একুশে আগস্টে সভামঞ্চে গ্রেনেড ছুঁড়েছিলেন ইকবাল
প্রীতম সাহা সুদীপ
🕐 ২:১৬ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২১
২০০৪ সালের একুশে আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশ চলাকালে সরাসরি সভামঞ্চ লক্ষ্য করে গ্রেনেড ছুঁড়েছিলেন হরকাতুল জিহাদের সদস্য ইকবাল হোসেন ওরফে ইকবাল ওরফে জাহাঙ্গীর ওরফে সেলিম (৪৭)। গ্রেনেড হামলার মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি তিনি। হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশের (হুজিবি) জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নানের নির্দেশেই ইকবাল হোসেন গ্রেনেড হামলায় জড়িত হন। হামলার পর আত্মগোপনে গিয়ে কখনো নিরাপত্তাকর্মী, শ্রমিক আবার কখনো রিকশার মেকানিক হিসেবে ছদ্মবেশে জীবনযাপন করতে থাকেন। একপর্যায়ে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান। ২০২০ সালের শেষের দিকে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে তাকে দেশে পাঠানো হয়।
এরপর থেকেই এনএসআই এবং র্যাবের গোয়েন্দা শাখা জঙ্গি ইকবালের বিষয়ে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ অব্যাহত রাখে। এরই ধারাবাহিকতায় ২২ ফেব্রুয়ারি, সোমবার দিনগত রাতে রাজধানীর দিয়াবাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
২৩ ফেব্রুয়ারি, মঙ্গলবার (আজ) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
ছাত্রদল থেকে হুজিতে যোগ দেন ইকবাল:
গ্রেফতার পলাতক জঙ্গি ইকবালকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র্যাব ডিজি বলেন, এইচএসসি পাস ইকবাল স্কুল-কলেজে অধ্যায়নরত অবস্থায় ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ইকবাল ১৯৯৪ সালে ঝিনাইদহ কেসি কলেজের ছাত্র সংসদে ছাত্রদলের নির্বাচিত শ্রেণি প্রতিনিধি ছিলেন। ১৯৯৫ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত কর্মজীবী হিসেবে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করেন।
দেশে ফিরে ইকবাল আইএসডি ফোন ও অন্য ব্যবসা শুরু করেন। এসময় সর্বহারা ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের সঙ্গে কোন্দলে জড়িয়ে যান। ২০০১ সালে স্থানীয় এক জঙ্গি সদস্যের মাধ্যমে তিনি হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশে (হুজিবি) যোগ দেন। ২০০৩ সালে হুজি নেতা মুফতি হান্নানসহ শীর্ষ নেতাদের সান্নিধ্যে এসে প্রশিক্ষণ নিতে থাকেন। ২০০৪ সালে মুফতি হান্নানের নির্দেশে ঢাকায় আসেন এবং গোপন আস্তানায় অবস্থান করেন।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় মুফতি হান্নানের নির্দেশে সরাসরি অংশ নেন জানিয়ে র্যাব প্রধান বলেন, মুফতি হান্নান তাকে গ্রেনেড সরবরাহ করেছিলেন। হামলার সময় সরাসরি মঞ্চ লক্ষ্য করে গ্রেনেড ছুড়েছিলেন তিনি। ঘটনার পররপরই তিনি আত্মগোপনে ঝিনাইদহে চলে যান।
ম্যানুয়াল পাসপোর্টের সুযোগে ভিন্ননামে দেশ ছাড়েন ইকবাল
ঘটনার পর জঙ্গি ইকবালকে গ্রেফতার করতে একাধিক অভিযান পরিচালিত হয় জানিয়ে তিনি বলেন, ২০০৮ সালে তাকে গ্রেফতারে ঝিনাইদহের নিজবাড়ি, গাজীপুর, সাভারসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায় র্যাব। আত্মগোপনে থাকাকালীন ইকবাল নিরাপত্তাকর্মী, শ্রমিক, রিকশা মেকানিক হিসেবে ছদ্মবেশে জীবনযাপন করেন। তাকে গ্রেফতারে ধারাবাহিক অভিযানের একপর্যায়ে প্রবাসে পাড়ি জমান। ২০২০ সালের শেষের দিকে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে তাকে দেশে পাঠানো হয়।এনএসআই এবং র্যাবের গোয়েন্দা শাখা জঙ্গি ইকবালের বিষয়ে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ অব্যাহত রাখে। এরই ধারাবাহিকতায় জঙ্গি ইকবালকে গ্রেফতার করা হয়।
এতো গুরুত্বপূর্ণ একজন আসামি কীভাবে বিদেশে পাড়ি জমান জানতে চাইলে র্যাব প্রধান বলেন, আমরা ধারণা করছি ২০০৮ সালে ম্যানুয়াল পাসপোর্টের সুযোগে ভিন্ননামে দেশ ছেড়েছিলেন তিনি। বিদেশে গিয়েও তিনি দু’বার নাম পরিবর্তন করেন।