নরসিংদীর বাউল মেলায় মানা হয়নি স্বাস্থ্যবিধি
খন্দকার শাহিন, প্রতিনিধি
🕐 ১০:১৪ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২১
নরসিংদীতে মেঘনা নদীর তীর ঘেঁষে প্রাচীন বাউল ঠাকুরের ধাম। বাউল সম্প্রদায়ের নিয়ম অনুযায়ী প্রায় ৭০০ বছর ধরে মাঘী পূর্ণিমা তিথিতে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে ঐতিহ্যবাহী এ বাউল মেলা। মেলার তত্ত্বাবধায়ক প্রাণেশ কুমার ঝন্টু বাউল পৈতৃক সূত্রে দায়িত্ব পালন করে আসছেন বছরের পর বছর। গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপী মেলায় নামে সব বয়সী মানুষের ঢল। তবে কারও মধ্যেই ছিল না স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতা। গতকাল শনিবার শেষ হয় এ মেলা।
সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, প্রতি বছরের মতো এবারও মেলা প্রাঙ্গণে হাজার হাজার দর্শনার্থীর ঢল নামে। তবে শারীরিক দূরত্ব কিংবা যথাযথ স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কাই ছিল না কারও। গাদাগাদি হয়ে কেনাকাটা করতে দেখা যায় মেলায় পসরা সাজানো দোকানগুলোতে।
মেলায় কুটির শিল্প, মৃৎশিল্প, কাঠ-বাঁশ-লোহার বিভিন্ন জিনিসপত্রসহ ছিল ইলেকট্রনিক্স পণ্য। এ ছাড়া মিষ্টি-জিলাপি, নাড়––, মিঠাইমন্ডার পসরা সাজিয়ে বসেন দোকানিরা। শিশুদের জন্য ছিল খেলনার দোকানও। চরকী, ময়ূর নৌকা, সাপখেলা আর নাগর দোলায় হই-হুল্লুড়ে ব্যস্ত ছিল কিশোর-তরুণ-তরুণীরা। স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই কোলের শিশুকে নিয়ে মেলায় দেখা গেছে দম্পতিদেরও।
মাস্ক পরিহিত এক কলেজ শিক্ষার্থী বলেন, ‘শত শত মানুষ মাস্কবিহীন। আমার মতো দু-একজন পরে কী হবে।’ তিনি বলেন, ‘করোনার ভয়ে স্কুল বন্ধ। কিন্তু এখানে এসে মনে হয়েছে- দেশে করোনা আসলেই নাই।’ বাউল আখড়াধাম কর্তৃপক্ষ জানায়, ৭০০ বছর পূর্বে এ আখড়ায় এক বাউল ঠাকুর ছিলেন। তার স্মরণে প্রতি বছর এ ধামে বাউল মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। প্রতি বছরই এ মেলায় দেশ-বিদেশের খ্যাতিমান বাউল শিল্পীরা অংশ নেন।
এ ছাড়া দেবতা ব্রহ্মার মহাযজ্ঞানুষ্ঠানে বাউলদের পাশাপাশি পুণ্যার্থীরাও অংশ নেন। জাতি বর্ণ নির্বিশেষে সবাই কলা পাতায় মহাপ্রসাদ গ্রহণসহ মিলন মেলার মাধ্যমে এর ইতি ঘটে।