আমায় নিয়ে ট্রোল করে কারও ঘরে পয়সা এলে আসুক: শ্রাবন্তী
বিনোদন ডেস্ক
🕐 ৮:০৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ০৩, ২০২০
না কোনও দিন নিজেকে বদলাবেন না শ্রাবন্তী। ইন্ডাস্ট্রির হ্যাপেনিং গার্ল। সম্প্রতি তার স্বামী রোশনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া উত্তাল। একদিকে সঞ্চালনার কাজ, অন্য দিকে নতুন ওয়েব সিরিজে অভিনয় সামলানোর মাঝে শ্রাবন্তী বললেন, আড়াই ঘণ্টা টানা এপিসোড শ্যুট হয়। এক দিনে তিনটে করে এপিসোড শ্যুট করি। প্রায় ১৫০ এপিসোড হয়ে গেল। দারুণ মজা করছি। কত লড়াকু মেয়ের স্বপ্ন শুনছি। আমিও সেখান থেকে রোজ অনুপ্রাণিত হচ্ছি। আর সঞ্চালনা কিন্তু সবাই পারে না!
সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক কিছু লেখা হচ্ছে। এরা তো কাউকে ছাড়ে না! যাদের কাজ নেই তারা পড়ছে এই সব গসিপ। দেখুন, এই সময় কেউ এ ধরনের খবর করে যদি পয়সা পায় পাক। আমি আমার সম্পর্ক বা বিয়ে নিয়ে একটা কথাও বলব না। প্লিজ! জানতে চাইবেন না! বলেন শ্রাবন্তী।
লকডাউনে ছেলে অভিমন্যুর সঙ্গে অনেকটা সময় কাটালেন শ্রাবন্তী। শ্রাবন্তী উল্টো প্রশ্ন করে বলেন, ওঠানামা কোন মানুষের জীবনে নেই বলুন তো! সেলিব্রিটি হলে সেটা নিয়ে শুধু চর্চাই নয়, বিষয়টা কুরুচিকর হয়ে যায়। এই মানসিকতা শুধু খারাপ নয়, অন্যায়!
শ্রাবন্তী ফিরে যান তার কাজের প্রসঙ্গে। জানান, সোহমের সঙ্গে জুটি বেঁধে ‘হইচই’-এর নতুন ওয়েব সিরিজ ‘ইনটিউশন’-এ কাজ করে তিনি খুশি। এ ধরনের কনটেন্ট নির্ভর চিত্রনাট্যে অভিনয়ের সুযোগ অনেক বেশি, জানিয়ে দিলেন নায়িকা।
তবে কাজের মধ্যে থাকলেও আর সকলের মতোই তিনি ভুলে যেতে চান এই বছরকে। বললেন, এখনও অনেকগুলো দিন বাকি। মনে হয় আর কিছু খারাপ ঘটবে না তো পৃথিবীতে! সবচেয়ে খারাপ লাগে সেই সব মানুষের কথা ভেবে যারা লকডাউনে কাজ হারালো, স্বজন খোয়ালো। আমাদের কোনও মতে জমানো টাকায় চলল। কিন্তু যারা দিনে রোজগার করে?
সুর বদল শ্রাবন্তীর। মন কেমন সেই সব হারানো মানুষের জন্য। প্রশাসনের সাহায্যে নিজের সাধ্যমতো অবশ্য তিনি পাশে দাঁড়িয়েছেন কিছু মানুষের। কিন্তু ভ্যাকসিন না এলে আর সকলের মতোই সামনের দিন নিয়ে তিনিও চিন্তিত। ঠিক যেমন ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা নিয়েও তার ভাবনা বাড়ছে, এই বছরটা বিনোদন দুনিয়ার জন্যই খুব খারাপ। সিঙ্গল স্ক্রিন যে ভাবে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে! আমার চারটে ছবি রিলিজ করার কথা হলে। অপেক্ষা করা ছাড়া আর কিছু করার নেই।
একটানা কমার্শিয়াল ছবিতে কাজ করার পরে শ্রাবন্তী অন্য ধারার ছবি করেছেন। পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘কাবেরীর অন্তর্ধান’-এ তিনি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে অভিনয় করেছেন। অন্য দিকে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে ‘ছবিয়াল’ নিয়েও তিনি আশাবাদী। নিজের কাজ নিয়ে বলতে গিয়ে বললেন, প্রত্যেকটা চরিত্র আলাদা। ‘আজব প্রেমের গল্প’ এবং ‘লকডাউন’ হলে রিলিজ করলে আমার কাজের ভিন্নতা দর্শক নিশ্চয় বুঝতে পারবেন।
লকডাউনে হঠাৎ করেই অপর্ণা সেনের পরিচালনায় তার ‘গয়নার বাক্স’ ছবির কিছু দৃশ্য ভাইরাল হয়েছে। মানুষ তা হলে পরিণত শ্রাবন্তীকেই দেখতে চায়। এই ভুলতে চাওয়ার বছরে লকডাউনে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটিয়ে তিনি খুশি। বললেন, আমার ছেলেকে সময় দিতে পারলাম। ও বড় হয়ে কী হবে? জীবন নিয়ে ওর কী ভাবনা, এখন বড় হচ্ছে তো, আমাদের একে অন্যের জন্য বেঁধে বেঁধে থাকতে হবে।
ইন্ডাস্ট্রি বলে, শ্রাবন্তী খুব মুডি! শ্রাবন্তী কিন্তু বলছেন, একেবারেই নয়। আসল হল পরিস্থিতি। যখন গুছিয়ে সংসার করার কথা তখন সংসার করেছি, আবার যখন কাজ করার কথা, তখন কাজ করেছি। বছরে ছ’টা ছবি করলেই এক নম্বর হওয়া যাবে, এমন কোনও গ্যারান্টি আছে? নেই। আবার একটা ছবিতে অসাধারণ অভিনয় করেও সারা জীবন দর্শকের মনে থাকা যায়।
বার বার বলেন, কাজ তার জীবন। মন্দির। সিনেমার সঙ্গে সঙ্গে তাই জিম খোলার কথা ভেবেছেন তিনি। লকডাউনে মানুষ আরও স্বাস্থ্য সচেতন হয়েছেন। ইমিউনিটি বাড়ানোর জন্য জিম তো জরুরি। সে কথা মাথায় রেখেই জিম করলাম। কিন্তু নিজের চেহারা এত সুন্দর জিম করেই নাকি কড়া ডায়েটও চলে? বললেন, ওই নো-কার্ব, ফ্যাট ফ্রি, ফল-জলের ডায়েট আমি কোনও দিন করিনি। আমার গ্যাসট্রিকও আছে। তাই দু’ঘণ্টা অন্তর খাই। সব খাই। তবে পরিমাণে অল্প।
নতুন বছরে শ্রাবন্তীকে কি নতুন রূপে পাবে দর্শক? সঙ্গে সঙ্গে জবাব আসে, দর্শক তাদের ‘শ্রাবন্তী’-কে তৈরি করেছে। তাদের ভালবাসাতেই শ্রাবন্তী আছে। নতুন চরিত্রের মধ্যে তারা শ্রাবন্তীকে ফিরে পাবে। খবর: আনন্দবাজার।