ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

কর্মসংস্থান ও প্রবৃদ্ধিতে রেমিট্যান্সের অর্থ বিনিয়োগ

আব্দুল হাই রঞ্জু
🕐 ১১:৪৫ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২১

কর্মসংস্থান ও প্রবৃদ্ধিতে রেমিট্যান্সের অর্থ বিনিয়োগ

প্রবাসীদের পাঠানো টাকায় বড় হচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ। ইতোমধ্যেই যার পরিমাণ ৪৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। বিপুল অংকের এ রেমিট্যান্স অলস ব্যাংকে পড়ে আছে। অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বিশাল অংকের এ অর্থ সরাসরি আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করে বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে সরকার। উল্লেখ্য, সরকার ২০০০-২১ অর্থবছরের বাজেটে প্রবাসীদের পাঠানো বৈধ অর্থের ওপর ২ শতাংশ নগদ প্রণোদনা ঘোষণা করায় রেমিট্যান্স প্রবাহের গতি বেড়ে যায়। শুধু বৈধ রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি করতে বাজেটে রাখা ছিল ৩ হাজার কোটি টাকা। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল মনে করেন, প্রবাসীদের রেমিট্যান্সের টাকার সিংহভাগ খরচ হচ্ছে ভোগ ব্যয় খাতে। অথচ বিপুল পরিমাণ এই অর্থ সরাসরি বিনিয়োগে আনা সম্ভব হলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও প্রবৃদ্ধি অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হবে বলেও তিনি মনে করেন। ফলে আগামী বাজেটে রিজার্ভের অর্থ বিনিয়োগের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে সরকার।

করোনাভাইরাসের মহামারীতে গোটা বিশ্বের অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এর মধ্যেই বাংলাদেশে গত জুন-জুলাই মাসে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স আসে। পাশাপাশি আমদানি ব্যয় কমে যাওয়ায় এই রিজার্ভ আরও তরতর করে বাড়ছে। অবশ্য রেমিট্যান্স বৃদ্ধির নানা কারণও আছে, মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, প্রবাসী শ্রমিকরা মহামারীর এই সময়ে দেশে বেশি টাকা পাঠিয়েছেন। আবার অনেকেই সঞ্চিত অর্থ নিয়ে দেশে ফিরেছেন। আবার করোনাভাইরাসের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়ায় আমদানি পণ্যের ব্যবহার ও চাহিদা দুই-ই কমেছে। ফলে উৎপাদন কমে যাওয়ায় কাঁচামাল আমদানিও হয়নি। এমনকি বড় ধরনের উন্নয়নমূলক কর্মকা- স্থগিত থাকায় ব্যাংকে জমা বৈদেশিক মুদ্রার খরচও কমে গেছে। ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ বাড়ছেই। অবশ্য দীর্ঘদিন রিজার্ভ জমে থাকলে কিছু ক্ষতিকর দিকও আছে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

এ প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক নাজনীন আহমেদ বলেন, রেমিট্যান্স বাড়ার মানে হলো দেশের অর্থনীতিতে নতুন টাকা ঢুকেছে। সেটার জন্য অনেক সময়ই মূল্যস্ফীতি হয়ে থাকে। কারণ যাদের কাছে নতুন টাকা জমা হয়, তারা সেই অর্থে বেশি পণ্য কেনাকাটা করলে পণ্যের দামও বেড়ে যায়। তবে এটাও ঠিক, এ বছর অর্থনীতির প্রেক্ষাপট পুরোটাই উল্টো। করোনার কারণে দেশের মানুষের আয় রোজগার স্থবির হয়ে পড়েছে। ফলে এ সময় বাড়তি রেমিট্যান্সের কারণে মূল্যস্ফীতির তেমন কোনো আশঙ্কা থাকবে না। তবে এটাও ঠিক, দীর্ঘমেয়াদে রিজার্ভ থেকে গেলে বা বিনিয়োগ না হলে অর্থনীতির ক্ষতির আশঙ্কাই বেশি থাকে। ফলে সরকার বিপুল পরিমাণ রিজার্ভের অর্থ বিনিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছেন। তবে কি পদ্ধতিতে এই অর্থ বিনিয়োগ করবে, সে ব্যাপারে এখনো সরকারের পরিকল্পনা জানা যায়নি। তবে, আমরা মনে করি, প্রবাসীদের কষ্টার্জিত অর্থ বিনিয়োগের নামে যেন নয় ছয় না হয়, তা সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে। কারণ যে প্রবাসীদের আয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধি হচ্ছে, তাদের সমস্যারও অন্ত নেই। যাদের একটি বড় অংশ করোনাভাইরাসের এই মহাদুর্যোগে দারিদ্রসীমার নিচে চলে গেছে। যাদের অবলম্বন বিদেশের কর্মক্ষেত্র। দেশে ফিরে মজুদ অর্থ শেষ হওয়ার পর এখন পুরোপুরি তারা কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। ফলে অনেকের মানবেতর পরিবেশে জীবন কাটছে। অথচ এরাই আমাদের সম্পদ। কারণ মানবসম্পদই আমাদের সমৃদ্ধির অন্যতম অবলম্বন। যে কারণে করোনার স্রোতে দেশে ভেসে আসা প্রবাসীদের খোঁজখবর রাখতে হবে। তাদের প্রবাসে যাওয়ার ক্ষেত্রে সার্বিক সহযোগিতা সরকারকেই করতে হবে। এ জন্য সকলের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য জনশক্তি কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়কে গোটা দেশের ফেরত প্রবাসীদের তালিকা প্রণয়ন করে বাস্তব অবস্থার খোঁজখবর নিয়ে যার যে সমস্যা আছে, তা নিরসন করতে হবে। কারণ স্বাভাবিক সময়ে প্রতিবছর দেশ থেকে অন্তত ৫০ হাজার কর্মী চাকরি নিয়ে বিদেশে যেতেন। এখন কর্মীদের বিদেশ পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না, বরং অনেকে প্রবাস থেকে ফিরে আসছে। গত বছরের এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ফিরে এসেছে, ২ লাখ ৭২ হাজার ১৮৫ জন বাংলাদেশি কর্মী। এর অর্ধেকের বেশি ফিরেছে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে। প্রায় ৭৭ হাজার কর্মী সৌদি থেকে ফিরেছে। করোনার কারণে কাজ না থাকা, চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়া, ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়া, এমনকি প্রতারণার শিকার হয়ে অনেকেই ফেরত আসতে হয়েছে। আবার দেশেও প্রতারকচক্র সক্রিয়।

উল্লেখ্য, বিদেশ পাঠানোর নামে প্রতারক চক্রের ২ সদস্যকে গত ৩১ জানুয়ারি রোববার ভোরে রাজধানীর পল্লবী এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি ঢাকা মেট্রো পশ্চিমের একটি টিম। প্রতারক এই চক্রের কাছে, পাসপোর্টটাই ছিল আসল, আর ভিসা থেকে বিমান টিকিট পর্যন্ত জাল সরবরাহ করে প্রতারণা করে তারা। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা, ৭১টি পাসপোর্ট, মালয়েশিয়ার ১১টি জাল ভিসা, ফ্রান্সের তিনটি জাল ভিসা, ভুয়া বিএমইটি ছাড়পত্রের ফটোকপি ২৪টি, ভুয়া মেডিকেল সার্টিফিকেট ৮টি, ভুয়া বিমান টিকিট ১০টি জব্দ করেছে সিআইডি। মালিবাগ সিআইডি প্রধান কার্যালয়ে ১ ফেব্রুয়ারি সোমবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক জানান, ভুক্তভোগীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এসএম এন্টারপ্রাইজ নামে ভুয়া রিক্রুটিং এজেন্সির পরিচালক জালিম মাহমুদ ও ফিল্ড অফিসার আমল জয়ধরকে গ্রেফতার করতে পারলেও প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান রিপন মাহামুদ এখনো পলাতক। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এ পর্যন্ত প্রায় ২৫ জন ভুক্তভোগী সিআইডিতে অভিযোগ করেছে। অতিরিক্ত ডিআইজি জানান, ২০১৯ সালের মে মাস থেকে বিদেশে লোক পাঠানোর নামে চক্রটি প্রায় ৬৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সিআইডি জানায়, বিদেশ যেতে ইচ্ছুক স্বল্প শিক্ষিতদের টার্গেট করত তারা। চক্রটি ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে ভিসা যাচাই প্রক্রিয়া দেখাত ভুক্তভোগীদের। এমনকি তৈরি করত জাল টিকিট, ভিসা ও বিএমইটি কার্ড। এসব কাজের জন্য তাদের একটি অভিজ্ঞ দক্ষ টিমও রয়েছে। শুধু বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রেই নয়, প্রবাসে যারা জীবনের সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে ঘামে ঝরানো উপার্জিত অর্থ ভবিষ্যতের সুখের জন্য দেশে পাঠান, এখানেও অনেকেই পারিবারিকভাবেও প্রতারণার শিকার হয়ে থাকেন। মূলত প্রবাসে উপার্জিত অর্থ দেশে কীভাবে কার কাছে আসবে এবং কী পদ্ধতিতে সঞ্চয় করলে প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না, যা জানার অভাবে অনেক সময়েই অনেকেই দেশে ফিরে নিঃস্ব হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হন। সঙ্গত কারণে রেমিট্যান্সের অর্থ সরকার যেমন দেশের সমৃদ্ধিতে বিনিয়োগের চিন্তা করছেন, তেমনি প্রবাসীদের অর্থ সরকারি স্কিমে আকর্ষণীয় লভ্যাংশ ঘোষণা করে বিনিয়োগে নিতে পারলে দেশ ও প্রবাসীদের সমৃদ্ধি নিশ্চিত হবে। এজন্য আমরা সরকারের এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানাই।

এ প্রসঙ্গে ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের প্রধান শরীফুল হাসান বিবিসি বাংলাকে বলেন, প্রতি বছর কত সংখ্যক প্রবাসী শ্রমিক দেশে পাঠানো টাকা নিয়ে প্রতারণার শিকার হন, তার সঠিক কোনো পরিসংখ্যান আমাদের কাছে নেই। তবে তিনি বলেন, আমরা যারা প্রবাসীদের নিয়ে কাজ করি, বিমান বন্দরে একটি জরুরি সেবা দিই, দেখেছি প্রায়ই এ ধরনের ঘটনা ঘটে। বিদেশ থেকে কষ্ট করে তারা টাকা পাঠাচ্ছেন কিন্তু সেগুলো তাদের স্বজনরা খরচ করে ফেলছে, ফলে তাদেরকে কেউ কেউ গ্রহণ করতেই চায় না। তিনি বলেন, পুরুষের চেয়ে নারীদের ক্ষেত্রে এটা বেশি হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে বামরুর চেয়ারপারসন তাসলিম সিদ্দিকী বলেন, এমন ঘটনাও আছে, হয়তো প্রবাসীর টাকায় সম্পত্তি হয়েছে, পরে সে সম্পত্তি ভাইবোনদের মধ্যে ভাগ করে নিতে হয়েছে। বামরু ও ব্র্যাকের অভিবাসন বিষয়ক সংশ্লিষ্টরা প্রবাসীদের অর্থের নিরাপত্তা দিতে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। তাদের সুপারিশে বলা হয়েছে, প্রবাসে যাওয়ার আগে ব্যাংকে দু’টি হিসাব খুলে যাবেন। একটি হিসাবে পরিবারের ভরণ পোষণের জন্য টাকা আসবে, আর অন্য হিসাবটিতে টাকা আসবে সঞ্চয়ের জন্য। সে সঞ্চয়ের টাকার লভ্যাংশ পাবে এবং টাকার নিশ্চয়তা থাকবে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দিকনির্দেশনা থাকতে হবে। যেন সে পদ্ধতি অনুসরণ করে তারা প্রবাসে যায়। আর আইনে থাকলে তারাও আইন নিয়মনীতি মেনেই বিদেশ যাবেন। এক্ষেত্রে সরকারকেও প্রবাসীদের সার্বিক সহায়তা দিতে হবে।

অবশ্য ইতোমধ্যেই প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য ‘সঞ্চয় স্কিম’ চালুর সুযোগ করে প্রথমবারের মতো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখন থেকে ব্যাংকগুলোতে মাসিক কিংবা ত্রৈমাসিক কিস্তিভিত্তিক এই সঞ্চয় স্কিম বিভিন্ন মেয়াদে খুলতে পারবেন প্রবাসীরা। এমনকি সঞ্চয় স্কিমের স্থিতি জামানত রেখে ঋণ নেওয়ারও সুযোগ পাবেন। বিশেষ করে কোনো প্রবাসী ইচ্ছা করলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতি সাপেক্ষে জমানো টাকা বিদেশেও নিতে পারবেন। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক হুমায়ুন কবির বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিদের কষ্টার্জিত অর্থ বিনিয়োগে আনতে এবং তাদের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার স্বার্থে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ফলে প্রবাসীরা দেশে আরও বেশি রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহিত হবেন। বাস্তবে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সই দেশের সমৃদ্ধ অর্থনীতির জন্য অন্যতম অবলম্বন। বৈশ্বিক মহামারী করোনার মহাসংকটকালেও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স প্রবাহ অব্যাহতভাবে বেড়েই চলছে। নতুন বছরের শুরুর মাস জানুয়ারিতেও রেমিট্যান্স এসেছে ১৯৬ কোটি ২৬ লাখ ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২০ শতাংশ বেশি। এখন প্রায় ৪৩ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ ছুঁই ছুঁই অবস্থায়। এই রিজার্ভ দিয়ে সাড়ে ১০ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি পর্যন্ত সাত মাসে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন, ১ হাজার ৪৯০ কোটি ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৮৬ কোটি ডলার বেশি। যা প্রবৃদ্ধি অর্জনে অবদান রেখেছে প্রায় ৩৫ শতাংশ। রেমিট্যান্স প্রবাহ ইতিবাচক ধারায় অব্যাহত থাকায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নতুন উচ্চতায় পৌঁছানোয় সন্তোষ প্রকাশ করে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, রিজার্ভ ৪৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ায় আমাদের অর্থনৈতিক সক্ষমতার অন্যতম মাইলফলক। স্বাভাবিক অর্থনীতিতে এই অর্থের গুরুত্ব ও অবদান দিন দিন বাড়ছে। তিনি বলেন, এই অর্থ দেশে বিনিয়োগে আনার কোনো পরিকল্পনা সরকারের ছিল না। কিন্তু আমরা এখন ভাবছি, এই বিপুল পরিমাণ রেমিট্যান্সকে বিনিয়োগে আনা প্রয়োজন।

এ জন্য আগামী ‘২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে অন্তর্ভুক্ত পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আমরাও মনে করি, বিশাল অংকের রেমিট্যান্সকে অলসভাবে ফেলে না রেখে দেশীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে আধুনিকায়ন করে উন্নত প্রযুক্তিতে উৎপাদনে যাওয়া সম্ভব হলে উৎপাদন খরচ কম হবে এবং উৎপাদিত পণ্য বিদেশের যেকোনো দেশের পণ্যের সহিত প্রতিযোগিতা করে টিকে থাকতেও পারবে। এতে রপ্তানি আরও বাড়বে এবং অর্থনীতি সমৃদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। তবে সরকার এ অর্থ কীভাবে কোন পদ্ধতিতে বিনিয়োগ করবে, তা দেখার জন্য হয়তো আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু আমরা চাই, একচেটিয়া পুঁজির আধিপত্যকারী বহুজাতিক শিল্প গ্রুপের স্বার্থে বিনিয়োগ না করে দেশীয় রুগ্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে আধুনিকায়ন ও যুগোপযোগী করে চালু করা হোক, এতে বিপুল কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে।

আব্দুল হাই রঞ্জু : সাবেক ছাত্রনেতা
[email protected]

 
Electronic Paper