নারীর প্রতি সহিংসতা কেন
মাহমুদা টুম্পা
🕐 ১০:৫৮ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ২২, ২০২০
পুরুষ বা নারী কর্তৃক যে কোনো বয়সের নারীর প্রতি সহিংসতামূলক আচরণ করা হয় কারণ সে পুরুষ নয়, সে কেবল একজন নারী। যে কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তি সমষ্টি দ্বারা নানা অজুহাতে নারীর আর্থসামাজিক, শারীরিক কিংবা মানসিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে নারীর প্রতি সহিংসতা ঘটিয়ে থাকে। নারীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে শারীরিক বা মানসিক এই নির্যাতন চালানো হয়। এ সহিংস আচরণ বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, স্কুল কলেজ, কর্মক্ষেত্র, হাটবাজার থেকে শুরু করে যে কোনো স্থানে ঘটে থাকে। বাংলাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতা নারীর স্বাধীনতার ক্ষেত্রে প্রধান প্রতিবন্ধক। নারীর প্রতি সহিংসতার নানা প্রকৃতি রয়েছে। নারীরা বাড়িতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে থাকেন। সাধারণত স্বামী, শাশুড়ি, ননদ এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্য দ্বারা এ ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়। এসব সহিংসতার মধ্যে রয়েছে প্রহার, যৌতুক সম্পর্কিত নির্যাতন, শিক্ষা ও সম্পত্তির অধিকারের বঞ্চনা, অত্যধিক কাজের বোঝা চাপানো, কন্যাশিশুকে মারধর, যৌনপীড়ন প্রভৃতি।
যৌন হয়রানি, নির্যাতন ও ধর্ষণ, মনগড়া ফতোয়া, এসিড নিক্ষেপ, নারী ও শিশু পাচার প্রভৃতি বর্বর, নির্মম ও পৈশাচিক সহিংসতা। প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে প্রচুর নারী ও শিশু পাচার হয়। এদের বলপূর্বক বিভিন্ন অবমাননাকর এবং অমানবিক কাজ, যেমন দেহ ব্যবসা, উটের জকি ইত্যাদিতে ব্যবহার করা হয়। অনেক সময় পাচারকৃত নারী ও শিশুদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গও বিক্রি করা হয়। আমাদের সমাজব্যবস্থায় বিভিন্ন কাজে নারী সর্বদা অপরিণামদর্শী অদক্ষ হিসেবে পরিগণিত হয়।
বাইরে বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান থেকে বঞ্চিত রাখা, যৌতুক, বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ, ক্রমাগত কন্যাসন্তানের জন্ম ও এর ফলে পুত্রসন্তানের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠা প্রভৃতি সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি নারীর প্রতি সহিংসতা বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলেছে। অর্থনৈতিক দুরবস্থা আমাদের দেশে যৌতুক প্রথাকে প্রতিষ্ঠা করতে উৎসাহিত করেছে। ক্রমে যৌতুকপ্রথা পরিণত হয়েছে সহিংসতার হাতিয়ার রূপে।
মাহমুদা টুম্পা: শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
[email protected]