মাস্ক না পরলে হতে পারে জেলও
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৬:৩৬ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৩০, ২০২০
কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে ঘরের বাইরে মাস্ক ছাড়া বের হলে জরিমানা করা হবে। এতেও লোকজন সতর্ক না হলে ভ্রাম্যমাণ আদালত সাজা দেবে, যেতে হতে পারে কারাগারেও। এমন সতর্কতা এসেছে সরকারের পক্ষ থেকে। বিষয়টি জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেন, ‘সবার মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে শক্ত অবস্থানে সরকার। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্টদের ‘কঠোর অবস্থানে’ যাওয়ার নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।’
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠক হয়। গণভবন প্রান্ত থেকে প্রধানমন্ত্রী এবং সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রীরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দেন।
এ সময় মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আগেই আমরা বলেছি, এই সপ্তাহ থেকে (যারা মাস্ক পরছে না তাদের বিরুদ্ধে) আরেকটু স্ট্রং অ্যাকশনে যাব। আমার মনে হয়, ঢাকার বাইরে পজিটিভ; ডিসিরা বলছেন, জেলা সদরে মানুষ মোটামুটি কেয়ারফুল (সচেতন) হচ্ছে। ঢাকা শহরে বোধহয় এখনও পুরোপুরি কেয়ারফুল হয়নি; তবে মোটামুটি একটা বার্তা যাচ্ছে যে, (মাস্ক না পরলে) ফাইন হয়ে যাবে, ফাইন (জরিমানা) দিতে হবে ৫০০ টাকা। বলেছি এখন থেকে ম্যাক্সিমাম ফাইন করো, না হলে আমরা আরও ইনস্ট্রাকশন দেব। বলেছি সর্বোচ্চ জরিমানা করতে।’
তিনি বলেন, ‘আস্তে আস্তে আমরা...তারপর জেলে যেতে হবে। কী করবে, না যদি শোনে, আমরা তো উই ক্যান নট টেক রিক্স (ঝুঁকি নিতে পারি না), আমাদের যতটুকু সম্ভব করতে হবে, আমরা বলে দিয়েছি। আমরা আর সাত থেকে ১০ দিন দেখব, তারপর ইনস্ট্রাকশন দিয়ে দেব- আরও কঠোর পানিশমেন্টে (শাস্তি) যাও। যথাসম্ভব বেশি করে ফাইন করা হবে এবং স্ট্রং পানিশমেন্ট দেয়া হবে।’
তার পরও মাস্ক না পরলে কী হবে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘তার পরে জেলে যেতে হবে, লোকজন যদি সতর্ক না হয় আর কি করা যাবে। আমরা তো ঝুঁকি নিতে পারি না, আমাদের যতটুকু সম্ভব করতে হবে, আমরা বলে দিয়েছি।’
মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে সারা দেশে যেভাবে ভ্রাম্যমাণ আদালত চলছে, সেভাবে আরও ৭-১০ দিন চালিয়ে এর পর থেকে তাদের আরও কঠোর শাস্তি দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
এদিকে মন্ত্রিসভা বৈঠকের পর ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সংগ্রহের উদ্যোগ নেয়া অক্সফোর্ডের তৈরি করোনাভাইরাসের তিন কোটি ভ্যাকসিন বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব ড. খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, টিকা কেনার জন্য ৭৩৫ কোটি ৭৭ লাখ টাকা এরই মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনকূলে ছাড় দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার এই টিকা কিনে আনবে এবং বিনামূল্যে তা সরবরাহ করবে।’
বিনামূল্যে টিকা প্রয়োগের ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি কঠোরভাবে দমন করা হবে বলেও জানান তিনি।
কোভিড-১৯-এর দ্বিতীয় ধাক্কা মোকাবিলায় মাস্ক না পরলে সর্বোচ্চ জরিমানা করার নির্দেশনা দেওয়া হয় মন্ত্রিসভায়। তবে জরিমানার সর্বোচ্চ পরিমাণ নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব ড. খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘এভাবে এক সপ্তাহ দেখার পর মাস্ক না পরার দায়ে কারাদণ্ড দেওয়ার মতো কঠোর অবস্থানে যেতে পারে সরকার।’