ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

শাখা যাদুকাটা নদী ভাঙনে বিলীনের পথে দুটি গ্রাম

শহীদনূর আহমেদ, সুনামগঞ্জ
🕐 ৯:৫৪ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৭, ২০২১

শাখা যাদুকাটা নদী ভাঙনে বিলীনের পথে দুটি গ্রাম

নদী ভাঙনের কবলে নিশ্চিহ্নের পথে সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার বাদাঘাট দক্ষিণ ইউনিয়নের দুইটি গ্রাম। শাখা যাদুকাটা নদীর ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হতে বসেছে ডালারপাড় ও বাগগাঁও গ্রাম দুটি। ভাঙনের কবলে রয়েছে দুই গ্রামের অন্তত পাঁচ শতাধিক পরিবার।

পাহাড়ি ঢল ও প্রবল বর্ষণের তোড়ে আবাদি জমি, ফলের বাগান, বাঁশঝাড় ও ঘরবাড়িসহ অনেক স্থাপনা চলে গেছে নদীর পেটে। ভাঙন রোধে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া না হলে আগামী বর্ষাকালে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে জানিয়েছে ভাঙনকবলিত দুই গ্রামের বাসিন্দারা।

ভাঙন রোধে বিহীত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে পাউবো কর্তৃপক্ষ। তবে কবে কাজ শুরু হবে তা জানা যায়নি। বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিউর রহিম জাদিদ জানান, এটা পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডিজাইন লেভেলের বাহিরে, যদি ডিজাইন লেভেলের ভিতরে থাকে তাহলে ভাঙন প্রতিরোধে কাজ করা হবে।

এদিকে সুনামগঞ্জের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সবিবুর রহমান বলেন, সুনামগঞ্জ জেলার ভাঙনকবলিত যে সকল জায়গাগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ছিল, সেসব এলাকার জন্য একটি প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত করে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে দাখিল করেছি। এ ছাড়াও অন্যান্য ভাঙন কবলিত এলাকায় একটি নতুন প্রজেক্ট তৈরির জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি পরিদর্শনে আসলে তখন আমরা ভাঙন নিয়ে একটি রিপোর্ট করব।

স্থানীয়রা জানান, সীমান্তবর্তী তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা নদীর এই শাখা নদীটি থেকে বালি ও পাথর উত্তোলন করার ফলে ২০০৪ সাল হতে নদী ভাঙনের কবলে পড়ে দুটি গ্রাম। প্রতি বছর পাহাড়ি ঢলের তোড়ে নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে অসংখ্য ঘরবাড়ি ও কৃষির ওপর নির্ভরশীল মানুষগুলোর আবাদি জমি। ফলে নদীর পাড়ের প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় দিনাতিপাত করছে।

এ ছাড়াও ক্রমাগত ভাঙনে হুমকিতে রয়েছে অনেকের আবাদি জমি ও বসতভিটা। ইতোমধ্যে গ্রাম দুটির তিনশত বিঘার বেশি আবাদি জমি নদীগর্ভে চলে গেছে বলে ওই এলাকার ভুক্তভোগী লোকজন জানিয়েছেন। ভাঙনে আবাদি জমি, ফলের বাগান, বাঁশঝাড়, জমিজমা হারিয়ে অনেক পরিবার এখন নিঃস্ব।

বন্যায় প্রতি বছর নদী থেকে বালু এসে ফসলি জমিতে পড়ে চাষাবাদের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এভাবে ভাঙন অব্যাহত থাকলে দু’তিন বছরের মধ্যে গ্রাম দুটি বিলীন হওয়ার আশঙ্কা করছেন ভুক্তভোগীরা। নদীর এই ভাঙন থেকে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের রক্ষা করতে জরুরি ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছে ভাঙনকবলিত এলাকাবাসী।

ডালারপাড় গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, ২০০৪ সাল হতে নদী ভাঙন শুরু হয়। গত কয়েক বছরে ডালারপাড় ও বাগগাঁও গ্রাম দুটি নদীর অব্যাহত ভাঙনে আকারে অর্ধেক হয়ে গেছে। দানব এই নদীর হাত থেকে কিছুই বাদ যাচ্ছে না। নদী ভাঙনের ফলে কোটি টাকার সম্পদ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

বাগগাঁও গ্রামের সবচেয়ে বড় ও পুরাতন মসজিদটিও নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। আমরা এলাকাবাসী বেশ কয়েকবার ভাঙন প্রতিরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ বিভিন্ন মহলের কাছে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছি, কিন্তু কোনো প্রকার সুফল আজও পাইনি।

 

 
Electronic Paper