হতাশায় নীলফামারীর চাল আমদানিকারকরা
মোশাররফ হোসেন, নীলফামারী
🕐 ১০:০৯ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২১
স্বল্প সময়সীমার কারণে ভারত থেকে চাল আমদানির বরাদ্দ পেয়েও হতাশায় রয়েছেন নীলফামারীর ব্যবসায়ীরা। বন্দরে যানজট, এলসি খুলতে নানা সমস্যা ভোগান্তিতে ফেলেছে তাদের। কাস্টম থেকে বন্দর ছাড়পত্র মিললেও অনেককে পড়তে হয়েছে জটিলতায়। বিল অব এন্ট্রির জন্য অপেক্ষা করতে করতে পার হয়েছে সময়। ফলে দ্বিতীয়বার এলসি খুলতে পড়তে হচ্ছে নানা জটিলতায়। এমন অবস্থায় চাল আমদানির সময়সীমা বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন তারা।
জেলার চাল আমদানিকারকরা বলছেন, গত ১৩ জানুয়ারি বেসরকারি পর্যায়ে ভারত থেকে এক লাখ ১০ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন চাল আমদানির জন্য দেশের ৪৪ আমদানিকারককে অনুমতি দেয় খাদ্য মন্ত্রণালয়। সে অনুযায়ী নীলফামারী জেলার পাঁচ আমদানিকারক আট হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানির অনুমতি পান। তারা বরাদ্দের অনুকূলে পর্যায়ক্রমে এলসি খোলেন। কিন্তু এলসি খুলতে বেশি সময় লেগে যায়। সংশ্লিষ্ট বন্দরে যানজটও একটি কারণ। ফলে নির্ধারিত সময়সীমায় চাল আমদানিতে নানা হয়রানির মুখোমুখি হতে হচ্ছে তাদের।
নীলফামারী শহরের ব্যবসায়ী মেসার্স অরুণ এন্টারপ্রাইজের মালিক অরুণ সিংহ রায় বলেন, ‘গত ১৩ জানুয়ারি খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে আমার প্রতিষ্ঠানের নামে এক হাজার মেট্রিক টন চাল ভারত থেকে আমদানির অনুমতি পাই। ওই অনুমতির বিপরীতে ২২০ মেট্রিক টন চালের জন্য ২৮ জানুয়ারি এলসি খুলি। পরে ১৬০ মেট্রিক টন চাল আমদানিও করা হয়। দ্বিতীয় দফায় ৬০ টন চাল গত ২ ফেব্রুয়ারি ছাড় করতে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে গেলে বাংলাবান্ধা কাস্টম ছাড়পত্র দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এ সময় তারা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র দাবি করেন। পরে সিএনএফের অনুরোধে কাস্টম ওই চালের ছাড়পত্র দিলেও বিল অব এন্ট্রির ছাড়পত্র দেয়নি। পরে ১১ ফেব্রুয়ারি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র পাওয়ার পর কাস্টম বিল অব এন্ট্রি দেয়। এরপর ১৬ ফেব্রুয়ারি ফের এলসি খুলতে ব্যাংকে গেলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সময়সীমা অতিক্রমের কথা বলে নতুন করে এলসি খুলতে অস্বীকৃতি জানায়। এ অবস্থায় আমার নামে ছাড়পত্র দেওয়া আরও প্রায় ৭৮০ মেট্রিক টন চাল আমদানি করতে পারছি না।’
নীলফামারীর রায় এন্টারপ্রাইজের নামে চাল আমদানির অনুমতিপ্রাপ্ত ব্যবসায়ী আশুতোষ রায় বলেন, ‘১১ ফেব্রুয়ারি ১০০ মেট্রিক টন চালের বিপরীতে এলসি খুললেও ভারতের ফুলবাড়ীতে যানজটের কারণে চাল আনতে পারছি না। সময়মতো চাল না আসায় নতুন করে এলসিও খুলতে পারছি না। এতে করে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। পাশাপাশি সময় স্বল্পতার কারণে নতুন করে আর এলসিও খোলা যাচ্ছে না।’ তিনি সময়সীমা বৃদ্ধির দাবি জানান।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. নাজমুল হক ভুইয়া বলেন, ‘যারা ১৫ ফেব্রুয়ারির সময়সীমার মধ্যে বরাদ্দের অনুকূলে এলসি খুলে চাল এনেছেন তাদের আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বরাদ্দের অবশিষ্ট চাল আমদানির জন্য আবেদন করতে বলা হয়েছে। আর যারা ওই সময়ের মধ্যে কোনো এলসি খোলেননি তাদের বরাদ্দ বাতিল করে সেই বরাদ্দ অন্য ব্যবসায়ীকে দেওয়া হবে। যাদের আমদানি অনুমতির সমস্যা হচ্ছে তাদের বিষয়টি আমি সংশ্লিষ্ট বিভাগে কথা বলে সমাধানের চেষ্টা করছি।’