নিস্তব্ধ খুবি ক্যাম্পাসে নেই স্বস্তি
আল মামুন সরদার, খুবি প্রতিনিধি
🕐 ১:১১ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১০, ২০২১
প্রাণঘাতী করোনা পরিস্থিতিতে সুনসান নীরবতা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) ক্যাম্পাসজুড়ে। প্রধান ফটক থেকে শুরু করে অদম্য বাংলা, নেই কোনো কলরব। বন্ধুদের মাঝে গল্প জমানো আড্ডা ও খুনসুটিগুলো এখন খুঁজে ফেরে প্রিয় মুখ। হাজারো গল্পের সাক্ষী খুবি ক্যাম্পাসের চায়ের দোকান, কটকা, ক্যাফেটেরিয়া এখন নিস্তব্ধতায় ভরা। নেই নানাবিধ অনুষ্ঠান, শিক্ষার্থীদের আবেগ জাগানিয়া মানবিক, সামাজিক কর্মকান্ড কবে আসবে সেই সুদিন তার অপেক্ষায় রয়েছে প্রতিটি প্রাণ।
শূন্য ক্যাম্পাস সেজেছে প্রকৃতির নতুন রঙে। ১৭ মার্চ ২০২০ সালের পর থেকে খুবি ক্যাম্পাসে ফিরতে
পারেনি তারা। দুই সেমিস্টার পরীক্ষা রয়েছে স্থগিত। ছাত্রাবাস না খোলা পর্যন্ত পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে না। ফলে শিক্ষার্থীরা ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শিক্ষা জীবন নিয়ে তাদের হতাশা ও কষ্টের কথা জানাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, অনেক প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে দিন কাটছে। এর মধ্যে যদি সেশন জটে আটকে যাই তাহলে সংকট আরও বাড়বে।
খুবির ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মাধুরী সরকার জানান, এক বুক স্বপ্ন নিয়ে ভর্তি হয়েছিলাম খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে। মনে হচ্ছিল আগামী দিনগুলো খুব ভালো কাটবে। কিন্তু ক্যাম্পাস বন্ধ হওয়ায় ‘শুরু হয়ে হইল না শেষ’ এমনি মনে হচ্ছে। এখন ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা ঘিরে ধরেছে।
আইন ডিসিপ্লিনের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সিফাত আলম সান হতাশা নিয়ে বলেন, অনলাইনে একটু-আধটু যা চলছে তাতে ভবিষ্যৎ নিয়ে আমাদের অনিশ্চয়তা কাটছে না। করোনা না থাকলে এতদিনে শেষ বর্ষের পরীক্ষা শেষ হয়ে যেত। আমরা চাকরির পরীক্ষাগুলোতে অংশগ্রহণ করতে পারতাম। কিন্তু পরীক্ষা না হওয়ায় তা আর সম্ভব হচ্ছে না। আমরা অনিশ্চিত সময়ের দিকে যাচ্ছি।
এ বিষয়ে ফিসারিজ অ্যান্ড মেরিন রিসোর্স টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের সহকারী অধ্যাপক মো. শাহিন পারভেজ দৈনিক খোলা কাগজকে বলেন, ক্যাম্পাস বন্ধ থাকলেও সকল বর্ষের ক্লাস অনলাইনে সমাপ্ত হয়েছে। আগামী ১-২ মাসের মধ্যে ক্যাম্পাস খুলতে পারলে প্রয়োজনে আমরা সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও অতিরিক্ত রিভিউ ক্লাস নিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে পরীক্ষা গ্রহণ ও ফলাফল প্রস্তুত করতে সক্ষম হব।
উন্নয়ন অধ্যয়ন ডিসিপ্লিনের সহযোগী অধ্যাপক কাজী হুমায়ুন কবীর দৈনিক খোলা কাগজকে বলেন, বিশ্বের গ্লোবাল র?্যাংকিংয়ে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন ক্লাস ও পরীক্ষা নিয়ে গ্রেড পয়েন্ট শিথিল করে ফলাফল দিচ্ছে। এতে সেশন জট বা ইয়ার লস এড়ানো যায়। আবেগের ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা আবার নতুন উদ্যম নিয়ে ফিরে আসবে, স্বপ্ন গড়বে। এভাবেই খুবি বিশ্বে স্থান করে নেবে এই স্বপ্ন দেখি।
খুবি উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান খুবিসাসের মাসিক সভায় ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে শিক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। আশা করি আবার শিক্ষার্থীদের আগমনে ক্যাম্পাস প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে।