সুন্দরগঞ্জে ফুটছে আমের মুকুল, ছড়াচ্ছে ঘ্রাণ
সুদীপ্ত শামীম, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি
🕐 ৩:০৪ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২১
আয় ছেলেরা, আয় মেয়েরা/ফুল তুলিতে যাই, ফুলের মালা গলায় দিয়ে/মামার বাড়ি যাই। ঝড়ের দিনে মামার দেশে/আম কুড়াতে সুখ, পাকা জামের মধুর রসে/রঙিন করি মুখ।
পল্লীকবি জসীম উদ্দিনের ‘মামার বাড়ি’ কবিতার পংক্তিগুলো বাস্তব রূপ পেতে বাকি রয়েছে আর মাত্র কয়েক মাস। তবে সুখের ঘ্রাণ বইতে শুরু করেছে। গাছে গাছে ফুটছে আমের মুকুল। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে এই মুকুলের পাগল করা ঘ্রাণ।
বাতাসে মিশে সৃষ্টি করছে মৌ মৌ গন্ধ। যে গন্ধ মানুষের মন ও প্রাণকে বিমোহিত করে। পাশাপাশি মধুমাসের আগমনী বার্তা শোনাচ্ছে আমের মুকুল।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ হচ্ছে নানা জাতের আম। লাভজনক হওয়ায় প্রতিবছরই আম চাষের জমি বাড়ছে।
উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, আম বাগানের সারি সারি গাছে শোভা পাচ্ছে কেবলই মুকুল। এ যেন হলুদ আর সবুজের মহামিলন। মুকুলে ছেয়ে আছে গাছের প্রতিটি ডালপালা। চারদিকে ছড়াচ্ছে সেই মুকুলের সুবাসিত পাগল করা ঘ্রাণ। তবে আমের ফলন নির্ভর করছে আবহাওয়ার ওপর। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন বাগান মালিকরা।
এদিকে মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মুকুলে ভরে গেছে বাগানসহ ব্যক্তি উদ্যোগে লাগানো আম গাছগুলোতে। তবে বড় আকারের চেয়ে ছোট ও মাঝারি আকারের গাছে বেশি মুকুল ফুটেছে। সেই মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে বাগান মালিকদের চোখে ভাসছে স্বপ্ন।
বাগান মালিক চাঁন মিয়া জানান, বাগানে বিভিন্ন জাতের দুই শতাধিক আম গাছ লাগিয়েছেন। এর মধ্যে আম্রপালি, গোপালভোগ, ল্যাংড়া, ফজলি, ক্ষিরসাপাতি, বারি-৪, হাড়িভাঙা অন্যতম। ইতোমধ্যে এসব গাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। গাছের পুরো মুকুল ফুটতে আরো কয়েক সপ্তাহ লাগবে বলে তিনি জানান।
বাগান মালিক আব্দুল করিম জানান, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে থেকে তাদের বাগানে লাগানো আম গাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। বেশিরভাগ গাছ মুকুলে ছেয়ে গেছে। কিছু গাছে গাছে মুকুল বের হচ্ছে।
তারা আরও জানান, মুকুল আসার পর থেকেই তারা গাছের প্রাথমিক পরিচর্যা শুরু করেছেন। মুকুল রোগবালাইয়ের আক্রমন থেকে রক্ষা করতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ওষুধ স্প্রে করছেন তারা।
বাগান মালিকরা জানান, বর্তমানে আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। এ অবস্থা থাকলে এবার আমের বাম্পার ফলন বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সৈয়দ রেজা-ই মাহমুদ বলেন, ‘এবারের আবহাওয়া অত্যন্ত ভাল। যা আমের বাম্পার ফলনের জন্য উপযোগী। তবে সবকিছুই প্রকৃতির ওপর নির্ভর করছে।’