ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ফুটবল জাদুকরের চিরবিদায় শোকে মুহ্যমান বিশ্ব

সম্পাদকীয়
🕐 ১:৩৩ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৭, ২০২০

ম্যারাডোনার ফুটবল ম্যাজিকে দীর্ঘদিন আচ্ছন্ন ছিল বিশ্ব। এমনকি তিনি খেলা থেকে অবসর নেওয়ার পরও কমেনি তার প্রতি মোহ, আচ্ছন্নতা। নানাভাবেই উল্লেখযোগ্য তিনি। ফি’র ক্ষেত্রে গড়েন বিশ্বরেকর্ড, ছিলেন সর্বকালের সেরা ফুটবলার, চারটি বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ, ১৯৮৬ আর্জেন্টিনার বিশ^কাপ জয়, ‘ঈশ্বরের হাত’ দিয়ে করেছেন অবিস্মরণীয় গোল! সবাইকে কাঁদিয়ে চলে গেলেন বিশ্বসেরা এ ফুটবলপুত্র। কিংবদন্তি ফুটবলার ডিয়োগো ম্যারাডোনার মৃত্যু হয়েছে। গত বুধবার রাতে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে। তার বয়স হয়েছিল ৬০ বছর। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, নভেম্বরের প্রথম দিকে মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধার কারণে অস্ত্রোপচার হয়েছিল ম্যারাডোনার। হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরার দুই সপ্তাহ পর তার মৃত্যু হলো। সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলারখ্যাত ম্যারাডোনা আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ জেতান ১৯৮৬ সালে।

খেলেছেন বোকা জুনিয়র্স, নাপোলি ও বার্সেলোনায়। ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে ছিটকে দেওয়ার পথে তার বিতর্কিত ‘ঈশ্বরের হাত’ দিয়ে গোল করেন তিনি। আর্জেন্টাইন নিউজ ‘আউটলেট ক্লারিন’ গত বুধবার বাংলাদেশ সময় রাতে ব্রেকিং নিউজ দেয়। ম্যারাডোনার মৃত্যুর খবর প্রকাশের পর তা বিশ্বে আলোড়ন তোলে। মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচারের ৮ দিন পর গত ১১ নভেম্বর হাসপাতাল ছাড়েন ম্যারাডোনা। গত বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে বেসরকারি ওলিভোস ক্লিনিক থেকে তাকে বাড়ি আনা হয়। ওই সময় তাকে একনজর দেখার জন্য অগণিত দর্শক ভিড় করেন এবং তারা ছবি তোলেন। তাকে বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সের পেছন পেছন ছুটতে থাকেন আর্জেন্টাইন টিভি সাংবাদিকরা। তার আইনজীবী মাতিয়াস মোরলাহাস বলেন, অ্যালকোহল আসক্তি কাটানোর জন্য চিকিৎসা চলছিল। বিশ্বকাপ জয়ী ম্যারাডোনা সম্প্রতি স্বদেশি ক্লাব জিমন্যাসিয়ার কোচ হন।

গত কয়েক বছর ধরে স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগছিলেন ম্যারাডোনা। ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়কের পাকস্থলীর অভ্যন্তরে রক্তক্ষরণের কারণে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে, ঘটনাটি ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে। ২০১৮ সালের বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা ও নাইজেরিয়ার ম্যাচে অসুস্থবোধ করায় খেলা শেষপর্যন্ত দেখতে পারেননি তিনি। অনেক বিশেষজ্ঞ, ফুটবল সমালোচক, সাবেক ও বর্তমান খেলোয়াড় এবং ফুটবল সমর্থক তাকে সর্বকালের সেরা ফুটবলার হিসেবে গণ্য করেন। তিনি বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ফিফার বিংশ শতাব্দীর সেরা খেলোয়াড় পেলের সঙ্গে যৌথভাবে ছিলেন। ম্যারাডোনাই একমাত্র খেলোয়াড়, যিনি দুইবার স্থানান্তর ফি’র ক্ষেত্রে বিশ্বরেকর্ড গড়েন। প্রথমবার বার্সেলোনায় স্থানান্তরের সময় ৫ মিলিয়ন ইউরো এবং দ্বিতীয়বার নাপোলিতে স্থানান্তরের সময় ৬.৯ মিলিয়ন ইউরো। পেশাদার ক্যারিয়ারে ম্যারাডোনা আর্জেন্টিনা জুনিয়র্স, বোকা জুনিয়র্স, বার্সেলোনা, নাপোলি, সেভিয়া এবং নিওয়েলস ওল্ড বয়েজের হয়ে খেলেছেন।

আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আর্জেন্টিনার হয়ে তিনি ৯১ খেলায় ৩৪ গোল করেন। তিনি চারটি ফিফা বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেন। যার মধ্যে ছিল ১৯৮৬ বিশ্বকাপ, যেখানে তিনি আর্জেন্টিনার অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন এবং দলকে বিশ্বকাপ জয়ে নেতৃত্ব দেন। প্রতিযোগিতার সেরা খেলোয়াড় হিসেবে স্বর্ণপদক জেতেন। ম্যারাডোনার তিরোধানে কাঁদছে বিশ্ব। তার তুল্য কোনো খেলোয়াড় অদ্যবধি পায়নি ক্রীড়াঙ্গন। সঙ্গত কারণেই বাংলাদেশেও নেমে এসেছে শোকের ছায়া। এ ফুটবল জাদুকরের বিদেহী আত্মা শান্তি পাক। 

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper