ভয়ঙ্কর সেই গৃহকর্মী গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ১:০৩ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২১, ২০২১
রাজধানীর মালিবাগে ফাঁকা বাসায় সত্তরোর্ধ বৃদ্ধা বিলকিস বেগমকে বিবস্ত্র অবস্থায় পাশবিক নির্যাতনের পর স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়া গৃহকর্মী রেখাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ২০ জানুয়ারী, বুধবার রাতে ঠাকুরগাঁও থেকে ওই গৃহকর্মীকে গ্রেফতার করে শাহজাহানপুর থানার একটি দল। ২১ জানুয়ারী,বৃহস্পতিবার মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার জামিল হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
বছর তিনেক ধরে কিডনিসহ নানা সমস্যায় ভুগছেন বৃদ্ধা বিলকিস বেগম। মালিবাগের বাসায় ছেলে ও পরিবারের সঙ্গে থাকেন তিনি। দীর্ঘদিন শয্যাশায়ী হওয়ায় তার দেখা শোনার জন্য বাসায় রাখা হয় গৃহকর্মী রেখাকে।
গত সোমবার বিলকিস বেগমের পরিবারের সদস্যরা বাইরে যান। এ সময় বিলকিস বাসায় একা ছিলেন। এই সুযোগে তাকে বিবস্ত্র করে পাশবিকভাবে পেটাতে শুরু করে গৃহকর্মী রেখা।একপর্যায়ে হাতের কাছে যা পায় তাই দিয়েই চালায় নির্যাতন। আলমারির চাবির জন্য বুকের উপর চেপে বসে। বঁটি হাতেও তেড়ে আসে রেখা। একসময় অসহায়ের মতো আত্মসমর্পণ করেন বৃদ্ধা। গলা থেকে চেইন খুলে নেয় রেখা। হাতের বালাও খুলে পড়ে নেয়। এরপর অসুস্থ বৃদ্ধাকে টেনে নিয়ে বাধ্য করে আলমারি খুলে দিতে। ড্রয়ার খুলে স্বর্ণ, নগদ টাকা ও মোবাইল নিজের কব্জায় নেয় রেখা। সবকিছু ব্যাগে ভরে বৃদ্ধাকে বাসায় তালা মেরে বাসার গেট খুলে ব্যাগসহ বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ে ওই ভয়ঙ্কর গৃহকর্মী।
ভয়ঙ্কর ওই ঘটনার সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজটি প্রকাশ করে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল। এরপরই ইন্টারনেটে ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায়।
এই ঘটনায় বিলকিস বেগমের মেয়ে মাহবুবা বেগম বাদী হয়ে রাজধানীর শাজাহানপুর থানায় হত্যাচেষ্টা ও চুরির অভিযোগে মামলা করেন।
শাজাহানপুর থানা পুলিশ জানায়, মামলা হওয়ার পরদিনই রেখার স্বামী এরশাদকে গ্রেফতার করা হয়। এরশাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাকে সঙ্গে নিয়ে ঠাকুরগাঁওয়ে অভিযানে যায় পুলিশ। গতকাল রাতে রেখাকে তার গ্রামের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ জানায়, লুট হওয়া স্বর্ণালংকার ও অর্থ রেখার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। রেখা ও তার স্বামীকে ঢাকায় আনা হচ্ছে।
নির্যাতিত বৃদ্ধার ছেলে শহীদুল ইসলাম সুজন বলেন, এক বছর আগে মাসিক ছয় হাজার টাকা বেতনে মেয়েটিকে বাসায় কাজে রাখা হয়েছিল। তার দায়িত্ব ছিল আমার বৃদ্ধ মাকে সেবাযত্ন করা।
তিনি আরও জানান, তাদের বাসার ভাড়াটিয়া হিসেবেই থাকতো গৃহকর্মী রেখা ও তার স্বামী এরশাদ আলী। সেখান থেকে পরিচয়ের সূত্র ধরেই বৃদ্ধা মাকে দেখাশোনার জন্য রেখাকে বাসার কাজে রাখা হয়। তার স্বামী এরশাদ একজন গার্মেন্টসকর্মী।