নানা উৎসব
ডেস্ক রিপোর্ট
🕐 ১২:২০ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৫, ২০২১
পৃথিবীজুড়ে রয়েছে অযুত মানুষের নিযুত সংস্কৃতি। সেই সংস্কৃতির অংশ হয়ে আছে নানা রকম অনুষ্ঠান আর উৎসব। হাজারো বর্ণিল উৎসব উদযাপিত হয় প্রতি বছর। সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় উৎসবগুলোই আমাদের চোখে পড়ে। তবে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম হলেও কিছু উৎসবে আমরা আকৃষ্ট না হয়ে পারি না। আসুন জেনেনি পৃথিবীর নানা প্রান্তের এমন কিছু আয়োজন।
মহা মস্তক অভিষেক, ভারত : ৯৮১ খ্রিস্টাব্দ হতে উদযাপিত হয়ে আসছে এই উৎসব। ১৭ মিটার উঁচু বিশাল আকৃতির এক শিলা দিয়ে তৈরি বাহুবলীর একটি মূর্তি অনুমোদিত হওয়ার পর থেকে। বাহুবলী কথাটির অর্থ হলো হাতের জোর। আর বাহুবলী হলেন জৈন সম্প্রদায়ের লোকজনদের অনেক সম্মানিত একজন দেবতা। তাদের বিশ্বাস, বাহুবলীর বসবাস ছিল প্রায় ২০ হাজার বছর আগে। সেই সময়ে তিনি তার ভাই ভারতকে আভানাথ রাজ্যের শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন।
তার প্রকা- বাহু শক্তির বলেই সহোদর তার হাতেই জীবন হারায়। নিজের এই কাজটির জন্য তিনি বিক্ষুব্ধ হয়ে যান এবং প্রায়শ্চিত্ত স্বরূপ কাপড় পরিধান প্রত্যাখ্যাত করেন। এ ছাড়াও তিনি তার সব চুল ছেঁটে ফেলেন, বিবস্ত্র অবস্থায় অনড় হয়ে একই জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকেন গোটা একটি বছর। মূর্তি স্থাপনের অনুষ্ঠানের আয়োজনে প্রায় বিশ লাখ ভক্ত উপাসকরা ১০ দিন ধরে বাহুবলীর মূর্তি ধৌত করেন। এই মূর্তি ধৌতকরণ এতটাই মঙ্গলজনক মানা হয় যে, ২০০৬ সালে একজন বিশিষ্ট জৈন ১.৩ মিলিয়ন ডলারে নিলাম জিতে সবার প্রথমে বাহুবলীর মূর্তি ধোয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেন।
নাকি সুমো, জাপান : প্রতি বছর এপ্রিল মাসে জাপানের টোকিওতে নাকি সুমো নামের অদ্ভুত এক খেলার উৎসব হয়। সুমো শব্দটি দেখেই ভাববেন না এটি দৈত্যাকার সুমো পালোয়ানদের কোনো কুস্তি খেলা। কারণ নাকি সুমোতে প্রত্যেক সুমো পালোয়ানের কোলে থাকে অনূর্ধ্ব দুই বছরের এক শিশু। খেলার ময়দানে উভয় সুমো তাদের কোলের শিশুকে আরামদায়কভাবে ধরে দোল দিতে থাকে আর রেফারি পালাক্রমে উভয় শিশুর দিকে চেয়ে ‘নাকি নাকি’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। যার কোলের শিশুটি পরে কাঁদবে সেই হবে বিজয়ী!
লা টমাটিনা, স্পেন : ২০১১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত বলিউডের সিনেমা জিন্দেগি না মিলেগি দোবারার কল্যাণে ‘লা টমাটিনা’ বা টমেটো উৎসবের সঙ্গে আমরা অনেকেই পরিচিত। প্রতি বছর আগস্ট মাসের শেষ বুধবার স্পেনের বুনোল শহরে মহাসমারোহে উদযাপিত হয় এই উৎসব। উৎসবের স্থায়িত্বকাল হয় মাত্র ঘণ্টা দুয়েক। তবে এই ছোট্ট সময়ের জন্য সাগ্রহে অপেক্ষারত থাকে বিশে^র বিভিন্ন দেশের হাজারো মানুষ। এখানে কোনো জয়-পরাজয় নেই, কেবল আনন্দ করাই এর মুখ্য উদ্দেশ্য। এজন্য এর নিয়মও বেশ সহজ। নির্ধারিত স্থানে ট্রাকের পর ট্রাক ভর্তি পাকা টসটসে টমেটো আসবে।
আপনার কাজ কেবল সেগুলো হাতে নিয়ে চাপ দিয়ে ফাটিয়ে আপনার বন্ধু কিংবা সঙ্গীদের গায়ে ছুড়ে মারা। উৎসব শুরুর কয়েক মিনিটের মাঝেই অংশগ্রহণকারীরা আপাদমস্তক লাল হয়ে যান আর বুনুলের রাস্তায় হয় টমেটো সসের বন্যা! উৎসবটি এতটাই জনপ্রিয়তা পেয়েছে যে এখানে যোগ দিতে হলে অন্তত ৩ থেকে ৪ মাস আগেই আবেদন করতে হয়।