জয় হোক মেহনতি মানুষের
সম্পাদকীয়
🕐 ১১:২২ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২১
যে কৃষকের অবদানে জুটছে অনেকের অন্ন, তাদের অধিকাংশই কৃতজ্ঞতা বোধ করে না কৃষকের প্রতি। সহজ হিসেবে তারা বিনিময় প্রথার হিসাবই করে! প্রকৃতপক্ষে বিষয়টি আরও গভীরে প্রোথিত। গতকাল খোলা কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের কাছে কৃষিঋণ পৌঁছাতে কৃষি সম্প্রসারণ, বিএডিসি ও কৃষি বিপণন অধিদফতরের ‘কৃষক গ্রুপকে’ কাজে লাগাতে চায় কৃষি মন্ত্রণালয়। এ জন্য গত বুধবার কৃষি মন্ত্রণালয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর প্রধানরা বৈঠক করেছেন। প্রাতিষ্ঠানিক কৃষিঋণ সহায়তা কীভাবে বৃদ্ধি করা যায়- আলোচনা হয়। বিশেষ করে প্রান্তিক কৃষকের কাছে ঋণ সুবিধা কীভাবে আরও বেশি করে পৌঁছে দেওয়া যায় তা নিয়ে। কৃষি মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব) কী ভূমিকা পালন করতে পারে তা বৈঠকে তুলে ধরা হয়।
প্রকৃত ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের ঋণপ্রাপ্তি সহজলভ্য করতে ডিএই, বিএডিসি ও কৃষি বিপণন অধিদফতরের বিভিন্ন কর্মসূচি/প্রকল্পের আওতায় যেসব ‘কৃষক গ্রুপ’ রয়েছে- তাদের সঙ্গে ব্যাংকের সংযোগ বৃদ্ধি, মাঠ দিবস উদযাপন ও কৃষক প্রশিক্ষণের মডিউলে ‘কৃষিঋণ’ বিষয়কে অন্তর্ভুক্তকরণ ও স্থানীয় ব্যাংক কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণে আমন্ত্রণ এবং দেশে কৃষিঋণের প্রকৃত চাহিদা নিরূপণে সমীক্ষা পরিচালনার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। কৃষিঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে জামানতের পরিবর্তে ‘কৃষি কার্ড’ বা স্থানীয় পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাদের ‘প্রত্যয়নপত্র’কে আমলে নেওয়ার কথা বলা হয়। এছাড়া, কৃষিঋণ বিতরণের পরিসংখ্যানকে ঢেলে সাজিয়ে এর সঙ্গে শস্য, কৃষক শ্রেণি ও অঞ্চলভিত্তিক এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে কৃষিঋণ বিতরণের পরিসংখ্যান প্রণয়নের ওপরও গুরুত্বারোপ করা হয়।
সভায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম বলেন, কৃষকের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক ঋণ সুবিধা সহজ করতে পারলে তাদের চাহিদা পূরণ হবে। ফলে কৃষির পুরো সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে উৎপাদন বৃদ্ধি করা যাবে। এতে দেশ উপকৃত হবে। কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব নাসিরুজ্জামান বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে সারা দেশে পারিবারিক পুষ্টিবাগান স্থাপন কার্যক্রম চলছে। যেটি খুব ভালো উদ্যোগ। এই পুষ্টিবাগান স্থাপনে সরকারি সুবিধার বাইরের আগ্রহী কৃষকরা যাদের কমপক্ষে ১ শতক জমি আছে তাদের কৃষি ব্যাংক থেকে জামানত ছাড়াই ৫ হাজার টাকা করে ঋণ দেওয়া হবে।
বৈঠকে জানানো হয়, কৃষকরা কতটুকু প্রাতিষ্ঠানিক কৃষিঋণ পান সে বিষয়েও ভিন্ন ভিন্ন তথ্য পাওয়া যায়। বিবিএসের হিসাব মতে, ২৬ শতাংশ কৃষক প্রাতিষ্ঠানিক কৃষিঋণ সুবিধা পান। অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক খাদ্যনীতি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ইপ্রি) ২০১৫ সালের হিসাব অনুযায়ী মাত্র ১২.৫ শতাংশ কৃষক প্রাতিষ্ঠানিক কৃষিঋণ সুবিধা পান। এছাড়া, আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে ১৯ শতাংশ, এনজিওর কাছ থেকে ৩৬ শতাংশ ও মানি লেন্ডারের কাছ থেকে ১২ শতাংশ ঋণ পেয়ে থাকেন। আবার কৃষি ব্যাংকসমূহ যেসব কৃষকদের ঋণ দেন তার মধ্যে মাত্র ৫.২০ শতাংশ রয়েছেন প্রান্তিক কৃষক ও ১৫ শতাংশ বৃহৎ কৃষক। সুষ্ঠু ঋণ বিতরণ প্রক্রিয়ায় কৃষকরা উপকৃত হলে পক্ষান্তরে এগিয়ে যাবে দেশই। দেশের স্বার্থেই জয় হোক মেহনতি মানুষের!
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228