বাস্তবের হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা
ডেস্ক রিপোর্ট
🕐 ১:০১ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৬, ২০২১
এক ছিল বাঁশিওয়ালা। সে তার বাঁশির সুরে শহরের সমস্ত ইঁদুরকে মেরে ফেলে শহরকে বাঁচিয়েছিল ইঁদুরের উৎপাত থেকে। গল্পটা শুনেই বোঝা যাচ্ছে, এই গল্পের নায়ক আর কেউ নয়। গ্রিম ভাইদের উপকথা হ্যামলিনের বাঁশিওয়ালার সেই বিখ্যাত বাঁশিওয়ালার কথাই বলা হচ্ছে। তবে কাহিনী সত্য হোক বা না হোক, মাইকেল বয়ার গত ২৬ বছর ধরে অভিনয়ের মাধ্যমে হ্যামলিনের বাঁশিওয়ালার চরিত্রকে প্রাণদান করে চলেছেন।
প্রতিদিন উজ্জ্বল রঙবেরঙের পোশাকে সেজে বাঁশি হাতে তিনি হেঁটে যান জার্মানির ৬০ হাজার বাসিন্দা নিয়ে গড়ে ওঠা হ্যামলিন শহরের মধ্য দিয়ে। যথারীতি পর্যটকদের মধ্যেও হ্যামলিনের বাঁশিওয়ালাকে ঘিরে কৌতূহলের অন্ত নেই। ভূলবশত কেউ তাকে মনে করেন রবিন হুড অথবা কোনো সুপারহিরো। তবে বেশির ভাগই অল্প সময়েই তাকে চিনে ফেলেন। স্বাভাবিকভাবেই পর্যটকদের মধ্যে তিনি ইনস্টাগ্রামের ছবি তোলার জন্য আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। হ্যামলিন শহরের পর্যটন শিল্পের অধিকাংশই এই বাঁশিওয়ালার রূপকথার ইঁদুর, বাঁশি, পোশাক ইত্যাদির ওপর নির্ভর করে গড়ে উঠেছে। স্থানীয় রেস্তোরাঁয় ইঁদুরের লেজের চিহ্ন সংবলিত থালা, বেকারিতে ইঁদুর আকৃতির পাঁউরুটি, স্যুভেনিরের দোকানগুলোতে পাইপার টি-শার্ট, মগ, ইঁদুর ইত্যাদি দেখতে ও কিনতে পারেন দর্শকরা।
এ ছাড়াও হ্যামলিনের জাদুঘরে একটি লাইট এন্ড সাউন্ড উপস্থাপনা হয়। এ ছাড়াও গ্রীষ্মকালে খোলা আকাশের নীচে অভিনেতারা সেই বিখ্যাত গল্পকে নাটকের মাধ্যমে উপস্থাপিত করেন। নিছক মজার গল্প হলেও হ্যামলিনের বাঁশিওয়ালার এই গল্প আজও বাসিন্দাদের আতঙ্কিত করে কিছু ক্ষেত্রে। এখনো বাবা মায়েরা সন্তানের বিপদের আশঙ্কা করে শঙ্কিত হন। শোনা যায় ১৬০২ সালে এমন এক ঘটনা সত্যিই ঘটেছিল এবং এই শহরের অসংখ্য শিশু চিরতরে নিখোঁজ হয়ে গেছিল। তারও আগে ১২৮৪ সালেও এমন শিশু নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা ঘটে। তবে ঐতিহাসিকদের মতে হ্যামলিন শহরের কর্মকর্তারা এমন ঘটনা বেশ কয়েকবার ঘটার পরেও কোন নির্দিষ্ট তারিখে শিশু নিখোঁজের ঘটনা ঘটে তা আড়ালেই রাখতে চান। এর কারণ কি সত্যিই এমন কোনো বাঁশিওয়ালার আগমন? নাকি আরো গভীর কিছু যা প্রকাশে বিপদের আশঙ্কা অনেক বেশি? উত্তর অজানা। তবে এ কথা স্পষ্ট যে উপকথাকে ঘিরে অসংখ্য সাহিত্য সৃষ্টি তা সম্পূর্ণ কাল্পনিক নয়, বরং হ্যামলিন শহরে তথা জার্মানিতে বহুবার নেমে এসেছে বাঁশির সুর, অভিশাপ হয়ে।