উন্নয়ন প্রকল্প থাকুক বিতর্কমুক্ত
সম্পাদকীয়
🕐 ১২:৩০ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৯, ২০২১
যে শিক্ষাঙ্গন থেকে দেওয়া হয় নৈতিকতার পাঠ ও জীবন বোধের নির্মিতি সেখানে কোনো অপতৎপরতা কাম্য নয় কোনো অবস্থাতেই কাম্য নয়। অথচ সেটাই ঘটছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও দুর্নীতিসহ নানা রকম বিতর্কে জড়িয়ে পড়ছে। গতকাল খোলা কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) তিনটি উন্নয়ন প্রকল্পে রি-টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। আগেরবার পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ দিতে না পারায় ‘নতুন নাটক’ বলছেন অনেকেই। প্রায় ২৫ কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষে এ তিন উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ রি-টেন্ডার করার অভিযোগ উঠেছে প্রকৌশল শাখা ও পরিকল্পনা উন্নয়ন দফতরের প্রকৌশলীদের বিরুদ্ধে। টেন্ডারের সকল শর্ত পূরণ করার পরও নিয়ম বহির্ভূতভাবে এ রি-টেন্ডার আহ্বান করা হলো, বলছেন অনেকেই। টেন্ডারবাণিজ্যের সঙ্গে রাবি প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন প্রকৌশলী-কর্মকর্তা ও কর্মচারী সরাসরি যুক্ত বলেও রয়েছে অভিযোগ।
জানা গেছে, প্রায় ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে রাবি শিক্ষক কোয়ার্টারের জন্য ১০ তলা ভবন নির্মাণকাজটি সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে মেসার্স শিকদার কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড বিল্ডার্সের পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তাকে না দিয়ে কাজটি রি-টেন্ডার করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তন সংস্কার ফেজ-১ এর কাজটির সর্বনিম্ন দরদাতা পিইএল অ্যান্ড জিজিইএল জেভি এবং প্রায় ৬ কোটি টাকার কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তন সংস্কার ফেজ-২ এর সর্বনিম্ন দরদাতা এইচসিপিএল-সিটিএল সিটিআইজেভিও পায়নি কাজ। বোটানি বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার গোলাম কাউসার চাকরিতে যোগদানের পর থেকেই কোটি কোটি টাকার ঠিকাদারি কাজ করে আসছেন। ঠিকাদারি কাজে জড়িত প্রকৌশল শাখার সহকারী স্টোর কিপার রাতুল। তিনি অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আবুল কাশেমের অধীনে স্টোরের দায়িত্ব পালন করেন। তারা বর্তমানে রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ে বড় বড় কাজের ঠিকাদারি করেন বেনামে।
একাধিক ঠিকাদারের অভিযোগ, টেন্ডার ডন, রাতুল, মামুনসহ পছন্দের ঠিকাদারদের মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ঠিকাদারি কাজ পাইয়ে দেন নূরে আলম মামুন। তিনি প্রকৌশল শাখার নিম্নমান সহকারী সমমান (চেইনম্যান)। অথচ তার মাধ্যমে ‘পাঁচ শতাংশ টাকা’র বিনিময়ে কাজ বিনিময় হয় বলে দাবি অভিযোগকারীদের। এ ব্যাপারে বোটানি বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার গোলাম কাউসার বলেন, আগে ঠিকাদারি কাজ করেছি। বর্তমানে আমার লাইসেন্স বাতিল হয়েছে। তাই আর কাজ করি না। এরপরই ফোন কেটে দেন তিনি। প্রকৌশল শাখার সহকারী স্টোর কিপার রাতুল দাবি করেন, তিনি ঠিকাদারি কাজ করেন না। জড়িতও ছিলেন না। ঠিকাদার মমতাজুর রহমান ডন বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি নিয়মিত ঠিকাদারি কাজে অংশগ্রহণ করি এবং ইজিপির মাধ্যমে ব্রাইট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্সে পাওয়া কাজগুলো ক্রয় করে কাজ করি।
অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবুল কাশেম বলেন, এসব ব্যাপারে আমার কোনো কিছু জানা নেই। প্রধান প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দিয়েই কল কেটে দেন তিনি। উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে এমন জল ঘোলা করার পরিস্থিতি অপ্রত্যাশিত। নিজেদের লাভ-লোভের কারণে যারা ঐতিহ্যবাহী উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠানকে বিতর্কে ফেলছেন; এদের বিরুদ্ধে সত্বর পদক্ষেপ নেওয়া সময়ের দাবি।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228