ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

চায়ের লক্ষ্য মাত্রা অর্জন হলেও কমেছে উৎপাদন

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
🕐 ৬:১৪ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৬, ২০২১

চায়ের লক্ষ্য মাত্রা অর্জন হলেও কমেছে উৎপাদন

বাংলাদেশে মোট ১৬৭টি চা বাগান রয়েছে। এরমধ্যে শুধু মৌলভীবাজার জেলায় চা বাগান রয়েছে ৯২টি। দেশে চা উৎপাদনে মৌলভীবাজারের চা বাগান গুলো গুরুত্বপূর্ন্ অবদান রাখে। তবে চা উৎপাদন কম বেশী অনেকটাই নির্ভর করে আবহাওয়ার উপর। ২০১৯ সালে চা চাষের ইতিহাসে রেকর্ড পরিমাণ চা উৎপাদন করে বাংলাদেশ। উৎপাদন হয় ৯৬ দশমিক ০৭ মিলিয়ন কেজি বা ৯ কোটি ৬০ লাখ ৬৯ হাজার কেজি। আর ২০২০ সালে চা উৎপাদন হয়েছে ৮ কোটি ৬৩ লাখ ৯৪ হাজার কেজি। তবে উৎপাদন কম হলেও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।

চা বোর্ড জানায়, গত বছর (২০২০) দেশে চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৭ কোটি ৫৯ লাখ ৪০ হাজার কেজি। প্রথম পাঁচ মাসে (মে পর্যন্ত) চা উৎপাদন ব্যাহত হয় আবওয়ার কারণে। করোনার জন্য চা উৎপাদনে শংকা থাকলেও শেষ পর্যন্ত সব বাগান চালু রাখতে পারায় চা উৎপাদন অব্যাহত ছিল। তাই লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশী চা উৎপাদন হয়। মোট উৎপাদন হয়েছে ৮ কোটি ৬৩ লাখ ৯৪ হাজার কেজি চা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন প্রথম পাচ মাসে চা উৎপাদন কম ছিল তাই কমেছে চায়ের উৎপাদন। কারণ হিসেবে বলছেন আবওয়ার কারণে উৎপাদন ব্যহত হয়। অতি বৃষ্টি ও অতি খরা কোনটাই চা উৎপাদনের জন্য উপযুক্ত নয়। বছরের শুরুর পাঁচ মাস চা উৎপাদনের জন্য আবহাওয়া অনূকুলে ছিলো না।তবে আবওয়া খারাপ হলেও বছরের মধ্যভাগ থেকে আবওয়া চা বান্ধব হওয়ায় সেই সুযোগে কোন কোন বাগান রেকর্ড উতপাদন বছর ২০১৯ থেকে ২০২০ সালে আরো বেশী উৎপাদন করেছে।

কুলাউড়ার গাজীপুর চা বাগান উর্ধতন ব্যবস্থাপক শেখ কাজল মাহমুদ জানান, ২০১৯ সাল থেকে ২০২০ এ উৎপাদন কমেছে ১২ শতাংশ। এই বাগানে ২০১৯ সালে চা উৎপাদন হয় ১১ লাখ ৯৬ হাজার কেজি এবং ২০২০ সালে ১২ লাখ কেজি টার্গেট থাকলেও উৎপাদন হয় ১০ লাখ ৪৭ হাজার। ২০২০ এ টার্গেট পুরণ না করতে পারায় ২০২১ সালে আবারও ১২ লাখ কেজি ধরা হয়েছে।

এদিকে নাহার চা বাগানের ব্যবস্থাপক পীযুষ কান্তি জানান, বালিশিরা ভ্যালিতে মোট ৩২ টি বাগান আছে তার মধ্যে আমাদের বাগানসহ ৩টি বাগান চা উৎপাদনের রেকর্ড ইয়ার ২০১৯ সাল থেকেও বেশী উৎপাদন করেছে। ২০১৯ সালে আমাদের বাগানে উৎপাদন হয়েছিল ২ লাখ ৫ হাজার ৩৮৭ কেজি কিন্তু ২০২০ সালে উৎপাদন হয়েছে ২ লাখ ৯ হাজার কেজি। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, অক্টোবরে দিকে যে বৃষ্টি হয়েছে তা চায়ের উপকার করেছে।

টি প্লান্টার্স অ্যান্ড ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টিপিটিএবি) সদস্য সচিব জহর তরফদার বলেন, ২০২০ এ শ্রীমঙ্গল নিলাম কেন্দ্রে করোনার শুরুতে গ্রাহকের উপস্থিতি খুব কম ছিল তাই নিলাম অনুষ্ঠান নিয়ে আমরা সমস্যায় ছিলাম এবং চা বিক্রিও কমেছিল, কিন্তু লকডাউন তুলে নেওয়ার পর আস্তে আস্তে গ্রাহকের হার বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে নিলামে আগের থেকে অনেক বেশি চা বিক্রি হচ্ছে। চাহিদা বেড়েছে বলে অভ্যন্তরীণ বাজারে ব্যাপকভাবে চা বিক্রি হচ্ছে।

বাংলাদেশ চা বোর্ডের উপ-পরিচালক (পরিকল্পনা) মুনির আহমেদ জানান, আমদানি নির্ভর চা খাত গত তিন বছর ধরে রপ্তানিমুখী হয়েছে। করোনাভাইরাসের মধ্যে উৎপাদন অব্যাহত রাখতে সরকারের পক্ষ থেকে সব বাগানে কীটনাশকসহ বিভিন্ন উপকরণ সরবরাহ করা হয়েছিল তাই করোনার সময়েও আমরা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশী চা উৎপাদন করেছি। চলতি বছরে আরও বেশী উৎপাদন হবে।

বাংলাদেশ চা সংসদ সিলেট শাখার চেয়ারম্যান জিএম শিবলি জানান, ২০২০ এ চা কম উৎপাদন হওয়ার কারণ আবওয়া ভাল ছিলনা তার উপর প্রথম দিকে করোনার কারণে আমরা চিন্তিত ছিলাম। তবে চলতি বছর গত বছর থেকে বেশী চা উৎপাদন হবে সে লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করছি।

 
Electronic Paper