব। এই ঘটনার পরে রাষ্ট্র তা খতিয়ে দেখার কথা জানিয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তদন্ত করে দেখা হবে। কাশিমপুর কারাগারে আটক লেখক মুশতাকের মৃত্যু প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘লেখক মুশতাক আহমেদ তার লেখায় আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গসহ অন্যের বিশ্বাসের প্রতি আঘাত করেছিলেন। এজন্য অনেকেই তার বিরুদ্ধে মামলা করেন। সম্প্রতি মামলার কারণে, কাশিমপুর জেলখানায় অন্তরীণ ছিলেন তিনি। আইজি প্রিজন থেকে সংবাদ পেয়েছি, মুশতাক আহমেদ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে কারাগারের হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা পান। পরে তাকে গাজীপুরের তাজউদ্দীন মেমোরিয়াল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুতে কারা কর্তৃপক্ষের কোনো গাফিলতি আছে কিনা- তা তদন্ত করা হবে।’
মুশতাকের মৃত্যু নিয়ে বাংলাদেশে আন্দোলন দানা বাঁধাবার চেষ্টা করছে একটি মহল। এরা সরকারের বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপরও হামলে পড়েছে। ঢাকায় এটা বড় করে ঘটানোর অপচেষ্টা শুরু হয়েছে। এটা যারা করছেন, তারা ওই চিহ্নিত একই মহল। যারা নিছক কোনো ইস্যু পেলেই ‘সরকার ফেলে দেওয়ার’ স্বপ্ন দেখেন। এবারও তারাই একাট্টা হয়েছেন। এই মহামারীর সময়েও দল বেঁধে রাজপথ দখল করতে চাইছেন।
মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বস্তুটি আসলে কী? আমরা দেখেছি এই প্যান্ডেমিক কালেও ছবি জোড়াতালি দিয়ে মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা করা হয়েছে। আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের মা মারা যাওয়ার পর, ভুয়া ছবি দিয়ে স্বয়ং মন্ত্রীকেই হেনস্থা করার প্রয়াস চালানো হয়েছিল। এই বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘ভুয়া ছবি প্রচার করে কেউ কেউ বলেছে আমার মায়ের জানাজায় লোক সমাগম হলে দোষ হয় না আর হুজুরের জানাজায় লোক সমাগম হলে দোষ হয়।’ তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘এই ঘটনার পর কেউ যদি তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা দায়ের করে, তাহলে কি অন্যায় হবে?’
আমাদের, বাঙালি জাতির এই দুর্নাম আছে- আমরা নিজের নাক কেটে অন্যের যাত্রা ভঙ্গ করতে পারি। হ্যাঁ প্রিয় পাঠক, স্মরণ করিয়ে দিতে চাই আমরা তো সেই জাতি, যারা গণভোট দিয়ে চিহ্নিত আলবদর-রাজাকারদের জাতীয় সংসদে বসিয়েছি। একজন রাজাকার সংসদ সদস্য হয়ে যায় আর তার সঙ্গে হেরে যান একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। আমাদের গণভোটের শক্তি আছে বৈকি! দুঃখজনক হচ্ছে, আমাদের মানুষরা জানে না। জানতে চায় না। তারা সামান্য অর্থের কাছে নিজেদের বিক্রি করে দেয়। অথচ আমরা জানি একজন মানুষ দাঁড়াবে তার মৌলিকতা নিয়ে পার্টির পক্ষে। মানুষের পক্ষে।
বাংলাদেশে রাজনীতির, সংস্কৃতির বিবর্তন আমরা অবশ্যই চাই। তবে তা হতে হবে দীনতাবিহীন। আগে আমাদের সৎ মনোবলে বলীয়ান, দক্ষ সমাজ সংস্কারক এবং বিজ্ঞ বিবেচক হিসেবেই প্রতিষ্ঠা পেতে হবে। মনে রাখতে হবে, যারা রাষ্ট্রের প্রকৃত রাজনৈতিক চেতনাকে, সৃজনশীল শিল্পকে পৃষ্ঠপোষকতা করবেন তারাই কিন্তু এর প্রধান শক্তি। এখানে গুজবের কোনো স্থান নেই।
বিশ্বে প্রগতির প্রবাহ বইছে। বাংলাদেশে এই প্রবাহকে কলুষিত করা হচ্ছে। তা হচ্ছে পরিকল্পিতভাবে। এটি হচ্ছে দু’ভাবে। লুটেরা রাজনীতিকরা মনে করেন সাধারণ জনতা যদি সোচ্চার, শিক্ষিত এবং বলীয়ান হয়ে যায় তাহলে তাদের রাজনীতি করার ক্ষেত্র নষ্ট হয়ে যাবে। তাদের মিথ্যা প্রতিশ্রুতির বুলি আর কেউ শুনবে না। তাদের জনসভায় প্রখর রোদে কিংবা আষাঢ়ের প্রচ- ঝড়ের মধ্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকবে না। এতে জনগণের কোনো ক্ষতি হবে না। ক্ষতি হবে রাজনীতিকদের। আর একটি শ্রেণি চাইছে, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পায়ে কুড়াল মেরে দেশকে তালেবানি কায়দায় শাসন করতে। তারা বলছে, ‘গণতন্ত্র চাই, ভোটে যে কেউ পাস করে এসে রাষ্ট্রের দখল নিক। চেতনা আবার কী?’ বলা দরকার প্রথম শ্রেণিটির অপকর্মের কারণে দ্বিতীয় শ্রেণিটি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চাইছে!
বাংলাদেশে অর্জন এভাবেই ম্লান হয়ে যায়। ‘হাওয়া ভবনের’ অধিকর্তাদের দৌরাত্ম্য, জঙ্গিবাদের প্রত্যক্ষ মদদ আর লুটপাটের স্বর্গরাজ্য বানানোর কারণেই এদেশের মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল চারদলীয় জোটের দিক থেকে। এগুলো সবই হলো রাজনৈতিক হিসেব-নিকেশ। মানুষ, হিসেবে ভুল করে না। ভুল করেন রাজনীতিকরাই। তবে ভোগান্তি মানুষেরই বাড়ে। একথা বিবেচনায় না রেখে যারা রাজনীতি করেন তারা কতটা সফল হবেন বা টিকে থাকতে পারবেন তাও বিবেচনার বিষয়। বাংলাদেশে ডিজিটাল সুবিধা অবারিত হচ্ছে। গোটা বিশ্বেই সেটা হচ্ছে। এই ডিজিটাল ব্যবস্থা অনেকের জীবনকেও বিপন্ন করে তুলছে। বিষয়টি কি ভাবার নয়? আমাদের মনে থাকার কথা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬ প্রণয়ন করা হয়েছিল ওই সময়ে। যা ছিল, ২০০৬ সনের ৩৯ নম্বর আইন। ২০১৮ সালে সেটাই পরিবর্ধিত, পরিবর্তিত করা হয় সময়ের চাহিদা বিবেচনা করে। এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ধারা কী? তা একটু দেখা যাক।
এটি কার্যকর হওয়ার পর বিলুপ্ত হয়ে যায় তথ্যপ্রযুক্তি আইনের বিতর্কিত ৫৭ ধারাসহ কয়েকটি ধারা। তার বদলে এসব ধারার বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে অপরাধের প্রকৃতি অনুযায়ী শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে নতুন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে। নতুন আইনে মুক্তিযুদ্ধ, জাতির পিতা, ধর্ম অবমাননা, মানহানির মতো সাইবার অপরাধের জন্য বিভিন্ন মেয়াদে সাজার বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ডিজিটাল নিরাপত্তা কাউন্সিল ও নিরাপত্তা এজেন্সি গঠনের কথা বলা হয়েছে। আইনের ২১ ধারা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি ডিজিটাল মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বা জাতির পিতার বিরুদ্ধে প্রপাগান্ডা, প্রচারণা ও মদদ দিলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এর সর্ব্বোচ শাস্তি ১৪ বছরের সাজার পাশাপাশি জরিমানা দিতে হবে ৫০ লাখ টাকা।
২৮ ধারায় বলা হয়েছে, ধর্মীয় মূল্যবোধ বা অনুভূতিতে আঘাত দিলে ভোগ করতে হবে সর্ব্বোচ ১০ বছরের কারাদ-। অন্যদিকে, ২৯ ধারায় মানহানিকর কিছু প্রচার প্রকাশ করলে সাজা হবে তিন বছরের।
৩০ ধারা অনুযায়ী, কোনো ব্যাংক, বীমা বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন বহির্ভূতভাবে ই-ট্রানজেকশন করলে সর্বোচ পাঁচ বছরের কারাদ- ভোগ করতে হবে। এছাড়া হ্যাকিং, কম্পিউটারের সোর্স কোড ধ্বংস ও সরকারি তথ্য বেআইনিভাবে ধারণ, প্রেরণ ও সংরক্ষণ করলে থাকছে নানা শাস্তি ও জরিমানার বিধান। নতুন আইনের বেশিরভাগ ধারাই জামিন অযোগ্য। তবে এর মধ্যে মানহানির ২৯ ধারাসহ ২০, ২৫ ও ৪৮ ধারার অপরাধে জামিনের বিধান আছে। আইন বাস্তবায়নে থাকছে ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সি। আর তদারকিতে থাকবে উচ্চ পর্যায়ের ডিজিটাল নিরাপত্তা কাউন্সিল। এর প্রধান হবেন প্রধানমন্ত্রী।
২৭ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি রাষ্ট্রীয় অখ-তা, নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করে এবং জনগণের মাঝে ভয়ভীতি সঞ্চারের জন্য কোনো ডিজিটাল মাধ্যমে বৈধ প্রবেশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে বা করায়, তাহলে সর্ব্বোচ সাজা ১৪ বছর কারাদ-। জরিমানা এক কোটি টাকা। ২৯ ধারা অনুযায়ী, যদি কোনো ব্যক্তি ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে পেনাল কোডের ৪৯৯ ভঙ্গ করে কোনো অপরাধ করেন তাহলে সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদ- ভোগ করবেন। জরিমানা পাঁচ লাখ টাকা। বিশ্বে সোশ্যাল মিডিয়া দিয়ে সাইবার ক্রাইম করা একটা প্যাশনে পরিণত হয়েছে কারও কারও। ৬ জানুয়ারি ২০২১ আমেরিকার ক্যাপিটল হিলে যে হামলা হয়, সেটাও আক্রমণকারীরা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সমমনাদের সংগঠিত করেছিল। আমেরিকায় সেই আইনেই তাদের বিচার চলছে।
আমরা ভুলে যাইনি, আরব বিশ্বে স্বৈরশাসনবিরোধী গণ-জাগরণে জনগণ ও বিশেষ করে যুব সমাজ ফেসবুকে প্রতিবাদ ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করেছে। এমনকি ব্রিটেনসহ ইউরোপের কোনো কোনো দেশেও সরকার-বিরোধী গণ-প্রতিবাদ আন্দোলন সংঘটিত করতে ফেসবুকের মতো মাধ্যমগুলো ব্যবহৃত হয়েছে। আর এ জন্যই পাশ্চাত্যের কোনো কোনো সরকার তাদের স্বার্থের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হতে পারে এমন কোনো কোনো সেবামূলক খাত বন্ধ করে দিতে ফেসবুক-কর্তৃপক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। মোটকথা, বিশ্বের জনগণ ধীরে ধীরে এটা বুঝতে পেরেছে, ফেসবুকের মতো মাধ্যমগুলোকে দেশ ও জনগণের স্বার্থে যেভাবে ব্যবহার করা যায়, তেমনি গুজব, অনৈতিক ও নিরাপত্তাহীনতার কাজে যেমন ব্যবহার করা যায়। ফলে বিশ্বের সকল রাষ্ট্রই তৎপর হয়ে উঠছে তা ঠেকাতে।
বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের, দেশের মানুষের অর্জন অনেক। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে অর্থনীতির সিঁড়ি বেয়ে। জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি) বাংলাদেশকে এলডিসি থেকে উত্তরণের চূড়ান্ত সুপারিশ করেছে। এর অর্থ, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে উন্নয়নশীল দেশের অন্তর্ভুক্ত হতে যাচ্ছে। ২০২৬ সালে বাংলাদেশ এলডিসি তালিকা থেকে বের হবে। দেশের এই অর্জন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তিনি স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশে বাংলাদেশের উত্তরণের কৃতিত্ব জনগণকে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাঙালি বীরের জাতি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না। তাই আজকের এই সময়ে বাংলাদেশকে ভেবে-চিন্তে এগোতে হবে। আমি আবেদন জানাতে চাই, কার্টুনিস্ট আহমেদ কবীর কিশোরসহ অভিযুক্তদের জামিন দেওয়া হোক। তারা যেন কোনোভাবেই রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের শিকার না হন। আমরা দেখি, দেশে ওয়াজের নামে একটি শ্রেণি হরহামেশাই সরকার, রাষ্ট্র, গণমানুষের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেই যাচ্ছে। দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কি তা দেখে না? তা শোনে না? নাকি ওদের তারা ভয় করে!
বাংলাদেশের সাইবার সিক্যুরিটি অ্যাক্ট সংযোজন বিয়োজন করা যেতেই পারে। যে কাউসিল রয়েছে, তারা দেশের বিবেকি বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে মত বিনিময় করে তা সংশোধন করতেই পারেন। কারণ রাজনীতি গণমানুষের জন্য। আপামর মানুষের নিরাপত্তা দেওয়া সরকারের দায়িত্ব। আজ যারা আন্দোলন করছেন, তাদেরও এটা বুঝতে হবেÑ আজ যদি তাদের মা, ভাইবোন এই সাইবার ক্রাইমের শিকার হন- তাহলে তারা কোন আইনে বিচার চাইবেন? অতএব, বিষয়টি হতে হবে দুপক্ষের কল্যাণের জন্যই।
নিউইয়র্ক/ ০১ মার্চ ২০২১
ফকির ইলিয়াস : সাহিত্যিক ও কলাম লেখক
[email protected]