কিন্ডারগার্টেন শিক্ষক-কর্মচারীদের মানবেতর জীবন
মোস্তাক আহমেদ, কাউনিয়া (রংপুর)
🕐 ৭:৪৭ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৯, ২০২০
মহামারী করোনা দুর্যোগের কারণে সরকারি নির্দেশে উপজেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে কিন্ডার গার্টেনের শিক্ষক-কর্মচারীরা। তাদের বেতন ভাতা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কাউনিয়া উপজেলা ও হারাগাছ পৌরসভার কিন্ডার গার্টেনের শিক্ষক-কর্মচারীরা পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা দীর্ঘ আট মাস ধরে মানবেতর জীবনযাপন করছে। শিক্ষার্থীদের বেতনের টাকায় চলা এ সব শিক্ষকদের সহায়তায় কেউ এগিয়ে না আসায় পরিবার-পরিজন নিয়ে দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছে।
জানা গেছে, কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ পৌরসভাসহ ৬ ইউনিয়নে প্রায় ৩১টি কিন্ডারগার্টেনে প্রায় ৪ শতাধিক শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োজিত রয়েছে। এরা প্রায় ১৪ হাজার কোমলমতি শিক্ষার্থীকে পাঠদান করে আসছিলেন। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের বেতনের টাকায় পরিচালিত হয়। এমনকি শিক্ষার্থীদের বেতনের টাকায় শিক্ষক-কর্মচারীরা বেতন-ভাতা পেয়ে থাকেন।
শিক্ষার্থীদের বেতনের টাকা ও প্রাইভেট টিউশনের টাকা দিয়ে কোনোমতে চলতো পরিবারের ভরণপোষণ। কিন্তু প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের বেতন দেওয়া বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি বন্ধ রয়েছে প্রাইভেট টিউশনিও। ফলে সব দিকের আয় বন্ধ হয়ে গেছে।
সামাজিক মর্যাদা বিবেচনা করে এদের দেওয়া হয় না সরকারি কোনো প্রকার সাহায্য। এদের দু’একজনের নাম সরকারি সাহায্যের খাতায় উঠলেও লাজ-লজ্জার কারণে লাইনে দাঁড়িয়ে ত্রাণ নিতেও পারছে না। সরকার ননএমপিওভুক্ত কিছু শিক্ষক-কর্মচারীদের কিছু সহযোগিতা করেছে। কিন্তু তা দিয়ে কি মাসের পর মাস চলা যায়।
কয়েকজন কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষক বলেন আমরা সরকারি-বেসরকারি কোনোটাই না, পাবলিক চালিত প্রতিষ্ঠান। বেতন নয় ভাতা পাই। লকডাউনে তাও বন্ধ হয়ে গেছে। এখন আমরা পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে আছি।
সবুজ কিন্ডারগার্টেনের অধ্যক্ষ সাইদুল ইসলাম ও কেয়ার শিশু নিকেতনের অধ্যক্ষ মোশারফ হোসেন বলেন, ছেলে-মেয়েদের নতুন কাপড় কিনে দিতে পারছি না, এখন পেটের ভাত জোগাড় করাই যেখানে দায় সেখানে বিলাসিতার চিন্তা করা কঠিন ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাধ আছে সাধ্য নেই অবস্থা। সরকারিভাবে সাহায্যের ব্যবস্থা না করলে কিন্ডারগার্টেনের সকল শিক্ষকের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠবে।
কাউনিয়া ইউএনও উলফৎ আরা বেগম জানান, লকডাউন চলাকালে কিছু শিক্ষক-কর্মচারীকে সহযোগিতা করেছি। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ননএমপিও কারিগরি, মাদ্রাসা ও স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দকৃত অনুদান ৫ লাখ ৫৭ হাজার পাঁচশ টাকা বিতরণ করেছি। তবে সত্যিই তারা বেশ কষ্টে আছে।