বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তিযুদ্ধ
মো. ফাহাদ হোসেন
🕐 ১২:৫৩ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৪, ২০২১
বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল ভর্তিযুদ্ধে লাখো শিক্ষার্থীর সঙ্গে লড়াই করে নিজের স্বপ্নের ক্যাম্পাসে প্রিয় বিষয়ে ভর্তি হওয়া চ্যালেঞ্জিং। গুচ্ছ পদ্ধতি এবার ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ করবে ১৯টি বিশ্ববিদ্যালয়। গুচ্ছপদ্ধতি গ্রহণকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইউনিটভিত্তিক প্রশ্নকাঠামোতে আনা হয়েছে ব্যাপক পরিবর্তন। অন্যদিকে, মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নকাঠামোতে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি এবার। স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজে চান্স পেতে চাইলে একজন শিক্ষার্থীর ইউনিটভিত্তিক কেমন প্রস্তুতি থাকা প্রয়োজন এ নিয়ে কয়েক জন মেধাবী শিক্ষার্থীর পরামর্শ তুলে ধরেছেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী মো. ফাহাদ হোসেন।
আহমাদ ফাহিমুল আবছার
স্থাপত্য বিভাগ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
বিজ্ঞান ইউনিটে ভালো করতে হলে প্রথমেই গুরুত্ব দিতে হবে পাঠ্যবইয়ের বেসিক ধারণাগুলো এবং সময় ব্যবস্থাপনার প্রতি। ভর্তি পরীক্ষায় গণিতে ভালো মার্ক পেতে হলে জোর দিতে হবে, শর্টকাট পদ্ধতিতে প্রশ্ন সমাধানের ওপর। পদার্থ ও রসায়নে অনেক ছোট প্রশ্ন দেওয়া থাকে, যেগুলো দ্রুত ও নির্ভুলভাবে সমাধান করতে পারলে ভর্তিযুদ্ধে নিজেকে অনেক দূর এগিয়ে নেওয়া যায়। জীববিজ্ঞান, বাংলা, ইংরেজি এবং আইসিটির জন্য পাঠ্যবইয়ের কোনো বিকল্প নেই। বাসায় নিয়মিত নিজে নিজে মডেল টেস্ট দেওয়া উচিত। এতে করে পরীক্ষার সময়ে নিজের আত্মবিশ্বাস ও সময় ব্যবস্থাপনা যোগ্যতা বাড়ানো সম্ভব। কোনো প্রশ্ন কমন না পড়লে সেটা নিয়ে বসে না থেকে সামনে এগিয়ে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
শাহরিয়ার জয়
শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ, বরিশাল।
মেডিকেল ভর্তি আগ্রহীদের বেশকিছু বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখা উচিত। যেহেতু মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা নৈর্ব্যক্তিক, তাই বই এর ছোট ছোট তথ্যমূলক প্রশ্ন অনেক গুরুত্ববহ। সঙ্গে বিগত ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করে স্পষ্ট ধারণা নিয়েও প্রস্তুতিকে যথার্থ রূপ দেওয়া যায়। কতক্ষণ পড়তে হবে সে বিষয়ে ধরাবাঁধা কোনো নিয়ম নেই। প্রস্তুতির বেলায় প্রতিটি মুহূর্ত যেন ফলপ্রসূ হয় সেদিকে নজর দিতে হবে। সব বিষয়ে সমান গুরুত্ব না দিলে, অনুতাপ অনিবার্য। মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় টেক্সট বই থেকেই প্রশ্ন করা হয়। পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান থেকে এ প্রশ্নগুলো হয়। পাশাপাশি ইংরেজি ও সাধারণ জ্ঞান থেকেও প্রশ্ন হয়ে থাকে। এজন্য সহায়ক বই কাজে আসবে কেবল এক লেখকের বইয়ের ওপর নির্ভর না করে একাধিক লেখকের বই আয়ত্তে রাখতে পারলে নিজের জন্য তা উপকারী। টেক্সট বইয়ের বিকল্প নেই।
নাছির উদ্দিন, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
পরীক্ষা নিয়ে সবারই একটা ভয় কাজ করে। সেটা যদি হয় ভার্সিটি ভর্তি পরীক্ষা তাহলে তো ভয়টা আরও বেড়ে যায়। সাজেশন হিসেবে বরাবরই আমি বলব, ইন্টারের যে বইগুলো ফলো করেছেন (হিসাববিজ্ঞান, ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা, বাংলা, ইংরেজি এবং আইসিটি) এই বইগুলো আরও একটু ভালোভাবে বুঝে পড়তে হবে। যেহেতু এখানে একটু অ্যাডভান্স লেভেলের বাংলা-ইংরেজি প্রশ্ন করা হয়, সেক্ষেত্রে বাজারে পাওয়া যায় এমন যেকোনো একটা বাংলা, একটা ইংরেজি বই কিনে পড়তে হবে। গুচ্ছ পদ্ধতিতে যেহেতু আইসিটি বিষয়টা নতুনভাবে যুক্ত হলো তাই সবার জন্য পরামর্শ হলো একটু মনোযোগ দিয়ে আপনার হাতে থাকা আইসিটি বইটার খুঁটিনাটি জেনে নেওয়া। সর্বোপরি, সর্বোচ্চ জ্ঞানের আধার পাবলিক বিশ^বিদ্যালয়ের আঙিনায় সবাইকে স্বাগতম।
এ.বি.এম ফিরোজ শাহরিয়ার, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
গুচ্ছ পদ্ধতিতে অংশ নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মানবিক ইউনিটে নম্বর বণ্টনে এবার আনা হয়েছে ব্যাপক পরির্বতন। সাধারণ জ্ঞানের পরিবর্তে এবছর থেকে নেওয়া হবে আইসিটি। তাই সন্দেহে বলা যায়, বেশিরভাগ প্রশ্ন পাঠ্যবই নির্ভরই হবে। বাংলার জন্য উচ্চমাধ্যমিকের বাংলা প্রথম পত্র, ব্যাকরণ অংশের জন্য নবম দশম শ্রেণির বাংলা দ্বিতীয় পত্র থেকে প্রস্তুতি নিতে পার। ইংরেজির ক্ষেত্রে এবার পাঠ্যবইকে অধিক প্রাধান্য দিতে পারে। তাই ইংরেজি গ্রামারের জন্য বেশি বেশি বিভিন্ন নিয়মগুলো বাসায় অনুশীলন করতে হবে। আইসিটির জন্য পাঠ্যবইয়ের কোনো বিকল্প নেই। এবার যেহেতু ২৫ মার্ক আইসিটির জন্য বরাদ্দ, সেহেতু আইসিটিকে গুরুত্ব দিয়ে প্রস্তুতি নেওয়া উচিত।